অসম্ভব কেউ যে সম্ভব করা যায় তা দেখাচ্ছে বর্তমান রাজ্য সরকার। ভাবতে পারেন দু’মলাটে সাফল্যগাথা। তাও আবার একযুগের। হ্যাঁ, এই অসম্ভবকেই সম্ভব করেছে রাজ্য সরকার। দু’ মলাটে সাফল্যগাথা প্রকাশ করবে রাজ্য।
নবান্নের নির্দেশ আর সমস্ত দফতরের কর্মী আধিকারিক এবং সচিবদের ঐকান্তিক উদ্যোগে সেই কাজ প্রায় সম্পূর্ণ। রাজ্য প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, খুব শীঘ্রই রাজ্যের উন্নয়নগাথা পুস্তিকা আকারে প্রকাশ হতে চলেছে।
কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বরাদ্দ টাকা বন্ধ করেছে দিল্লি। পরিস্থিতি এমন জায়গায় যে, ১০০ দিনের টাকা আসছে না। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে কাজ বন্ধ নেই। টাকাও পৌঁছে যাচ্ছে উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। সেই হিসাব যেমন থাকবে, তেমনই নিজস্ব সম্পদ ব্যবহার করে কীভাবে স্বনির্ভর প্রকল্পের মাধ্যমে রাজস্বের পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়ানো সম্ভব হয়েছে তাও স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে। আসলে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের, এক ‘অসম লড়াইয়ের কাহিনি’ তুলে ধরা হচ্ছে এই পুস্তিকায়। নবান্ন সূত্রে খবর, পুস্তিকার নামকরণ হবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করে।
জানা গিয়েছে, মাসখানেক আগে নবান্নর শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে বিভিন্ন দফতরের সচিবদের আলোচনা হয়। সেখানেই উঠে আসে এমন ভাবনা। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। দফতরের প্রধান সচিবরা বিভাগীয় আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করে রূপরেখা বাতলে দেন। ২০১১ থেকে চলতি আর্থিক বছরের প্রথম ছ’মাসে রাজ্যের ৩৪১ ব্লক ও ৬৭টি সাব ডিভিশনে উন্নয়নের ধারাকে তুলে ধরা হয়েছে।
নিশ্চয়ই ভাবছেন কী থাকছে এই পুস্তিকায়? পুস্তিকা তৈরির সঙ্গে যুক্ত স্বাস্থ্য দফতরের এক অতিরিক্ত সচিবের কথায়, ‘‘ধরা যাক স্বাস্থ্য সাথী। মাসে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা রোগীর চিকিৎসা বাবদ খরচ হয়। অন্তত ২.৫ কোটি পরিবারের সাড়ে দশ কোটি মানুষ উপকৃত। আবার কন্যাশ্রী দেশ-বিদেশে আলোচিত এই প্রকল্প। শুধুমাত্র কন্যাশ্রী প্রকল্পের জন্য মেয়েদের উচ্চশিক্ষা বেড়েছে। মাতৃমা প্রকল্প চালু হওয়ায় প্রসূতি ও শিশুমৃত্যুর হার ২.৩ শতাংশে নেমে এসেছে। রাজ্যে এইচআইভি কার্যত নির্মূল। নির্মূল কালাজ্বর। ২০২৫-এর মধ্যে টিবি মুক্ত বাংলা গড়ার জন্য তৃণমূল স্তরে কাজ চলছে। যার অন্যতম উদাহরণ টেলিমেডিসিন ও দুয়ারে ডাক্তার প্রকল্প। স্বাস্থ্যের এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি তুলে ধরা হয়েছে।’’ স্বরাষ্ট্র দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘সীমান্ত এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া এবং গ্রামরক্ষী বাহিনী গড়ে তোলা হয়েছে। ফলে চোরাচালান কমেছে। সমাজ, নারী ও শিশুকল্যাণ দফতরের সঙ্গে পুলিশ সমন্বয় রেখে কাজ করায় পাচারের সংখ্যা উল্লেখ্যযোগ্যভাবে কমেছে। বেড়েছে থানার সংখ্যা। মহিলা থানার সংখ্যা ৩০-র উপরে।’’
এ তো গেল পরিষেবা ও সুরক্ষার দিক। খাদ্যশস্য উৎপাদনে রাজ্য বরাবর দেশের মধ্যে প্রথম। তাই গত তিন বছরে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বাণিজ্যিক ফসলের উৎপাদন বাড়িয়ে গ্রামীণ অর্থ ব্যবস্থাকে আরও চাঙ্গা করার কর্মসূচিতে। সেই লক্ষে রাজ্য কতটা এগিয়েছে তার ইঙ্গিত মিলেছে পুস্তিকায়।
পরিকাঠামো ও শিল্পের ক্ষেত্রে সমুদ্রবন্দর তৈরিতে কীভাবে কেন্দ্র লাল ফিতের বাঁধনকে অজুহাত করে প্রকল্প দেরি করাচ্ছে তারও আভাস দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন- ছত্রপতি শিবাজির ঐতিহাসিক ‘বাঘনখ’ ফিরছে ভারতে?