তবে কী এবার বন্যায় (Flood) ভাসতে চলেছে ইউক্রেন (Ukraine)? নোভা কাকোভকা জলাধারের (Dam) ভাঙনে কার্যত কপালে চিন্তার হাত ইউক্রেনবাসীর। আর জলাধার ভেঙে পড়ার কারণে আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে বলে খবর। গ্রামের পর গ্রাম জলে তলিয়ে যাচ্ছে। বাঁধ ভাঙা নিয়ে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে তোলপাড়। আর এমন আবহে ফের সম্মুখসমরে নেমে পড়েছে রাশিয়া (Russia) ও ইউক্রেন। এমন আচমকা দুর্ঘটনার জেরে দুই পক্ষই একে অপরকে দোষারোপের খেলায় মেতে উঠেছে। এদিকে বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় প্রবল বন্যায় ইতিমধ্যেই পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। ইতিমধ্যে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৪ হাজার মানুষকে। বৃহস্পতিবার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে যান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি। ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য আর্থিক সাহায্য ঘোষণার কথাও ভাবছে ইউক্রেন প্রশাসন।

রাশিয়ার দখলে থাকা দক্ষিণ ইউক্রেনের নোভা কাকোভকা শহরের এই বাঁধটি সোভিয়েত আমলের। ১৯৫৬ সালে নির্মিত হয় এটি। ৩০ মিটার উঁচু, ৩.২ কিমি লম্বা ও ১৮ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে ছড়িয়ে থাকা বাঁধটি ভেঙে পড়াতে আশঙ্কা তীব্র হয়েছে। এদিকে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে জেলেনস্কি সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, সাধারণ মানুষকে এখনও নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে। পানীয় জল থেকে শুরু করে অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস পৌঁছে দিতে হবে তাঁদের কাছে। তাছাড়াও এই বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ফলে ব্যাপক প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দেবে, সেটাও দ্রুত সামাল দেওয়া দরকার।

জানা গিয়েছে, নিপ্রো নদীর পশ্চিম পাড় ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে নদীর উপর জলাধার সহ পূর্ব দিকটি রাশিয়ার অধীনে। বুধবার সকালে একটি ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। তার পরেই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির প্রাচীরে ফাটল ধরে বলে সন্দেহ। এরপরই হুড়মুড় করে জল বেরোতে শুরু করে ইউরোপের অন্যতম বৃহৎ কৃত্রিম জলাধার থেকে। বাঁধের জলে ভেসে গিয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। আর সেকারণেই জলাধারের আশপাশের এলাকার মানুষজনকে অন্যত্র আশ্রয় নিতে হচ্ছে। তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে, পরিস্থিতি যত সামনে এগোবে ততই এই বন্যা সর্বনাশা রূপ নিতে পারে। আর এমন পরিস্থিতির কারণে ১৬ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। এদিকে বন্যার জল থইথই করছে এলাকায়। স্থানীয় সরকারি দফতরের চারপাশে রাজহাঁস ভেসে বেড়াচ্ছে। জলাধারের কাছে খেরসন শহরের নিচু এলাকার বাসিন্দাদের যত দ্রুত সম্ভব নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৮টি গ্রাম বন্যার জলে তলিয়ে গেছে। পাশাপাশি আরও এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
