বিরোধীদের সাংগঠনিক দুর্বলতা, জেলায় জেলায় বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী তৃণমূলের প্রার্থীরা

সংগঠনিক দুর্বলতা থাকায় জেলায় জেলায় বহু আসনে প্রার্থী দিতে ব্যর্থ বিরোধীরা। ফলে ৮ জুলাই নির্বাচনের আগে অনেক আসনেই বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী তৃণমূল প্রার্থীরা

বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়ন পেশের পর্ব। সংগঠনিক দুর্বলতা থাকায় জেলায় জেলায় বহু আসনে প্রার্থী দিতে ব্যর্থ বিরোধীরা। ফলে ৮ জুলাই নির্বাচনের আগে অনেক আসনেই বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী তৃণমূল প্রার্থীরা।

নির্বাচনের আগেই, কোচবিহার জেলায় ১২৮টা গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৩টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী তৃণমূল। দিনহাটা-২ নম্বর ব্লকের সুকারুর কুঠি, চৌধুরীহাট ও দিনহাটা-১ নম্বর ব্লকের সুকতাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের অধিকাংশ আসনে প্রার্থীই দিতে পারেনি বিরোধীরা।

সাঁকরাইল ব্লকের দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দখল করল তৃণমূল। বৃহস্পতিবার মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে এমনই চিত্র ফুটে উঠেছে ঝাড়গ্রামের সাঁকরাইল ব্লকের রগড়া গ্রাম পঞ্চায়েত ও আঁধারি গ্রাম পঞ্চায়েতে। ১২টি আসনের রগড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে এবং ৯টি আসনের আঁধারি গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল ছাড়া অন্য কোন রাজনৈতিক দল মনোনয়নপত্র জমা করেনি। ওই দুটি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে থাকা ৫টি পঞ্চায়েত সমিতির আসনেও তৃণমূল ছাড়া অন্য কোনও রাজনৈতিক দল মনোনয়ন পত্র জমা দেয়নি।

পাঁচলা বিধানসভা কেন্দ্রের জগৎবল্লভপুর ব্লকের ইসলামপুর অঞ্চলেও একই ছবি। এবার বারাবনি ব্লকের জোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় তৃণমূলের। সবুজ আবির নিয়ে বিজয়োল্লাসে মাতলেন ঘাসফুল শিবিরের কর্মীরা। মনোনয়নের কাজ মিটতে দেখা যায় বারাবনি ব্লকের ৮ টি পঞ্চায়েতের মধ্যে দুটি পঞ্চায়েত পানুড়িয়া ও পাঁচগেছিয়া পঞ্চায়েতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে না বিরোধীরা। ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হচ্ছেন শাসকদলের প্রার্থীরা। একইসঙ্গে পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে মোট ২৩টি আসনের মধ্যে ৯টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হচ্ছেন শাসকদলের প্রার্থীরা। তাতেই খুশির হাওয়া দলীয় কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে।

বীরভূম জেলার একাধিক পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় হাসিল করল তৃণমূল কংগ্রেস। সিউড়ি থেকে নানুর—সর্বত্রই শাসকদলের জয়ের দাপট কায়েম রয়েছে। কারণ এখানে বিরোধীরা প্রার্থীই দেয়নি।নানুর ব্লকে গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ৩০৬টি আসনের মধ্যে বিরোধীরা মাত্র ২২টিতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে। তাই আমরা নানুরের সব গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেছে তৃণমূল।

রঘুনাথগঞ্জ–২ ব্লকের সেকেন্দ্রা এবং গিরিয়া দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতেই বিরোধীরা মনোনয়নপত্র জমা দেয়নি। সুতরাং বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং তিনটি পঞ্চায়েত সমিতির আসন গেল তৃণমূল কংগ্রেসের ঝুলিতে। সেকেন্দ্রা অঞ্চলের ২৫টি আসনের মধ্যে ১৭টি আসন পেয়ে যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। আবার গিরিয়া অঞ্চলের গ্রাম পঞ্চায়েতের সব ক’টি আসন এবং তিনটি পঞ্চায়েত সমিতির আসনও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। ফলে সেখানে এখন খুশির হাওয়া। আবির খেলা থেকে শুরু করে মিষ্টিমুখের পালা চলছে।

অন্যদিকে কেশপুরের মোট ১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৮টি এককভাবে দখল করে নিল তৃণমূল কংগ্রেস। কারণ এখানেও প্রার্থী দিতে ব্যর্থ হয়েছে বিরোধীরা। এখন এমন পরিস্থিতি দেখে বিরোধীরা চিৎকার করতে শুরু করলেও নিজেদের সাংগঠনিক ব্যর্থতা ঢাকতে পারছেন না। এখানের পঞ্চায়েত সমিতির মোট ৪৫টি আসনের মধ‌্যে ১৯টি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। কেশপুর ব্লকে গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন ৩০৫টি। সেখানে সিপিএম ২৪টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। বিজেপি প্রার্থী দিয়েছে ৬২টি আসনে। সুতরাং বাকি আসন কাদের দিকে যাচ্ছে সেটা বোঝাই যাচ্ছে। এছাড়া বজবজ এবং নন্দীগ্রামেও এমন ছবি দেখা যাচ্ছে বলে সূত্রের খবর।

আরও পড়ুন:বিপর্যয়ের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড গুজরাট,মৃ*ত অন্তত ২, বিদ্যুৎহীন ৯৪০টি গ্রাম!আজ সতর্ক রাজস্থান