Wednesday, May 7, 2025

ফিরছে ‘দুষ্টু ছেলে’,গরম স্রোতের প্রভাবে ভারতে খরা পরিস্থিতি তৈরির সম্ভাবনা!

Date:

ফিরছে ‘দুষ্টু ছেলে’।যার ফলে ভারতে দুর্বল বর্ষা দেখা দিতে পারে। ফলে বর্ষার দাপুটে ব্যাটিং আশা করা হলেও, তার ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে এল নিনো নামের ইয়র্কারটি! এই এল নিনোর ফলে বিশ্বের কোথাও চরম গরম আবার কোথাও খুব বর্ষণ দেখা দিতে পারে, বলছেন বিজ্ঞানীরা।

শেষ বার ‘দুষ্টু ছেলে’ দেখা মিলেছিল ২০১৫ সালে। প্রশান্ত মহাসাগরে এসেছিল ‘এল নিনো’।এই উষ্ণ সামুদ্রিক স্রোত আবার ২০২৩ সালে এসেছিল।বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এর গভীর প্রভাব পড়ে বিভিন্ন দেশের আবহাওয়ায়।

পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের পশ্চিম উপকূল ঘেঁষে পেরু, ইকুয়েডর বরাবর কোনও কোনও বছর ডিসেম্বর মাস নাগাদ এক প্রকার উষ্ণ দক্ষিণমুখী স্রোতের সৃষ্টি হয়। এরই নাম এল নিনো।এল নিনো স্প্যানিশ শব্দ। এর অর্থ ছোট্ট ছেলে।

আমেরিকার ন্যাশনাল ওশানিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফেরিক অ্যাডমিনস্ট্রেশন (এনওএএ) সম্প্রতি ঘোষণা করেছে, প্রশান্ত মহাসাগরে এল নিনোর দেখা মিলেছে। ২০০০ সাল থেকে এই নিয়ে পঞ্চম বার উষ্ণ স্রোতটির আবির্ভাব হল।

এ বছর এল নিনো আসতে পারে, আগেই তার পূর্বাভাস ছিল। তবে মনে করা হয়েছিল অগস্ট মাসের আগে তার দেখা মিলবে না। কিন্তু সময়ের অনেক আগেই স্রোত বইতে শুরু করেছে সাগরে।সাধারণ ভাবে বছরের এই সময়ে নিরক্ষরেখা বরাবর আয়নবায়ু পশ্চিম দিকে বইতে শুরু করে। এর ফলে দক্ষিণ আমেরিকার দিক থেকে প্রশান্ত মহাসাগরের উষ্ণ জল এশিয়ার দিকে প্রবাহিত হয়।

ভারতে গত ১০০ বছরে ১৮ বার খরা হয়েছে। এই ১৮টি খরার মধ্যে ১৩টির নেপথ্যেই রয়েছে এল নিনোর হাত। প্রশান্ত মহাসাগরের উষ্ণ জল অতীতে ভারতে খরা ডেকে এনেছে বার বার।পরিসংখ্যান বলছে, ১৯০০ থেকে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত প্রশান্ত মহাসাগরে সাত বার এল নিনোর সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু ১৯৫১ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে এল নিনোর দেখা মিলেছে অন্তত ১৫ বার।

এল নিনোর এই ১৫টি বছরের মধ্যে ৯ বার ভারতে বর্ষাকালে পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃষ্টি হয়নি। স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই কম বৃষ্টি হয়েছে এই বছরগুলিতে।

পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ার কারণে ভারতের কৃষি ব্যবস্থা ক্ষতির সম্মুখীন হয়। ঠিক সময়ে সংশ্লিষ্ট ফসল উৎপাদিত হয় না। চাহিদা অনুযায়ী জোগান না থাকায় দামও বাড়ে অবধারিত ভাবে। অতীতে এল নিনোর বছরগুলিতে এ ভাবেই ভুগতে হয়েছে ভারতকে।

দু-এক দিন বাদে এপ্রিল মাস থেকে টানা তাপপ্রবাহের শিকার হয়েছে দক্ষিণবঙ্গ। জুন মাসেও বাংলার জেলায় জেলায় তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তাপমাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছে ৪০ ডিগ্রির গণ্ডি।এমনকী, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ির মতো পাহাড় ঘেঁষা উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতেও কোথাও কোথাও তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছিল হাওয়া অফিস। গরমে দক্ষিণবঙ্গকেও এ বছর পাল্লা দিয়েছে উত্তর। বর্ষা প্রবেশেও দেরী হয়েছে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, সাত বছর পর এল নিনো ফিরেছে। ভারতের আবহাওয়ায় কি এই উষ্ণ স্রোতের প্রভাব শুরু হয়ে গিয়েছে? বৃষ্টির ঘাটতি কি আবার খরার পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে এ দেশে? সেই আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দিতে পারছেন না বিশেষজ্ঞেরা। তবে আরও কিছু দিন পর ভারতের উপর এ বছরের এল নিনোর প্রভাব সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

Related articles

উচ্চ মাধ্যমিকে পাশের হার ৯০.৭৯ শতাংশ, এগিয়ে ছাত্ররা! শুভেচ্ছা শিক্ষামন্ত্রীর 

২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার (Higher Secondary Result 2025) ফল প্রকাশিত হল। চলতি বছর পাশের হার ৯০.৭৯ শতাংশ। সোশ্যাল...

যুদ্ধ নয়, লক্ষ্য স্থির করে জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার তথ্য পেশ দুই মহিলা সেনাকর্তার

কেন পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলা তা নিয়ে কোনও ব্যাখ্যারই প্রয়োজন নেই। কিন্তু যারা প্রশ্ন তুলছেন হামলার ধরণ নিয়ে...

SSC নিয়ে আদালত অবমাননার মামলা গ্রহণ করল না কলকাতা হাইকোর্ট

২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলায় চাকরিহারাদের বেতন ফেরানোর সুপ্রিম নির্দেশ কার্যকরী হচ্ছে না অভিযোগ করে আদালত অবমাননার মামলা...

পহেলগামের জঙ্গি হামলার জবাব দিল ভারত, জয় ইন্ডিয়া! বললেন মুখ্যমন্ত্রী 

পহেলগামের জঙ্গি হামলার বদলা নিল ভারতীয় সেনা (Indian Army)। অপারেশন সিঁন্দুরের (Operation Sindoor) মাধ্যমে প্রায় ৯০ জঙ্গিকে মারল...
Exit mobile version