যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র মৃত্যুর দিন রাতে কী ঘটেছিল মেন হস্টেলে? গেটে কে তালা লাগিয়েছিল? কাদের নির্দেশে তালা লাগানো হয়েছিল? এইসব প্রশ্ন প্রকাশ্যে আসতেই বিস্ফোরক তথ্য দিলেন ওইদিনের নিরাপত্তারক্ষী। ছাত্রদের অনেকে এবং হস্টেল সুপার দ্বৈপায়ন দত্ত সেদিন আমাকে বলেছিলেন, গেট বন্ধ রাখতে। বাইরে থেকে কেউ যেন ভিতরে ঢুকতে না পারে। তাঁর কথায়, ‘সেদিন রাতে যখন খাচ্ছিলাম, কিছু ছেলে এসে বলে, গেটটা খুলে দিন। একটা বাচ্চা পড়ে গিয়েছে। তড়িঘড়ি আমি গিয়ে গেট খুলে দিলাম। তখন দেখলাম সেখানে জড়ো হয়েছে প্রচুর ছাত্র। হুড়োহুড়ি করছে। তারা এসে বলে, নজর রাখুন, বাইরে থেকে কেউ যেন ভিতরে ঢুকতে না পারে। গেট ছেড়ে যাবেন না।’

আজ, বুধবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় আরও ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত মোট গ্রেফতারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯। ছাত্র মৃত্যুর ঘটনার বৃত্তান্ত সংবাদমাধ্যমে আজ বর্ণনা করেন হস্টেলের এক নিরাপত্তারক্ষী। তাঁর দাবি, হলুদ ট্যাক্সি আগে ক্যাম্পাসে ঢোকে। তারপর তাতে করে ওই পড়ুয়াকে নিয়ে বেরিয়ে তারপর ঠিক কী ঘটেছিল? হস্টেল থেকে ছাত্র পড়ে মারা গেলেও অকুস্থলে যেতে পারেননি ওই নিরাপত্তারক্ষী। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, ‘সেখানে যাব কী করে? আমাকে তো গেট ছেড়ে যেতে না করা হয়েছিল। তখন খাবার ফেলে রেখে গেটের তালা খুলে দিই। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে একটি অটো এবং হলুদ ট্যাক্সি আসে। তার পরেই ওই ট্যাক্সিতে করে পড়ে যাওয়া ছাত্রকে নিয়ে বেরিয়ে যায়। সেখানে পরে পৌঁছয় অ্যাম্বুলেন্স। ততক্ষণে হলুদ ট্যাক্সি বেরিয়ে গিয়েছে। তখন অ্যাম্বুলেন্সও বেরিয়ে যায়। এরপর হস্টেলের সুপার দ্বৈপায়ন দত্ত আমাকে গেট বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেন। তাঁর কথা মতো তালা দিয়ে দিই।

তিনি বলেন, তখন ছাত্ররা দলে দলে এসে বলতে থাকে, যেন গেট ছেড়ে না যাই। এরপর পুলিশকর্মীরা গেটের সামনে আসেন কিন্তু তাঁরা একবারও গেট খুলে দিতে বলেননি।’ নিরাপত্তারক্ষী বলেন, ‘এক একবার ছাত্রদের এক একটি গ্রুপ এসে বলে যাচ্ছিল, গেট যেন বন্ধ থাকে। গেট ছেড়ে আমাদের যেতে বারণ করা হয়েছিল।’
