রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থে রাজভবনে পশ্চিমবঙ্গ দিবস রাজ্যপালের: তোপ তৃণমূলের

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোনে আশ্বাস দিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন করবেন না রাজ্যপাল। তবে গেরুয়া শিবিরের রাজনৈতিক স্বার্থে ফুঁ দিয়ে মঙ্গলবার রাজভবনে পালিত হল পশ্চিমবঙ্গ দিবস। এই ঘটনায় রাজ্যের রাজ্যপালকে তীব্র আক্রমণ শানালো তৃণমূল। রাজ্যে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর পাশাপাশি রাজ্যপালের ভূমিকার সমালোচনায় সরব হলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।

রাজভবনে পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালনের পর টুইটারে সরব হয়ে শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু লিখলেন, “ক্ষুদ্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই ধরনের কর্মকাণ্ড একেবারেই অসমীচীন।” একই সঙ্গে তৎকালীন ইতিহাস তুলে ধরে সরব হলেন তিনি। সেই সময়ের ইতিহাস বিস্তারিত তুলে ধরে এদিন টুইটারে ব্রাত্য বসু লেখেন, “প্রসঙ্গ পশ্চিমবঙ্গ দিবস।

১. ১৯৪৭ সালের ২২শে মার্চ অবিভক্ত ভারতের বড়োলাটের (ভাইসরয়) দায়িত্ব নিয়ে লর্ড মাউন্টব্যাটেন সপরিবারে এদেশের মাটিতে পা রাখেন।

২. পরদিন ২৩শে মার্চ দিল্লিতে এক সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে তিনি বড়োলাট হিশেবে শপথগ্রহণ করেন। ৩. সেদিনই তিনি ঘোষণা করেন ৪৭ সালের জুন মাসের মধ্যে তিনি ভারতের স্বাধীনতা দেবেন।

৪. ভারত ভাগের পরিকল্পনা আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষিত হয় জুন মাসের ৩ তারিখে ১৯৪৭। এটি ইতিহাসে ‘June 3rd Plan’ এবং Mountbatten Plan name পরিচিত। এই ঘোষণাতেই বাংলা এবং পাঞ্জাব ভাগের কথা নির্দিষ্টভাবে ঘোষিত হয়েছিল।

৫. ওই ৩ জুন তারিখেই পাঞ্জাব আইনসভা একটি আনুষ্ঠানিক ভোটাভুটি করে পাঞ্জাবের বিভাজনে সিলমোহর দেয়া । ৬. ওই জুন মাসের ২০ তারিখ (1947) অখণ্ড বাংলারও প্রাদেশিক আইন সভায় বাংলা ভাগের ব্যাপারটা ভোটাভুটি করে পাশ হয়।

৭. ২০শে জুনের এর আইনসভার এই বৈঠক এর কোনো ঐতিহাসিক তাৎপর্য নেই, কারণ এর ১৭দিন আগেই ‘June 3rd Plan’ ঘোষিত হয়ে গিয়েছে। পাঞ্জাব ভাগের সিদ্ধান্তেও সিলমোহর পড়ে গেছে। Legislative Assembly র এই নাম কা ওয়াস্তে বৈঠক কে গুরুত্ব দেয়ার অর্থ ইতিহাস কে বিকৃত করা।

৭. তাছাড়া গত ৩রা জুন, ২০২৩ আপ সরকারের পাঞ্জাব রাজ্যে, পাঞ্জাবের বিজেপি শাখা বা পাঞ্জাবের রাজ্যপাল রাজভবনে কোনো “পাঞ্জাব দিবস” পালন করেন নি। অথচ পাঞ্জাবে বিজেপি অন্যতম প্রধান বিরোধী দল। তাহলে বাংলায় হঠাৎ এই দ্বিচারিতার মানে কি?

৮. যেকোনো তিক্ত অভিজ্ঞতাকে এবং রক্তস্নাত অধ্যায়কে অতিরঞ্জিত করা ইতিহাসের দৃষ্টিকোণ থেকে বাঞ্ছনীয় নয় ।ক্ষুদ্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করাও অসমীচীন।”

পাশাপাশি রাজ্যপালের পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালনের ঘটনায় টুইটারে রাজ্যপালকে সরাসরি আক্রমণ শানিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ লেখেন, “রাজ্যপাল যেভাবে বাংলার ঐতিহ্য ধ্বংস করে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ করছেন, তা মানি না। বিরোধিতা করছি। বাংলার ইতিহাস ও মানুষকে অপমান করার পর এখানে রাজ্যপাল হিসেবে থাকার কোনো নৈতিক অধিকার আনন্দ বোসের নেই।”

Previous articleফের লাইনচ্যুত মালগাড়ি, অল্পের জন্য বড় দু.র্ঘটনা থেকে র.ক্ষা!
Next articleপাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান পদ থেকে নাম প্রত‍্যাহার নাজম শেঠির