হাওয়ালা-যোগের দাবি, সুজয়কৃষ্ণর ভয়েস স্যাম্পেল পরীক্ষা করাতে চায় ইডি!

সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর ফোন থেকেও বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে। ইডির দাবি, তাঁর সঙ্গে সিভিক ভলান্টিয়ার রাহুল বেরার কথাবার্তা রেকর্ড করা হয়েছে। সেখানে শোনা যাচ্ছে, সুজয়কৃষ্ণ রাহুলকে বলছেন, তাঁর ফোনে থাকা নিয়োগ সংক্রান্ত নথি নষ্ট করে দেওয়ার জন্য। প্রমাণ লোপাট করার জন্য। সেই কারণে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের ভয়েস স্যাম্পেল নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে ইডি। ফোন করে নিয়োগ সংক্রান্ত নথি নষ্ট করে দেওয়ার যে কথা বলা হচ্ছে, সেটি যাচাই করে দেখতে ভয়েস স্যাম্পেল পরীক্ষা করাতে চায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।তাকে জেলে গিয়েও জেরা করতে চান কেন্দ্রীয় সংস্থার অফিসাররা। সুজয়কৃষ্ণের সঙ্গে জেলে কে বা কারা দেখা করতে যাচ্ছে, তার উপরেও নজর রাখতে চায় ইডি। সেই কারণে জেলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে রাখারও আবেদন জানিয়েছে।
এরই পাশাপাশি, নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতার সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের বিষয়ে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য উঠে আসছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে।হাওয়ালার মাধ্যমে ১১ কোটি টাকা ‘সুজয়কৃষ্ণর’ সংস্থায় ঢুকেছে বলে দাবি ইডির। বুধবার আদালতে সুজয়কৃষ্ণের আইনজীবী সেলিম রহমান তাঁর অন্তর্বর্তী জামিনের জন্য আবেদন করেন। সেই জামিনের বিরোধিতা করে ইডির আইনজীবী আদালতে জানান, অভিযুক্তর বিষয়ে কী কী তথ্য তদন্তকারী সংস্থার হাতে উঠে এসেছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবীর বক্তব্য, ‘ওঁরা বলছেন যে আমরা নাকি কিছুই পাইনি। কিন্তু রিকভারি মানে শুধু ক্যাশ উদ্ধার নয়।’
এরপরই কী কী তথ্য ইডির হাতে উঠে এসেছে, সেই বিষয়ে আদালতে বিস্তারিত জানান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী।বলেন, ‘আমরা মানি ট্রেল খুঁজে পেয়েছি। ১০০ টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট পাওয়া গিয়েছে। হাওয়ালার মাধ্যমে সংস্থায় টাকা ঢুকেছে, যার কন্ট্রোল ছিল অভিযুক্তর হাতে।’ ইডির আইনজীবীর দাবি, এমন চারটি সংস্থার নিয়ন্ত্রণ ছিল সুজয়কৃষ্ণর হাতে। তার মধ্যে ওয়েল্থ উইজার্ড নামে একটি সংস্থায় ১০ কোটি টাকা ঢুকেছে বলে আদালতে জানান ইডির আইনজীবী।
এছাড়া আরও একটি সংস্থায় ১ কোটি টাকা ঢুকেছে বলে কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তে উঠে এসেছে। পাশাপাশি ৮০ কাঠা জমি কেনা হয়েছে এবং নির্মাণ সংস্থার কাজও করা হয়েছে। আর এই সবই দুর্নীতির টাকায় হয়েছে বলে সন্দেহ গোয়েন্দাদের। ইডির দাবি, যে ১০০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, সেগুলির মাধ্যমেই হাওয়ালার টাকা ঘোরানো হয়েছে।
বুধবার সকালে তাঁর মেডিক্যাল পরীক্ষা করানোর পর আদালতে তোলা হয়। অভিযোগ উঠেছিল, তাঁর একটি ট্রাস্টে ছয় কোটি টাকার বাংলো দেওয়া হয়েছিল। এদিন সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরায় এই প্রসঙ্গে মুখ খোলেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র।
ঠিক কী বলেছেন তিনি? সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র বলেন, “এই তথ্য একেবারে ভুল।” পাশাপাশি একটি অ্যাকাউন্টে এক কোটি নগদ জমা দিয়েছেন কোম্পানির, উঠেছে এই অভিযোগও। তিনি বলেন, “পাঁচ বছর ধরে এই টাকা জমা দেওয়া হয়েছে তা কেউ বলছে না। শুধু ডিপোজিটটাই বলা হয়। উইড্রল-এর বিষয়ে কিছু বলা হয় না।” একইসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “আর কোনও কথা নেই।” এদিন গাড়ির মধ্যে বসে মাস্ক খুলে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসতেও দেখা যায় সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে।

Previous articleপেস.মেকারে সমস্যা, হাসপাতালে মীরা ভট্টাচার্য
Next articleপঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বড় পদক্ষেপ! রাজ্যের অতিরিক্ত নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্বে সঞ্জয় বনশল