গায়ে মেধাবী, শিক্ষিত ট্যাগ লাগিয়ে কতটা ভয়ঙ্কর হওয়া যায়, তার জ্বলন্ত উদাহরণ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন হস্টেলে সিনিয়র ও প্রাক্তনীদের মুখোশের আড়ালে হিংস্র চেহারা দেখলে তথাকথিত সমাজবিরোধীরাও আঁতকে উঠবে। পুলিশি তদন্তে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। যা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকে হার মানাবে!
আরও পড়ুনঃ যাদবপুরে টিএমসিপি’র ডেপুটেশনে ঘিরে ধু*ন্ধুমার, জ্ঞান হারিয়ে হাসপাতালে ছাত্রনেত্রী রাজন্যা

ঘটনার দিন মেইন হস্টেলে নিথর হয়ে পড়ে রয়েছে বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের রক্তাক্ত ছাত্র! শরীরে পোশাকের চিহ্ন নেই। তখনও দেহে প্রাণ ছিল কিনা বলা যাবে না, তবে দ্রুতহাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কোনও চেষ্টা হয়নি। বরং, গোটা ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার তৎপরতা ছিল তুঙ্গে। শুরু হয়ে যা মহড়া! তড়িঘড়ি জিবি (জেনারেল বডি মিটিং)। আসলে জিবি’র আড়ালে কী বয়ান পুলিশকে দিতে হবে, তার ক্লাস দেওয়া হচ্ছিল। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হতে পারে ধরে নিয়েই কার্যত তাঁদের ‘টিউটোরিয়াল’ শুরু করেন প্রাক্তনীরা।

তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেন, ঘটনার ঘটার পর রাতেই মেইন হস্টেলের আবাসিকদের নিয়ে রীতিমতো ‘মক ইন্টারোগেশন’ হয়। একটি নয়, এরকম তিনটি জিবির কথা জানা গিয়েছে। পুরো পরিকল্পনাটি ছিল ধৃত সৌরভ চৌধুরীর মস্তিষ্কপ্রসূত। একেবারে পাক্কা ক্রিমিনালের মতো প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা। সৌরভকে জেরা করে এই ঘটনায় আরও ৬ জনকে গ্রেফতার করে যাদবপুর থানার পুলিশ।

সূত্রের খবর, হস্টেলের সব ছাত্রের একই বয়ান শুনেই দুঁদে তদন্তকারীদের মনে সন্দেহ হয়। জেরায় তারা সকলেই বলেন, “আমরা জিবিতে ছিলাম। সেখানে ১৫ আগস্টের ফুটবল ম্যাচ নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল।” সবার এক বয়ান দেখে পুলিশ বুঝতে পারে, শেখানো বুলি আওড়াচ্ছেন। জিবিতেই সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, শেখানো কথার বাইরে কেউ কিছু বলবে না। জম্মু থেকে পড়তে আসা আরিফ স্বপ্নদীপকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন বলে শোনা গিয়েছিল। কিন্তু তাও সাজানো বলে জানতে পারে পুলিশ। সেই রাতে হস্টেলের ৬৮, ৭৫ ও ৭৩ নম্বর রুমে মৃত ছাত্রের উপর যে মানসিক অত্যাচার চলছিল, সেখানেই আরিফ ছিল।
