Monday, November 10, 2025

ভ*য়াবহ ট্রেন দু*র্ঘটনায় প্রা*ণ গিয়েছে ১৯ জনের, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জুড়ে বি*ষাদের সুর

Date:

বালেশ্বরে দুর্ঘটনার দিন দুপুর ৩টে নাগাদ শেষবার স্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কলে কথা হয়েছিল সফিক কাজির। পূর্ব বর্ধমানের বড়শুলের কুমিরকোলা গ্রামের বাসিন্দা সফিক রাজমিস্ত্রির কাজ করতে চেন্নাই যাচ্ছিলেন। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের জেনারেল কামরায় ছিলেন বছর ২৫-এর যুবক। রবিবার তার কফিনবন্দি দেহ ফিরল বাড়িতে।

বালেশ্বরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় দক্ষিণ ২৪ পরগনায় মৃতের সংখ্যা সবথেকে বেশি। জেলায় ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ ৪১ জন। ১০৬ জন জখম হয়েছেন। ৩০ জন নিরাপদে বাড়ি পৌঁছেছেন। মৃত ও আহতরা অধিকাংশই সুন্দরবনের বাসিন্দা। জানা গিয়েছে, দর্জি বা পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে কাজ করতেন।
অন্যদিকে, জেলা প্রশাসনের তরফে আলিপুরে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। এ ছাড়া, মহকুমা ও ব্লকস্তরেও কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। বালেশ্বরে পৌঁছেছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক। দুর্ঘটনাগ্রস্ত যাত্রীদের সুবিধার জন্য হাওড়া স্টেশন থেকে অ্যাম্বুল্যান্স, বাস বা ছোট গাড়ির ব্যবস্থা করছে জেলা প্রশাসন।
বাসন্তীর ছড়ানেখালি গ্রামে এসে পৌঁছল ৫ জনের মৃতদেহ। এঁদের মধ্যে তিন ভাই হারান গায়েন, নিশিকান্ত গায়েন ও দিবাকর গায়েনের দেহ রয়েছে। রয়েছে বিকাশ হালদার ও সঞ্জয় হালদারের মৃতদেহও। বালেশ্বরে করমণ্ডল এক্সপ্রেস বিপর্যয়ে একই গ্রামের এই ৫ জনের মৃত্যু হয়। ধান রোয়ার কাজে অন্ধ্রপ্রদেশে যাচ্ছিলেন এই পরিযায়ী শ্রমিকরা।
ছড়ানেখালি গ্রামে স্বজনহারাদের হাহাকার।
বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ক্যানিংয়ের ইটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের সুখসাগর গ্রামের সামসুদ্দিন সর্দারের। নিখোঁজ তাঁর পরিবারের আরও দুই সদস্য। একই পরিবারের ৩ জন ধান রোয়ার কাজে করমণ্ডলে চেপে অন্ধ্রপ্রদেশে যাচ্ছিলেন। বাকি ২ জনের খোঁজ করতে বালেশ্বরে গিয়েছেন আত্মীয়রা।
করমণ্ডল বিপর্যয়ে মৃত্যু হয়েছে গোসাবার সাতজেলিয়ার আনন্দপুর গ্রামের সনৎ কর্মকারের। ধান রোয়ার কাজে দুই স্ত্রী ও মামাকে নিয়ে অন্ধ্রে যাচ্ছিলেন সনৎ। বাকিরা প্রাণে বাঁচলেও, ট্রেন দুর্ঘটনায় বছর বত্রিশের সনতের মৃত্যু হয়।
কুলতলির ভুবনেশ্বরী চর গ্রামের বিশু দাসের দুই ছেলে প্রদীপ ও তপন দাস কেরলে দিনমজুরি করতে যাচ্ছিলেন। করমণ্ডল বিপর্যয়ে ২৮ ও ২২ বছরের দুই ভাইয়েরই মৃত্যু হয়েছে। ছেলেদের মৃত্যু সংবাদ এখনও দেওয়া হয়নি মাকে।
কাকদ্বীপেও মৃত্যু হয়েছে দু’জনের । এই ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার মোট ১৯জনের মৃত্যু হয়েছে ৷ গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি ১০৫ জন । এখনও পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার জেরে নিখোঁজ রয়েছে ৪১ জন । প্রশাসনের তরফ থেকে নিরাপদে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের ৩০ জনকে নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে । এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার জেরে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভেসে আসছে বিরহের সুর ।

Related articles

ধর্মীয় বই কিনতে গিয়ে ২ কোটি টাকার প্রতারণার ফাঁদে কলকাতা ইসকন! গ্রেফতার ১ 

ধর্মীয় বই কেনার অর্ডার দিতে গিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকার প্রতারণার শিকার হল কলকাতা ইসকন। অভিযোগ, অর্ডার অনুযায়ী...

বিশ্বকাপজয়ী মেয়ের সৌজন্যে হারানো পুলিশের চাকরি ফিরে পাচ্ছেন বাবা

কয়েকদিন আগেই আইসিসি একদিনের বিশ্বকাপ(ICC World Cup)  জিতেছে ভারতীয়  মহিলা দল। মেয়েদের সাফল্যে গর্বিত মা-বাবারা। তবে বিশ্বকাপজয়ী মেয়ের...

গ্যাস-সমস্যায় নিঃশ্বাসের পরীক্ষা: যুগান্তকারী আবিষ্কারে বিশ্বে স্বীকৃতি বাঁকুড়ার চিকিৎসকের

একটি সাধারণ সমস্যা, যাতে জর্জরিত বর্তমান যুবসমাজ থেকে শিশুরা পর্যন্ত। গ্যাস বা গ্যাসট্রাইটিসের মতো সমস্যা নির্ধারণ করার জন্য...

একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে বাড়তে পারে আসন সংখ্যা, জানালো এসএসসি 

রাজ্যের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের ফলাফল ইতিমধ্যেই প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। প্রকাশিত ফল অনুযায়ী,...
Exit mobile version