মর্গে দাবিহীন ৯৬ দেহ, নিখোঁজ ৩৩! বেহাল অবস্থার মাঝেই বাহিনী বিতর্ক মণিপুরে

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi) যতই দাবি করুক না কেন মণিপুরে(Manipur) শান্তি ফিরেছে, বাস্তব বলছে বেহাল অবস্থা মণিপুরের। গত সাড়ে ৪ মাসে সেখানে মৃত্যু হয়েছে ১৭৫ জনের, নিখোঁজ ৩৩। চোরাগোপ্তা হামলায় মৃত্যুর ঘটনা বেড়েই চলেছে সেখানে। এহেন পরিস্থিতির মাঝেই শান্তিরক্ষায় নিযুক্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী অসম রাইফেলসকে সরানোর দাবি তুলল মণিপুরের সংখ্যাগুরু মেইতেইরা। তাঁদের স্পষ্ট অভিযোগ, ধারাবাহিক ভাবে কুকিদের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে অসম রাইফেলস(Assam Raifels)।

জানা গিয়েছে, মণিপুর থেকে অসম রাইফেলস সরানোর দাবিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের(Rajnath Singh) দ্বারস্থ হয়েছে মেইতেই সংগঠনগুলি। তাদের অভিযোগ, ওই কেন্দ্রীয় বাহিনী ধারাবাহিক ভাবে কুকিদের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে। মেইতেই জনগোষ্ঠীর নাগরিক সংগঠনগুলি যৌথমঞ্চ ‘কোঅর্ডিনেটিং কমিটি অন মণিপুর ইন্টিগ্রিটি’ বা ‘কোকোমি’ প্রতিনিধিদল বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে দেখা করে মণিপুর থেকে অসম রাইফেলস প্রত্যাহারের দাবি তুলেছে। প্রসঙ্গত, অগাস্ট মাসে মণিপুরের ৪০ জন মেইতেই বিধায়ক প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখে অসম রাইফেলসের পরিবর্তে অন্য কোনও বিশ্বাসযোগ্য কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর দাবি জানিয়েছিলেন। অভিযোগ তোলা হয়েছিল, কুকিদের মদত দেওয়ার পাশাপাশি অসম রাইফেলসের প্রত্যক্ষ মদতেই মায়ানমার সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ চলছে রাজ্যে। কিছু দিন আগে মণিপুর পুলিশও অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছিল অসম রাইফেলসের বিরুদ্ধে। মেইতেইদের উপরে অত্যাচারে অভিযুক্ত কুকি সংগঠনগুলিকে আড়াল করায় অভিযুক্ত হয়েছেন অসম রাইফেলসের আধিকারিকেরা।

এদিকে মণিপুর পুলিশের তরফে প্রকাশিত রিপোর্টে জানা যাচ্ছে, গত সাড়ে চার মাসের হিংসায় মৃত্যুর সংখ্যা ১৭৫ ছুঁয়েছে। এর মধ্যে ৯৬ জন নিহতের দেহ শনাক্ত করাই যায়নি। আহত ১,১১৮। গোষ্ঠীহিংসা কবলিত এলাকাগুলি থেকে নিখোঁজ হয়েছেন ৩৩ জন। গোষ্ঠীহিংসার ঘটনায় মোট ৫১৭২টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশি রিপোর্টে দাবি। এর মধ্যে ৪৭৮৬টি বাড়ি এবং দফতরের পাশাপাশি ৩৮৬টি ধর্মস্থান রয়েছে। পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর তল্লাশি অভিযানে ৩৬০টি বাঙ্কার ধ্বংস করা হয়েছে বলে পুলিশ রিপোর্ট জানাচ্ছে। তবে সবচেয়ে চিন্তার বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে সরকারি অস্ত্র লুঠ। হিংসা চলাকালীন বিভিন্ন থানা এমনকি, জেলা পুলিশের অস্ত্রাগার থেকে ৫,৬৬৮টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং প্রায় ৫ লক্ষ গোলাগুলি লুট হয়েছে মণিপুরে। পুলিশ রিপোর্ট জানাচ্ছে, এর মধ্যে ১,৩২৯টি আগ্নেয়াস্ত্র, ১৫ হাজার ৫০টি কার্তুজ উদ্ধার হয়েছে। বাজেয়াপ্ত হয়েছে ৪০০টি বোমাও। এই অস্ত্র উদ্ধারই এখন চিন্তার বিষয় হয়ে উঠেছে প্রশাসনের কাছে।

Previous articleমেসি আসছেন কলকাতায়, লা লিগা চাইল ডেডিকেটেড স্টেডিয়াম
Next articleরাতারাতি ‘গায়েব’ ছাত্র-ছাত্রীদের কোটি কোটি টাকা! শিরোনামে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়