মণিপুরে গোধরার মতো বর্বরতা! গু*লিবিদ্ধ মা সন্তান সহ ৩ জনকে পুড়িয়ে মারল অ্যাম্বুলেন্সেই

এর আগে বিজেপি শাসিত গুজরাটে গোধরা হত্যাকাণ্ডের বর্বরতার খবর শিরোনামে উঠে এসেছিল।এবার ঠিক একইরকম খবর এল বিজেপি শাসিত মণিপুরেও। জঙ্গিহানায় গুলিবিদ্ধ সাত বছরের শিশু, মা সহ তিনজনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই অ্যাম্বুলেন্সে পুড়িয়ে মারল জঙ্গিরা। এমনকি পুলিশের সামনেই এমন ঘটনা ঘটেছে । এই ঘটনায় ফের গোধরা হত্যাকাণ্ডের স্মৃতি উস্কে দিয়েছে।

মণিপুরেরর পশ্চিম ইম্ফলে এই ঘটনাটি ঘটেছে।কুকি ও মেতেই এই দুই সম্প্রদায়ই এই এলাকায় সক্রিয়।
তিনজনই গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। একটাই অ্যাম্বুলেন্সে তাঁদের হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছিল। কিছুদূর যাওয়ার পর সেই অ্যাম্বুলেন্স দাঁড় করিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। কয়েক টুকরো হাড় ছাড়া তিনজনের দেহের আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। এমন নৃশংসতা ঘটেছে পুলিশের সামনেই।তবুও ঘটনাটি প্রসঙ্গে এতদিন মুখ খোলেননি পুলিশ। মৃতের আত্মীয়দের কাছ থেকে খবর জানাজানি হতেই ঘটনা প্রসঙ্গে মুখ খুলতে বাধ্য হয় পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারীরা মেতেই জঙ্গি গোষ্ঠীর লোক। নিহতরা হলেন টনসিং হ্যাংসিং (৭), তার মা মীনা হ্যাংসিং (৪৫)। মীনা নিজে মেতেই হলেও তাঁর স্বামী কুকি সম্প্রদায়ের মানুষ। নিহত তৃতীয় ব্যক্তি মীনার আত্মীয় লিডিয়া লোরেম্বামও (৩৭) একজন মেতেই খ্রিস্টান৷ প্রসঙ্গত, মণিপুরে জাতি দাঙ্গায় খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী মানুষ বিপুল সংখ্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। হামলা হয়েছে বহু চার্চে।
যেখানে সংঘর্ষে লিপ্ত মেতেই সম্প্রদায়ের মানুষ হিন্দু ধর্মাবলম্বী। অন্যদিকে, আদিবাসী কুকিদের অনেকেই খ্রিস্টান। সূত্রের খবর, রবিবার রাত সাতটা-সাড়ে সাতটা নাগাদ ইম্ফল পশ্চিমের ইরোইসেম্বা এলাকায় মেতেই সম্প্রদায়ের হাজার দুই মানুষ হামলা চালায়। এলোপাথাড়িগুলি চলে। পাল্টা জবাব দেয় কুকিরাও। হামলায় তিনজন গুলিবিদ্ধ হলে পুলিশ আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে একটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে। পুলিশ এসকর্ট থাকা সত্ত্বেও হামলাকারীরা অ্যাম্বুলেন্স থামিয়ে সেটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। স্থানীয় থানার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, আমরা অ্যাম্বুলেন্সের ভিতর থেকে কিছু হাড় উদ্ধার করতে পেরেছি মাত্র।
এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রশাসনের মধ্যেও তুমুল শোরগোল শুরু হয়েছে। এলাকাটি মিশ্র বসত এলাকা। কুকি এবং মেতেই গ্রাম পাশাপাশি। সেই কারণে ৩ মে গোলমাল শুরুর পর থেকে এলাকায় অসম রাইফেল্সের ক্যাম্প বসানো হয়। তারপরও কেন হামলা ঠেকানো গেল না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনের অন্দরে। পুলিশ কেন হামলাবাজদের ঠেকাতে পারল না, উঠেছে সেই প্রশ্নও।
প্রসঙ্গত ,শনি ও রবিবার পশ্চিম ইম্ফলেই কুকি জঙ্গিদের হামলায় মোট পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। মনে করা হচ্ছে, তার বদলা নিতেই মেতেইরা বিপুল সংখ্যায় জড়ো হয়ে ইরোইসেম্বারে হামলা চালিয়েছে।