শুক্রবার একুশে জুলাইয়ের (21 July) সভার আগেই কালীঘাটে (Kalighat) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) বাড়ির গলি থেকে বিপুল আগ্নেয়াস্ত্র সহ গ্রেফতার করা হয়েছিল শেখ নূর আমিনকে (Seikh Noor Ameen)। আর আমিনের ব্যাগে তল্লাশি চালিয়ে একাধিক জিনিস উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তবে নূর আমিন কী উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির দিকে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন, তা জানার চেষ্টা চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা। তবে আমিনের স্ত্রীর দাবি, তাঁর স্বামীর মানসিক সমস্যা রয়েছে। আর সেকারণেই সে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে সত্যিই নূরের কোনও মানসিক সমস্যা রয়েছে নাকি চাপে পড়ে বিস্তর যুক্তি খাঁড়া করছে নূর তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।

তবে পুলিশ সূত্রে খবর, নূরের গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয়েছে ভোজালি, আগ্নেয়াস্ত্র, মাদক সহ বেসবল ব্যাট সহ একাধিক জিনিস। পাশাপাশি নূরের গাড়ি থেকে বেশ কিছু ভুয়ো পরিচয়পত্রও উদ্ধার হয়েছে। তবে কেন এবং কোথা থেকে ওই সব নথি পেয়েছিলেন নূর? তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। শনিবার ধৃতকে আলিপুর আদালতে (Alipore Court) পেশ করলে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। শুক্রবার নূর আমিনকে দীর্ঘক্ষণ জেরা করেন তদন্তকারীরা। আর জেরায় নানা রকম বিভ্রান্তিকর কথা বলে সে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, জেরায় সে নিজেকে মানসিক রোগী বলে দাবি করেছে। জানিয়েছে কলকাতার রবীন্দ্র সদন চত্বরে একটি ক্লিনিকে তাঁর চিকিৎসা চলছে।

কিন্তু নূরের দাবি মানতে নারাজ তদন্তকারীরা। তাঁদের দাবি, ২১ জুলাই নিজে গাড়ি চালিয়ে অস্ত্র নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা কোনও মানসিক রোগীর হতে পারে নরা। জেরায় নূর জানিয়েছে, তার একটি চারচাকা গাড়ি ও একটি রয়্যাল এনফিল্ড বাইক রয়েছে। এদিকে নূর আমিনের দাবি খতিয়ে দেখতে তাঁর চিকিৎসককে জেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি নূর জেরায় আরও জানিয়েছে, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু (Netaji Subhas Chandra Bose) তাঁকে স্বপ্নে দেখা দিয়েছিলেন। স্বপ্নে নেতাজি তাঁকে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিপদ আসন্ন। সেই কারণে সতর্ক করতেই সে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করে। শুক্রবারই একুশের সভা শুরু হওয়ার আগে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির গলি থেকে শেখ নূর আমিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নূর আমিন আদতে মেদিনীপুরের ডেবরার বাসিন্দা। তাঁর স্ত্রীর দাবি, আমিন ইন্টারিয়র ডিজাইনার। সে গত সোমবার গ্রামের বাড়ি থেকে কলকাতায় গিয়েছিলেন। গোটা বিষয়টি নিয়ে তিনি অত্যন্ত বিব্রত। তিনিই দাবি করেছেন, তাঁর স্বামীর মানসিক সমস্যা রয়েছে।
