Wednesday, August 27, 2025

এই যে লিখছি সাদা ক্যানভাসের মতো শরীরে। এতে লিখে যে অতি ক্ষুদ্রমাত্রায় খাতার অনুভব পাওয়ার চেষ্টা করছি তার কারণ কাগজ। হয়তো এমন একদিন আসবে যখন কাগজে লেখা খুব কম হয়তো হবেও না, আবার উলটো হতে পারে, হয়তো এমন যান্ত্রিক লেখা সরে গিয়ে সেই আগের মতো পাতায়, কাঠে, পুঁথিতে লিখতে হবে। এই ভাবনা নিয়েই বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ও সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটির উদ্যোগ সাহিত্য উৎসব  ‘কাগজে কলমে’। আগামীতে আরো বৃহত্তর ও উন্নততর হয়ে ওঠার প্রতিশ্রুতি নিয়ে সবার প্রিয় এই উৎসব।

প্রবীণ সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বললেন, নিজের একাকীত্ব থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য আমি কলম তুলে নিয়েছিলাম। অসহায়ের মতো একটি কিশোর একটা সময় মানুষের সাথে কমিউনিকেট করতে চেয়েছিল।
সাহিত্যে ভাষার গুরুত্ব নিয়ে তিনি বলেন, বাঙালি বরাবরই দ্বিভাষিক। আগেও রুজির টানে ইংরেজি শিখতে হত। কিন্তু এখন একটা ধারণা হয়েছে, ইংরেজি শিখতে গেলে বাংলা ভুলতে হবে। নানান ভাষা জানা ভাল। কারণ, বিভিন্ন ভাষায় নানা অসাধারণ সাহিত্য সৃষ্টি হয়েছে। ভাষা না জানলে সেটা জানা সম্ভব হতো না। প্রবীণ সাহিত্যিকের মতে, সাহিত্য ও সিনেমা সম্পূর্ণ আলাদা মাধ্যম । কোনও সাহিত্যকেই পুরোপুরি সিনেমা করা যায় না।

কবি-সাহিত্যিক-শিল্পী-সুরকার শ্রীজাতকে সহজ ভাষায় আলোচনার মধ্যে নিয়ে এলেন সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটির চ্যান্সেলর সত্যম রায়চৌধুরী। অকপটে শ্রীজাত বললেন, আমি লিখতে চেয়েছিলাম আর সেটাই করছি। এটা আমার কাছে জীবনের বড় প্রাপ্তি।
প্রথম বইয়ের নাম ‘শেষ চিঠি’ কেন এই প্রশ্নের উত্তরে লেখক বলেন, কোনওদিনই বিশেষ কিছু করার ইচ্ছে ছিল না। আসলে আমি ভেবেছিলাম যে সেটাই বোধহয় আমার প্রথম এবং শেষ দেখা তাই এমন অদ্ভূত নাম দিয়েছিলাম। আলস্যকে বলতে পারেন আমি শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছি। মাত্র ২৭ বছর বয়সে ‘আনন্দ পুরস্কার’ পান শ্রীজাত। সাহিত্য সময়ের একটা আয়না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাংলা সাহিত্যে পরিবর্তন এসেছে। শ্রীজাত তাঁর স্বরচিত কবিতা বনলতা সেন পাঠ করেন। যা শুনে মুগ্ধ শ্রোতারা। আলোচনায় উঠে আসে তাঁর ‘মানবজীবন’ ছবিতে অরিজিৎ সিং এর গান গাওয়ার প্রসঙ্গ। রামপ্রসাদী গানকে অরিজিৎ এক অনন্য উচ্চতা নিয়ে গিয়েছেন। শ্রীজাত র অকপট স্বীকারোক্তি, ‘শঙ্খ ঘোষ আমার জীবনদেবতা’। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো মানুষ আমি দেখিনি কখনো। আর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি যে সাম্যের কথা বিশ্বাস করি, দুর্বা আমার সেই সুখ দুঃখের সাথী।
প্রখ্যাত লেখক প্রচেত গুপ্ত বলেন, আমার লেখা শুরুটাই ‘না’ দিয়ে। কেন ‘না’ তারও ব্যাখ্যা করেন তিনি। এখনো এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা বই পড়েন, এ বিষয়ে তিনি নিশ্চিত। তরুণ প্রজন্ম লিখতে এবং পড়তে যে ভালোবাসে তা তিনি নিশ্চিত। এখন অনেকটা মাধ্যম পাল্টেছে। অনেকেই ডিজিটাল মাধ্যমে লিখছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখছেন। লেখাটা কোথায় হবে সেটা কোনও বিষয় নয়। লেখাটা কোন পর্যায়ের সেটাই মূল বিষয়।
তিনি বলেন, আমার লেখার দর্শন যদি পাঠককে নাড়া দেয়, তবেই সেটা সার্থক বলে মনে হয়। তার স্পষ্ট কথা, আমরা যদি আবার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপহার হিসেবে বইকে ফিরিয়ে আনতে পারি, তাহলে হয়তো এই প্রজন্মের কাছে বই পড়া আবার একটা অভ্যাসে পরিণত হবে।

 

Related articles

বিরক্ত মিঠুন? এড়াচ্ছেন বঙ্গ বিজেপির একাধিক কর্মসূচি

বারবার রং বদল করে আপাতত গেরুয়াতে ঠেকেছেন ডিস্কো ড্যান্সার মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। ভোটের আগে বা বিজেপির. (BJP)...

আরজি কর কাণ্ডে ভুয়ো প্রচারের অভিযোগ! নোটিশ চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামীকে

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক পড়ুয়া অভয়ার মৃত্যুকে ঘিরে ভুয়ো প্রচার মামলায় নোটিশ ধরাল কলকাতা পুলিশ। পুলিশের...

দুর্গাপুজোর আগে রাজ্যে ডেঙ্গি-উদ্বেগ! টানা বৃষ্টিতে বাড়ছে আশঙ্কা 

দুর্গোৎসবের মুখে একদিকে নিম্নচাপের জেরে টানা বৃষ্টি, অন্যদিকে ডেঙ্গি সংক্রমণ রাজ্যবাসীর কপালে ভাঁজ বাড়াচ্ছে। জুলাইয়ের শেষ দিক থেকে...

মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর স্টলে হঠাৎ মুখ্যমন্ত্রী! কিনলেন শাড়ি 

বর্ধমানে প্রশাসনিক সভায় এসে হঠাৎ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর স্টলে হাজির মুখ্যমন্ত্রী। শুধু মহিলাদের হাতের কাজই ঘুরে দেখলেন না, কেনাকাটাও...
Exit mobile version