আজ ওভালে শুরু বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল, কোমর বেধে  তৈরি ভারত- অস্ট্রেলিয়া

রোহিত অথবা কামিন্স—শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই শেষে অন্তত একজনের হাতে আগামী দুই বছরের জন্য রাজদণ্ড তো উঠবেই

লন্ডনের ওভালে আজ শুরু হচ্ছে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল। মুখোমুখি রোহিত শর্মার ভারত আর প্যাট কামিন্সের অস্ট্রেলিয়া।বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ছাড়া সম্ভাব্য সব বড় শিরোপা জেতা হয়ে গেছে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার।

২০১৯-২১ প্রথম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল নিউজিল্যান্ড। সেবার রানার্সআপ হয়েছিল ভারত আর তৃতীয় হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। এবার তাদের সামনে একমাত্র অপ্রাপ্তি ঘোচানোর সুযোগ। রোহিত অথবা কামিন্স—শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই শেষে অন্তত একজনের হাতে আগামী দুই বছরের জন্য রাজদণ্ড তো উঠবেই, এমনকি ম্যাচ ড্র কিংবা টাই হলে দুজনের দলই হয়ে যাবে যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন।

ওভালে সাধারণত স্পোর্টিং উইকেট তৈরি করা হয়ে থাকে। মানে ব্যাটসম্যান-বোলার উভয়ের জন্যই সহায়ক। রানপ্রসবা মাঠ হিসেবে ওভালের যেমন সুনাম আছে, বোলাররাও বাড়তি সুবিধা পেয়ে থাকেন। প্রথম তিন দিন ফাস্ট বোলাররা এবং আবহাওয়া শুষ্ক থাকলে শেষ দুই দিন স্পিনাররা উইকেট থেকে সেরাটা আদায় করে নিতে পারেন। তবে আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানাচ্ছে, শনিবার টেস্টের চতুর্থ দিন থেকে লন্ডনে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। বৃষ্টির কথা মাথায় রেখে হয়তো পেসসমৃদ্ধ একাদশ সাজাবে দুই দল।

সাউদাম্পটনে প্রথম আসরের ফাইনালে ভেজা কন্ডিশনের কথা জেনেও চার ফাস্ট বোলার ও এক মিডিয়াম পেসার নিয়ে একাদশ সাজিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। রাখেনি কোনো স্বীকৃত স্পিনার। সিমিং কন্ডিশনের সুযোগ পুরোপুরি কাজেও লাগিয়েছিল কিউইরা। বিপরীতে ভারত এমন উইকেটেও খেলিয়েছিল ‘স্পিন টুইন’ রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজাকে। সেবার আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি অশ্বিন-জাদেজা।

এবার ওভালে আবহাওয়া ভালো থাকলে ও রোদ উঠলে অশ্বিন-জাদেজার সঙ্গে পেস বোলিং অলরাউন্ডার শার্দূল ঠাকুরকে খেলানো উচিত বলে মনে করেন নাসের হুসেইন, ‘ওভালে ওরা দুই পেসার-দুই স্পিনার সূত্রে ভরসা রাখতে পারে।
অভিজ্ঞতায় দুই দলের ব্যাটিং লাইনআপের নির্দিষ্ট কাউকে এগিয়ে রাখার সুযোগ নেই। ব্যাটিং গভীরতা বিষয়টি বিবেচনায় আনলেও তা–ই। ‘ফ্যাবুলাস ফোর’–এর দুজন বিরাট কোহলি আছেন ভারতে, স্টিভেন স্মিথ অস্ট্রেলিয়ায়। দুজনের কাছে দলের প্রত্যাশাও থাকবে বেশি।

ভারতীয় দলে অধিনায়ক রোহিত থেকে শুরু করে শার্দূল ঠাকুর, আবার অস্ট্রেলিয়া দলে ডেভিড ওয়ার্নার থেকে অধিনায়ক প্যাট কামিন্স—দুই দলের ব্যাটিং গভীরতা অনেক। এমনকি ভারতের মোহাম্মদ শামি, অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্কও দলের প্রয়োজনে ব্যাট হাতে দাঁড়িয়ে যেতে পারেন। দ্রুত রান তুলতে পারেন।

টপ অর্ডারে ভরসার প্রতীক চেতেশ্বর পূজারার সাম্প্রতিক ফর্ম কিছুটা ভাবাতে পারে ভারতের টিম ম্যানেজমেন্টকে। সর্বশেষ ৫ টেস্টে ২৪.২৮ গড়ে করেছেন ১৭০ রান, ফিফটি মাত্র একটি। তবে পূজারাই ইংল্যান্ডের বর্তমান কন্ডিশন সম্পর্কে সতীর্থদের স্বচ্ছ ধারণা দিতে পারেন। সবাই যখন আইপিএল নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, টেস্ট বিশেষজ্ঞ পূজারা তখন সাসেক্সের হয়ে কাউন্টি ক্রিকেট খেলেছেন। ১৫ মাস পর অভিজ্ঞ অজিঙ্কা রাহানের ফেরাটাও ভারতের জন্য ‘প্লাস পয়েন্ট’।
অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং বেশ বৈচিত্র্যময়। ব্যাটিং লাইনআপের প্রথম আটজনের মধ্যে চারজন ডানহাতি (লাবুশেন, স্মিথ, গ্রিন, কামিন্স), চারজন বাঁহাতি (ওয়ার্নার, খাজা, হেড, ক্যারি)। ডানহাতি-বাঁহাতি সংমিশ্রণ ভারতীয় বোলারদের লাইন-লেংথ ঠিক রাখার ক্ষেত্রে কঠিন পরীক্ষায় ফেলবে। অধিনায়ক রোহিতকেও নিয়মিত ফিল্ডারদের পজিশন পাল্টাতে হবে।
ভারতের ব্যাটিং লাইনআপে সবচেয়ে বড় দুর্বলতা টপ ও মিডল অর্ডারে বাঁহাতি ব্যাটসম্যান কম থাকা। রোহিত, শুবমান গিল, পূজারা, কোহলি, জাদেজা ও শ্রীকর ভরত—প্রথম সাত ব্যাটসম্যানের মধ্যে জাদেজা ছাড়া সবাই ডানহাতি। ব্যাটিং লাইনআপে বৈচিত্র্য না থাকায় (বেশির ভাগ ডানহাতি হওয়ায়) অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের লাইন-লেংথ ঠিক রাখতে ও ফিল্ডার সাজাতে খুব একটা বেগ পেতে হবে না।

Previous articleToday market price: আজকের বাজারদর
Next articleঅল্পের জন্য বড়সড় দু*র্ঘটনা হতে হতেও হল না! রক্ষা পেল নয়াদিল্লি-ভুবনেশ্বর রাজধানী এক্সপ্রেস