জোট থেকে ঘোঁট, বিরোধীদের সব অপচেষ্টা ব্যর্থ করে তৃণমূলেই আস্থা বাংলার গ্রামের

একের পর এক অভিযোগ, একের পর এক মামলা। কেন্দ্রীয় এজেন্সির রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র, তৃণমূলকে হারাতে রাম-বাম-কংগ্রেসের হাতে হাত মেলানো, এমনকি বিরোধীদের সুবিধা পাইয়ে দিতে খোদ রাজ্যপালকেও নামতে দেখা যায় রাজনীতির ময়দানে। তবে এত অপচেষ্টা, ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিল বাংলার গ্রাম মমতাকেই চায়। মঙ্গলবার রাজ্যজুড়ে নির্বাচনের ফলাফল যত স্পষ্ট হতে থাকে ততই দেখা যায় পাহাড় থেকে সাগর সর্বত্র বাতাসে ভেসেছে সবুজ আবির। গ্রাম বাংলা বুঝিয়ে দিল তারা কোনভাবেই সমর্থন করে না বিরোধীদের কুৎসাকে।

রাজ্যের ৬১৬৩৬টি আসনে পঞ্চায়েত ভোটের গণনা চলছে। ব্যালট পেপারে ভোট হওয়ায় পঞ্চায়েতে গণনার সময় লাগে একটু বেশিই। তবে মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকেই কিছুটা স্পষ্ট হয়ে যায় পঞ্চায়েতের ফল কোন দিকে যেতে চলেছে। রাত ১২.২০ পর্যন্ত শেষ পাওয়া খবরে, গ্রাম পঞ্চায়েতে ৩০,৩৯১ আসনে জয়লাভ করেছে তৃণমূল। এগিয়ে রয়েছে ১,৭৬৭ একটি আসনে। তৃণমূলের পর দীর্ঘ ব্যবধানে দ্বিতীয় স্থানে জায়গা নিয়েছে বিজেপি। ৮,২৩৯টি আসনে জয় পেয়েছে তারা, এগিয়ে রয়েছে ৪৪৭ আসনে। ২,৫৩৪ আসনে জয় পেয়েছে সিপিএম, কংগ্রেস পেয়েছে ২,১৫৮ টি আসন। ফলাফলেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে বিরোধীদের বেহাল অবস্থাটা। অন্যদিকে পঞ্চায়েত সমিতিতে ৩,৫২৩ আসনে জয় লাভ করেছে তৃণমূল, এগিয়ে রয়েছে ৪২৫ আসনে। ৪৩৬টিতে জয় পেয়েছে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে ৯২ টি আসনে, ৯৬ আসনে জয় পেয়েছে সিপিএম, এগিয়ে রয়েছে ২৮টি আসনে। কমবেশ ৯০ টি আসনে জয় লাভ করেছে, এগিয়ে রয়েছে ১৫ আসনে। এবং জেলা পরিষদে ১৪৫ আসনে জয় লাভ করেছে তৃণমূল, এগিয়ে রয়েছে ২০৮ আসনে। ২টিতে জয় পেয়েছে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে ১১ টি আসনে, সিপিএম ও কংগ্রেস এখনও কোন আসনে জয় না পেলেও দুটি করে আসনে এগিয়ে রয়েছে।

তবে পঞ্চায়েতে প্রাক নির্বাচন অবস্থার দিকে যদি চোখ ফেরানো যায় তবে দেখা যাবে কিভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তৃণমূলকে হারাতে সর্বশক্তি দিয়ে মাঠে নেমেছিল বিরোধীরা। ১০০ শতাংশ মনোনয়ন জমার পরও বিরোধীরা অভিযোগ তুলে মনোনয়ন জমা দিতে না দেওয়ার। নির্বাচনের প্রচারের মাঝে দফায় দফায় এজেন্সির তরফে তলব করা হয় শাসকদলের শীর্ষ নেতৃত্বদের। সংবাদ মাধ্যমের পাশাপাশি বিরোধীদের মাইলেজ দিতে মাঠে নামতে দেখা যায় খোদ রাজ্যপালকেও। একের পর এক জায়গায় হিংসার অভিযোগ তুলে সশরীরে ময়দানে নামেন রাজ্যপাল বোস। এমনকি ‘সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান’ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনও বঙ্গ পঞ্চায়েত নির্বাচনে নাক গলানোর সুযোগ খোঁজে। যদিও আদালতে নাক কাটা যায় তার। রাজনৈতিক মহলের দাবি, বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা, কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের ফায়দা নিয়ে এজেন্সি সহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলির সব রকম রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে তৃণমূলেই ভরসা রেখেছে বাংলার মানুষ। মঙ্গলবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল কার্যত স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পর রাজ্যবাসীকে শুভেচ্ছা জানান, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

Previous article‘আমার দুর্ভাগ্য, আমি এখন পুত্রকৃত্য করছি’! পুত্রের প্র.য়াণে শোকস্তব্ধ অভিনেতা বরুণ চন্দ
Next articleজিএসটিকে আর্থিক তছরূপ আইনের আওতাভুক্ত করা হবে কেন? GST কাউন্সিলের বৈঠকে সরব চন্দ্রিমা