যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর রহস্যমৃত্যুর ঘটনা নিয়ে তোলপাড় রাজ্য। যাদবপুরের মতো একটি নামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন নিন্দনীয়, বর্বরোচিত ঘটনায় বিস্মিত সকলে। নিন্দার ঝড় উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে স্বপ্নদীপকে র্যাগিং করা হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের। ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তির শাস্তির দাবি করা হয়েছে। এবার পড়ুয়ার রহস্যমৃত্যুর ঘটনা নিয়ে মাঠে নামছে শাসকদলের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (TMCP)।

সোমবার পড়ুয়ার মৃত্যুর প্রতিবাদে ঢাকুরিয়ার দক্ষিণাপন থেকে যাদবপুর বিশ্ব বিদ্যালয়ের ৪ নম্বর গেট পর্যন্ত বিশাল প্রতিবাদ মিছিল করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। কালো ব্যাজ, কালো পতাকা হাতে শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা এই মিছিলে অংশগ্রহণ করে। তাদের হাতে ছিল প্রদীপ। আর যাতে কোনও স্বপ্নের দীপ নিভে না যায়, তার জন্য এই প্রতীকী প্রদীপ প্রজ্জ্বলন।

শুধু পড়ুয়ারা নয়, যাদবপুর সহ বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্ৰাক্তনী, অধ্যাপক ও বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন। মিছিলের নেতৃত্ব দেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃনাঙ্কুর ভট্টাচার্য সহ আরও অনেকে। উল্লেখযোগ্য ভাবে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি তথা যাদবপুরের প্ৰাক্তনী জয়প্রকাশ মজুমদার। তাঁর ছাত্রবস্থার সময়কার ঘটনাও তুলে ধরেন জয়প্রকাশবাবু। ঘটনাচক্রে তিনি এই মেইন হোস্টেলের আবাসিক ছিলেন।
সার্বিকভাবে মাও-মাকু-নকশালদের মুক্তাগণে পরিণত হয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। বাম-অতিবামদের অত্যাচারে ওষ্ঠাগত প্রাণ সাধারণ পড়ুয়াদের। রাতের অন্ধকারে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে অসামাজিক কাজকর্ম হয়, এদিন প্রায় সকল বক্তাই সেকথা তুলে ধরেন। বিশ্ববিদ্যালয় সিসিটিভির দাবিতে এই প্রতিবাদ-আন্দোলন থেকে সকলে সোচ্চার হন। প্রতিবাদ সভা চলাকালীন স্বপ্নদীপের মামার সঙ্গে ফোনে কথা বলেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতৃত্ব। তার মামা দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানান।

মিটিং-মিছিলের পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি প্রচারাভিযান শুরু করেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা একটি বিশেষ ছবি ফেসবুক ও টুইটারের প্রোফাইল পিকচার হিসেবে ব্যবহার করছেন। এমনকী তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজের ডিপিতেও সেই ছবি রাখা হয়েছে। ছবিতে লেখা ‘দাদা আমি বাঁচতে চাই #মেঘেঢাকাJU।’
কোন চিন্তাভাবনা থেকে এই প্রচার? এ প্রসঙ্গে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা প্রাণ খুলে বাঁচতে চায়। আর কারও যাতে স্বপ্নদীপের মতো পরিণতি না হয়। বাম, অতিবাম ছাত্র সংগঠনগুলির সৌজন্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আকাশে কালো মেঘ ছেয়ে রয়েছে। সেই মেঘ সরিয়ে দিনের আলো ফোটানোই টিএমসিপির লক্ষ্য। সেই কারণে আজ আমরা দক্ষিণাপন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ নম্বর গেট পর্যন্ত মিছিল করছি। সোশ্যাল মিডিয়াতে এই বিশেষ প্রচারাভিযান শুরু করা হয়েছে।’
