সমলিঙ্গ সম্পর্কে আপত্তি না থাকলেও সমলিঙ্গ বিবাহে সম্মতি দেয়নি দেশের শীর্ষ আদালত(Supreme Court)। সমলিঙ্গ বিবাহের আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার রায় পড়তে গিয়ে একগুচ্ছ বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। যেখানে বলা হল সমকামী যুগলরা সন্তান দত্তক নিতে পারবেন না।

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চে চলা এই মামলার সমলিঙ্গ বিবাহের আইনি স্বীকৃতি খারিজের নির্দেশের সঙ্গে প্রথমে আদালত জানায়, অবিবাহিত ও সমলিঙ্গের যুগলরা সন্তান দত্তক নিতে পারবে। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই নির্দেশ বদলে ফেলে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। প্রধানবিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি এসকে কৌলের নির্দেশ দ্বিমত পোষণ করেন সাংবিধানিক বেঞ্চে থাকা বাকি তিন বিচারপতি রবীন্দ্র ভাট, হিমা কোহলি ও পি এস নরসিমহা। যার জেরে অবিবাহিত ও সমলিঙ্গের যুগলরা সন্তান দত্তক নিতে পারবে না বলে জানিয়ে দেয় শীর্ষ আদালত। এই মামলা চলাকালীন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়কে এদিন বলতে শোনা যায়, “শুধুমাত্র বিবাহিত বিষমকামী দম্পতিরাই সন্তানকে স্থিতিশীলতা দিতে পারে তা প্রমাণ করার জন্য রেকর্ডে কোনও তথ্য নেই।” কিন্তু শেষপর্যন্ত ভোটাভুটিতে পিছিয়ে পড়ার ফলে সমকামী যুগলদের দত্তক নেওয়ার অধিকার দেওয়া হল না।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সমকামী সম্পর্ককে বৈধ বলে রায় ঘোষণা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। তারপর, চলতি বছরের মে মাস থেকে সমলিঙ্গের বিয়ে নিয়ে চলছে শুনানি। আজ সেই মামলার রায়দান করেন প্রধান বিচারপতি ডি. ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে গঠিত ৫ বিচারপতির বেঞ্চে। যেখানে প্রধান বিচারপতি বলেন, “বিশেষ বিবাহ আইনে বদল আনতে হলে সেটা সংসদ করতে পারবে। আদালতে কোনও ধারা যুক্ত করলে তা হস্তক্ষেপ করা হবে।” অর্থাৎ সহবাসে সম্মত হলেও সমলিঙ্গের বিয়ের ক্ষেত্র কেন্দ্রের হাতেই সিদ্ধান্ত ছেড়েছে সুপ্রিম আদালত। প্রধান বিচারপতি এদিন মামলার রায়দানে বলেন, বিশেষ বিবাহ আইনে পরিবর্তন করা উচিত কিনা সেটি সংসদের ভেবে দেখা উচিত। যেকোনও সমাজ বা দেশের কোনও ব্যক্তির জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার মধ্যে সেই ব্যক্তি জীবনের দিশা খুঁজে পান। এটা সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদে মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। কিন্তু আইনে কোথাও সমলিঙ্গের বিয়ের বৈধতার কথা বলা নেই। সে ক্ষেত্রে সংসদের অধিবেশনেই আইন পরিবর্তন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।
