প্রকল্পের সুবিধা প্রদানে হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চালু করল কৃষি দফতর

কৃষকবন্ধু, শস্য়বীমা যোজনার মতো রাজ্য সরকারের চালু করা বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা মূলক প্রকল্পের সুযোগ রাজ্যের কৃষকেরা ঠিক মতো পাচ্ছেন কিনা তা খতিয়ে দেখতে কৃষি দফতর একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চালু করল। নম্বরটি হল ৯৮৩০৩৮৩৩৮৩। রাজ্যের কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলার কৃষকেরা যারা কৃষকবন্ধু প্রকল্পে নথিভুক্ত হয়ে আছেন তাঁরা প্রকল্পের টাকা নিয়মিত কী না, কিংবা বাংলা শস্য বিমা প্রকল্পে বিমার টাকা চাষিরা পেয়েছেন কী না, তা এবার থেকে ওই হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর’র মাধ্যমেই জানতে পারবেন ও জানাতেও পারবেন। ওই হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা পাঠালে স্বয়ংক্রিয় মেসেজ আসবে। তারপর সেখান থেকে কৃষকেরা নিজেদের আধার কার্ডের নম্বর দিয়ে কৃষকবন্ধু অথবা বাংলা শস্য বিমা প্রকল্পের বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন। দুয়ারে সরকারের শিবির থেকে কৃষি দফতরের আধিকারিকদের এই নম্বরটির জোরদার প্রচার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । এতদিন এই সব প্রকল্পের সুবিধা তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্য়াকাউন্টে আসছে কিনা তা জানতে কৃষকদের কৃষি দফতর অথবা সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক-এ যেতে হতো। এবার থেকে তাঁরা ঘরে বসেই ওই হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর’র মাধ্যমে সেই তথ্য জানতে পারবেন।

একই সঙ্গে এটাও জানা গিয়েছে, রাজ্যের আরও বেশি সংখ্যক প্রকৃত চাষি যাতে রাজ্য সরকারের কাছে সরকারি দামে আরও বেশি করে ধান বিক্রি করতে পারে তার জন্য আরও সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ এসেছে নবান্ন থেকে। সেই সূত্রেই স্থায়ী ধান ক্রয় কেন্দ্র ও গাড়িতে ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জানা গিয়েছে, চলতি মরশুমে স্থায়ী ও ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্রের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৫০০ এবং ৬১টি। সেই জায়গায় আরও মোট ৮০টি স্থায়ী ও ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। একই সঙ্গে সামনের মরশুম থেকেই একজন চাষি রাজ্য সরকারকে সর্বোচ্চ ৯০ কুইন্টাল পর্যন্ত ধান যাতে বিক্রি করতে পারন, সেই পদক্ষেপও করা হচ্ছে। চলতি মরশুমের প্রথমে এটা ছিল ৪৫ কুইন্টাল। জুন থেকে তা ৯০ কুইন্টাল করা হয়। সেই মাপটাই আগামী মরশুমেও ধরে রাখছে রাজ্য সরকার। উল্লেখ্য, রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ২০২৩-২৪ খরিফ মরশুমে বাড়িয়ে ৭০ লক্ষ টন করা হয়েছে। ২০২২-২৩ মরশুমে এই লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬০ লক্ষ টন। এই ব্যবস্থায় রাজ্যের ১৬ থেকে ১৮ লক্ষ কৃষক উপকৃত হবেন। সরকারি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, নতুন খরিফ মরশুম অক্টোবরে শুরু হলেও সরকার ধান কেনা শুরু করে নভেম্বর থেকে। তবে নতুন ধান ওঠার পর বেশিরভাগ কেনার কাজটা হয় ডিসেম্বর-ফেব্রুয়ারি, তিনমাসে। এবারও ডিসেম্বরে মোট ১২ লক্ষ টন, জানুয়ারিতে ২৪ লক্ষ টন ও ফেব্রুয়ারিতে ১৯ লক্ষ টন কেনার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য হয়েছে। অর্থাৎ এই তিনমাসেই সরকার ৭০ লক্ষ টনের মধ্যে ৫৫ লক্ষ টন ধান কিনতে চাইছে।

আবার খোলা বাজারের তুলনায় সরকার নির্ধারিত দাম সাধারণত অনেকটা বেশি থাকে। আগামী খরিফ মরশুমে দাম অনেকটা বাড়িয়ে কুইন্টাল প্রতি ২,১৮৩ টাকা করা হয়েছে। স্থায়ী কেন্দ্রে ধান বিক্রি করলে চাষি প্রতি কুইন্টালে আরও ২০ টাকা করে পাবেন। স্থায়ী কেন্দ্র ছাড়াও অস্থায়ী শিবির খুলেও প্রচুর ধান কেনা হয়। এবার প্রত্যন্ত গ্রামে শিবির খোলার ওপর জোর দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। ধান কেনায় স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য এবার সরকার আরও বেশি তৎপর। ফড়েরা যাতে সরকারি ব্যবস্থার সুবিধা নিয়ে ধান বিক্রি করে ফায়দা লুটতে না পারে তার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। চাষিদের নাম নথিভুক্তি এবং ধান বিক্রির সময় আধারের বায়োমেট্রিক যাচাই করা হবে। চাষির জমির পরিমাণ কৃষক বন্ধু পোর্টাল থেকে খতিয়ে দেখেই কেনা হবে উপযুক্ত পরিমাণ ধান। বেনামে বিক্রি আটকাতেই এই ব্যবস্থা।

আরও পড়ুন- ভাটনগর পুরস্কার প্রাপকের তালিকায় চার বঙ্গসন্তান, শুভেচ্ছাবার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

Previous articleভাটনগর পুরস্কার প্রাপকের তালিকায় চার বঙ্গসন্তান, শুভেচ্ছাবার্তা মুখ্যমন্ত্রীর
Next articleছাত্রমৃ.ত্যুর জের! পড়ুয়াদের কাউন্সেলিং করানোর উদ্যোগ নিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়