Saturday, August 23, 2025

হকের টাকা আটকে রাখাই কাল: পঞ্চায়েতে ভরাডুবিতে পর্যবেক্ষণ বিজেপির

Date:

Share post:

বারবার কেন্দ্রের(Central) কাছে আবেদন জানানো হলেও অন্যায়ভাবে রাজ্যবাসীর টাকা আটকে রেখেছে বিজেপি সরকার(BJP Govt)। একাধিকবার এই ইস্যুতে সরব হয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee), তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhisekh Banerjee)। তবে ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা, গ্রাম সড়ক যোজনার প্রাপ্য টাকা বাংলাকে দেওয়া হয়নি, বরং বুক ঠুকে গর্বের সঙ্গে বিরোধী দলনেতা দাবি করে গিয়েছেন কীভাবে তিনি টাকা আটকে দিয়েছেন বা আগামী দিনেও টাকা আটকে দেবেন। এরই ফল বিজেপি পেয়েছে ভোট বাক্সে। রাজ্য পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভরাডুবির পরে এখন বাংলার পদ্মনেতারাই মানছেন, টাকা আটকেই সর্বনাশ হয়েছে। কার্যত বাংলার বুকে রাজ্য সরকার ও তৃণমূলকে(TMC) প্যাঁচে ফেলতে গিয়ে কার্যত নিজের পায়ে কুড়ুল মেরে বসে আছে বিজেপি।

রাজ্য পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি যতই সন্ত্রাসের অভিযোগ করুক না কেন বাম ও কংগ্রেসের বড় সংখ্যার আসন প্রাপ্তি তাঁদের সেই দাবিকে ঠুনকো বানিয়ে দিয়েছে। উত্তরবঙ্গ থেকে জঙ্গলমহল, মতুয়া ভোট ব্যাঙ্ক থেকে রাজবংশী ভোট ব্যাঙ্ক মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। সমর্থন মেলেনি সংখ্যালঘু থেকে আদিবাসীদেরও। গেরুয়া শিবিরের বেহাল অবস্থার কারণ খুঁজতে মাঠে নেমেছিলেন বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ নেতারা। আর সেখান থেকেই উঠে আসছে, রাজ্যের সাধারণ মানুষের টাকা অন্যায় ভাবে আটকে দেওয়ার বিষয়টিকে মোটেই ভালোভাবে নেয়নি রাজ্যের মানুষ। তাঁদের ক্ষোভ গিয়ে পড়েছে ভোটবাক্সে। দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সাধারণ মানুষের টাকা বিরোধী দলনেতার মদতে যেভাবে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার আটকে আটকে দিয়েছিল সেটাই পঞ্চায়েতে ব্যর্থতার অন্যতম কারণ। এই ঘটনায় রাজ্যের নিচুতলার কর্মী থেকে আদি বিজেপি নেতারা সরাসরি কাঠগড়ায় তুলছেন শুভেন্দুকেই। কারণ, একের পর এক প্রতিনিধি দল পাঠিয়েও যেখানে দুর্নীতি খুজে পাওয়া যায়নি, তারপরও টাকা আটকে রাখা স্বৈরাচারী মনোভাব ছাড়া কিছু নয়। কর্মীদের স্পষ্ট অভিযোগ, শুভেন্দুর জন্যই বিজেপির এই বিপর্যয়।

