বিরোধীরা I.N.D.I.A জোট করার পর থেকেই নাম নিয়ে আতঙ্কে ভুগছে কেন্দ্রের মোদি সরকার। প্রথমে ইংরেজিতে প্রাইম মিনিস্টার অফ ইন্ডিয়ার বদলে লেখা হল প্রাইম মিনিস্টার অফ ভারত। এইসব নিয়ে আলোচনা, বিরোধীদের সমালোচনার মধ্যে দিয়েই হয়ে গিয়েছে G-20 সম্মেলন। সেখানেও একাধিক এই উদাহরণ দেখা গিয়েছে। এসবের মধ্যেই এবার শিক্ষা ক্ষেত্রে গৈরিকীকরণ। এবার দেশের সব শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে ইন্ডিয়ার বদলে ভারত লেখার সুপারিশ করল NCERT।
কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের আমলে একের পর এক বদলে গিয়েছে ঐতিহাসিক জায়গা, সৌধ, রাস্তার নাম। ভারতীয় আইন বিধিও বদলে ন্যায় সংহিতা করার প্রস্তাব এসেছে। এবার, আঁচ শিক্ষাক্ষেত্রে। স্কুলের পাঠ্যবই থেকে ‘ইন্ডিয়া’র বদলে ‘ভারত’ লেখার সুপারিশ করেছে ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (NCERT) কমিটি।
কমিটির চেয়ারপার্সন সি আই আইজ্যাকের মতে, পাঠ্যপুস্তকে ইন্ডিয়ার বদলে ভারত নাম লেখার পক্ষে প্যানেল। শুধু তাই নয়, পাঠ্যক্রমে ‘প্রাচীন ইতিহাস’-এর পরিবর্তে ‘শাস্ত্রীয় ইতিহাস’ চালু করা এবং ভারত সম্পর্কে জ্ঞানকে অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছে। এনসিইআরটি আধিকারিকরা অবশ্য বলেছেন যে প্যানেলের সুপারিশগুলিতে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। “কমিটি সর্বসম্মতভাবে সুপারিশ করেছে যে ‘ভারত’ নামটি পাঠ্যপুস্তকে লেখা উচিত।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ হিস্টোরিক্যাল রিসার্চের (ICHR) সদস্য তথা NCERT কমিটির চেয়ারপার্সনের মতে, “আমাদের ব্যর্থতার কথা বর্তমানে পাঠ্যপুস্তকে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু মুঘল ও সুলতানদের বিরুদ্ধে আমাদের বিজয় নয়”
জাতীয় শিক্ষা নীতি (NEP) 2020-এর সঙ্গতি রেখে স্কুলের পাঠ্যপুস্তকগুলির পাঠ্যক্রম সংশোধন করছে NCERT৷ চূড়ান্ত করার জন্য 19 সদস্যের একটি জাতীয় পাঠ্যক্রম এবং শিক্ষণীয় শিক্ষা উপকরণ কমিটি (NSTC) গঠন করা হয়েছে৷ কমিটির অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন আইসিএইচআর-এর চেয়ারপার্সন রঘুবেন্দ্র তানওয়ার, জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) অধ্যাপক বন্দনা মিশ্র, ডেকান কলেজ ডিমড ইউনিভার্সিটির প্রাক্তন উপাচার্য বসন্ত শিন্ডে এবং হরিয়ানার একটি সরকারি স্কুলে সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষিকা মমতা যাদব।
শিক্ষার গৈরিকীকরণ করা নিয়ে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করেছে বিরোধীরা। এবার ‘ভারত বনাম ইন্ডিয়া’ বিতর্কের আঁচ গিয়ে পড়ল শিক্ষা ক্ষেত্রে। আগামী লোকসভা দিল্লি থেকে মোদি সরকারকে হটাতে কয়েক মাস আগেই গঠিত হয়েছে ইন্ডিয়া জোট। আর ইতিমধ্যেই তার প্রভাব দেখে পায়ের তলার মাটি সরছে গেরুয়া শিবিরের। বিভিন্ন নির্বাচনে বিজেপিকে পিছনে ফেলে এগিয়ে চলেছে ইন্ডিয়া জোট। বিরোধী জোট ‘I.N.D.I.A.’-র পুরো নাম হল – ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স। বিরোধী জোটের নামকরণে পরেই দেশের নাম নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। দেশের নাম ‘ইন্ডিয়া’-র বদলে ইংরেজিতেও ‘ভারত’ লেখা শুরু করে কেন্দ্রীয় সরকার। এবার পাঠ্যসূচি থেকে ‘ইন্ডিয়া’ মুছে ফেলার সুপারিশ করল এনসিইআরটি কমিটি।