ক্ষমতায় আসার পরেই বাংলার শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বহুগুণ বৃদ্ধি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bandopadhyay)। আর কেন্দ্রের মোদি সরকার উঠে পড়ে লেগেছে সরকারি বা সরকারের অধীনস্থ সংস্থাগুলির বেসরকারিকরণের। সোমবার, শ্রমিক দিবসের অনুষ্ঠানে তৃণমূল ভবনে পতাকা উত্তোলনের পর এই মন্তব্য করেন INTTUC-র সভানেত্রী দোলা সেন (Dola Sen)। এদিন সকালে অনুষ্ঠানে প্রথমে দলীয় পতাকা এবং তারপর আইএনটিটিইউসি-র পতাকা উত্তোলন করা হয়। শহিদ বেদিতে একে একে মাল্যদান করেন দোলা সেন, মণীশ গুপ্ত, শুভাশিস চক্রবর্তী, জয়প্রকাশ মজুমদার-সহ অন্যান্য নেতারা।

দোলা সেন জানান, বাম আমলে শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি ছিল নাম মাত্র। ন্যূনতম মজুরির গেজেট নোটিফিকেশন হয়নি। ২০১১-এ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরেই এই বিষয়ে গেজেট নোটিফিকেশন করেন তিনি। এবং সেই মজুরি ৩৪ গুণ বৃদ্ধি করেন। যেটা ইতিহাস। দেশের আর কোনও জায়গায় এটা হয়নি। শুধু তাই নয়, অসংগঠিত ক্ষেত্রে শ্রমিকবন্ধু প্রকল্পে শ্রমিকদের মজুরি, তাদের অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা এবং ৬০ বছরের আগে মৃত্যু হলে পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তার প্রকল্প চালু করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি চা বাগানের শ্রমিকদেরও ন্যূনতম মজুরি ৬৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে সাড়ে তিনশো টাকা করা হয়েছে।
দোলা সেন বলেন, একদিকে যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শ্রমিকবন্ধুদের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের আর্থিক পরিস্থিতি উন্নতির চেষ্টা চালাচ্ছেন, তখন কেন্দ্রের মোদি সরকার সেল থেকে ভেল, রেল থেকে বিএসএনএল সবকিছু বেচে দিচ্ছে। শ্রমিক দিবসের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে দোলা সেন বলেন, শ্রমিকের ৮ ঘণ্টার কাজের দাবি নিয়ে লড়াইয়ে প্রতীক এই মে দিবস, সেই অধিকার খর্ব করে নতুন আইন আনতে চাইছে কেন্দ্র। লেবার কোড চালু করে ১০-১২ এমনকী ষোলো ঘণ্টা কাজের অধিকারও সরকারিভাবে স্বীকৃত হবে। শুধু তাই নয়, ৩০০ জনের কম কোনও কারখানায় কাজ করলে, সেই কারখানার থেকে কোনও কারণ ছাড়াই শ্রমিক ছাঁটাই করা যাবে। এইসব শ্রমিক বিরোধী আইন কার্যকর করার ষড়যন্ত্র করছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। তৃণমূলের প্রতিরোধেই এখনও সেই আইন কার্যকর করা যায়নি। কয়লার মতো প্রাকৃতিক সম্পদে পর্যন্ত সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের আওতায় আনতে চাইছে মোদি সরকার। প্রাকৃতিক সম্পদ বিদেশীদের হাতে তুলে দেওয়া মানে ভারতের স্বাধীনতা বিক্রি করে দেওয়া। মন্তব্য দোলা সেনের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশে কেন্দ্রের বেসরকারীকরণ নীতির বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেস লড়াই চালিয়ে যাবে বলে জানান INTTUC-র সভানেত্রী।