অন্যদিকে এই ইস্যুকেই হাতিয়ার করে বিজেপি বিরুদ্ধে লড়াইইয়ের বার্তা দিয়ে মানুষের মন জয় করেছে তৃণমূল। ৬০ দিন ব্যাপী রাজ্যজুড়ে জনসংযোগ যাত্রা করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর প্রতিটি জনসভায় তুলে ধরেছে রাজ্য বিজেপি নেতাদের বাংলা বিরোধী মনোভাব। বুঝিয়ে দিয়েছেন বঙ্গ বিজেপি নেতাদের জন্যই আজ বাংলার মানুষ তাঁদের হকের ১০০ দিনের কাজের টাকা থেকে বঞ্চিত। এমনকি ভোট মিটলেই টাকা আদায়ে দিল্লি গিয়ে বড় পরিসরে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন তিনি। বঞ্চিত মানুষেরা তাঁদের প্রাপ্য ফিরে পেতে আস্থা রেখেছে তৃণমূলের উপর। এমনটাই উঠে আসছে রাজ্য বিজেপি নেতাদের আভ্যন্তরীণ সমীক্ষায়।

বিজেপির নেতারা মানছেন, ‘টাকা আটকে রাখার খেসারত দিতে হচ্ছে পার্টিকে। আমাদের নেতারা দিল্লির বিভিন্ন মন্ত্রকে দুর্নীতির লম্বা-চওড়া অভিযোগ দিয়ে চিঠি পাঠাচ্ছেন। তার ভিত্তিতে একাধিক প্রকল্পের টাকা আটকে যাচ্ছে। অথচ কেন্দ্রীয় টিম এসে ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগের কোনও সারবত্তা পায়নি। উল্টে কলকাতা হাইকোর্টের তোপের মুখে পড়তে হয়েছে কেন্দ্রকে। আদালত যেখানে হকের টাকা আটকে না রাখার পক্ষে রায় দিচ্ছে, তার বিপরীতে যেতে গিয়েই আমরা মুখ থুবড়ে পড়লাম।’ পদ্মের নেতারা মানছেন, টাকা আটকে যাওয়ার সমস্যায় পড়েছেন অসংখ্য মানুষ। মাথার ওপর ছাদ তৈরির কাজ আটকে থাকার সংখ্যাটা বাড়তে বাড়তে কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে। এই তিক্ত অভিজ্ঞতায় প্রভাবিত হয়েছেন আরও হাজার হাজার বাসিন্দা। ওই নেতারা আরও মানছেন, ২০১৮ সালে যত সংখ্যক গ্রাম পঞ্চায়েত বিজেপি দখল করেছিল, সেখানেও এবার খারাপ ফল হয়েছে। আগেরবার জেতা বহু পঞ্চায়েতই এবার হাতছাড়া হয়েছে।

spot_img

Related articles

পুজোর আগে প্রায় দ্বিগুণ দুধ উৎপাদনে বাংলার ডেয়ারি 

কলকাতা এবং সংলগ্ন জেলাগুলিতে প্যাকেটজাত দুধের জোগান বাড়াতে রাজ্য সরকারি ব্র্যান্ড বাংলার ডেয়ারি বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে। পুজোর...

পিছনে দৌড়! স্নাতক স্তরে বৈদিক গণিত আনার চেষ্টা UGC-র

গোটা বিশ্ব গণিতের ক্ষেত্রে যেখানে নতুন উদ্ভাবনী ধারণা নিয়ে আসছে, সেখানে ভারতের শিক্ষা ক্ষেত্রে পিছন দিকে হাঁটা শুরু...

হালিশহর ও কাঁচরাপাড়া পেল স্বচ্ছ ভারত মিশনের ‘ওডিএফ প্লাস’ সার্টিফিকেট 

বারাকপুর শিল্পাঞ্চলের প্রান্তিক দুই শহর হালিশহর ও কাঁচরাপাড়া এবার স্বচ্ছ ভারত মিশনের ‘ওপেন ডিফেকেশন ফ্রি প্লাস’ (ওডিএফ প্লাস)...

ফের ডুরান্ড কাপ জয় নর্থইস্টের

প্রতিযোগিতায় দুরন্ত শুরুটা করলেও শেষরক্ষা করতে পারল না। একটানা ম্যাচ। নর্থইস্ট ইউনাইটেডের(North East United) বিরুদ্ধে খানিকটা ক্লান্তিটাই যেন...