১৯০৭

ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়

(১৮৬১-১৯০৭) এদিন প্রয়াত হন। পিতৃদত্ত নাম ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়। জন্মসূত্রে হিন্দু ভবানীচরণের ধর্ম সম্পর্কে অসীম কৌতূহল ছিল। পড়াশােনার পাঠ শেষ হতে না হতে কেশবচন্দ্র সেনের প্রভাবে ভবানীচরণ নববিধান ব্রাহ্মসমাজের সভ্য হন। পরে একে একে প্রােটেস্ট্যান্ট ও রােমান ক্যাথলিক। খ্রিস্টধর্মের এই দুই শাখাতেই দীক্ষিত হয়ে ধর্মপ্রচারের কাজে যুক্ত হন। নিজের দেওয়া নতুন ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায় নামেই পরিচিত হন তখন থেকে। ঘুরে বেড়ান সিন্ধু প্রদেশ, হায়দরাবাদ প্রভৃতি অঞ্চলে। ১৯০০-এ কলকাতায় ফিরে প্রাক্তন ছাত্র কার্তিকচন্দ্রের সহায়তায়, তাঁর ১৮ বেথুন রাে-এর বাড়ি থেকে নতুন করে প্রকাশ করলেন ক্যাথলিকদের মুখপত্র ‘সােফিয়া’ পত্রিকা। সেখানে একটি সংখ্যায় ব্রহ্মবান্ধব প্রথম রবীন্দ্রনাথকে ‘বিশ্বকবি’ (World-Poet) আখ্যা দেন। ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায় স্বদেশি আন্দোলনের কট্টরপন্থী নেতা, বাগ্মী, পণ্ডিত, ‘সন্ধ্যা’ পত্রিকার সম্পাদক। সারা জীবন বিতর্ক বয়ে বেড়ানাে এমন এক বর্ণময় চরিত্রের মানুষের প্রতি রবীন্দ্রনাথও কম আকর্ষণ অনুভব করেননি। ‘চার অধ্যায়’ উপন্যাসে ব্রহ্মবান্ধবের ছায়া তার জ্বলন্ত প্রমাণ।

১৯৭৫


প্রফুল্লচন্দ্র লাহিড়ী

(১৯০০-১৯৭৫) এদিন প্রয়াত হন। তিনিই বাংলার প্রথম এডিটোরিয়াল কার্টুনিস্ট। বাংলায় কার্টুন চর্চার বর্তমান অবস্থা দেখে ধারণা করা যাবে না যে একসময় কী তুমুল ভাবে এই শিল্পমাধ্যমটি উপস্থিত থাকত অধুনালুপ্ত পত্র-পত্রিকায়। ঢাকা শহরে ১৯০০ সালে আমার জন্ম। লেখাপড়ায় ভালই ছিলাম। ইতিহাসের ছাত্র হয়ে ফার্স্ট ক্লাস পেয়েছিলাম। ছেলেবেলা থেকেই হাতের লেখা, ড্রয়িং আর মানচিত্র আঁকায় ক্লাসে প্রাইজও পেয়েছি। ঢাকা কলেজে ইতিহাস পরীক্ষায় আমার ম্যাপ দেখে বিদেশি অধ্যাপক র্যামসবােথাম লিখছিলেন This is the finest map have ever seen drawn by a student.’ লিখেছেন প্রফুল্লচন্দ্র। (আমি, কুমারেশ ঘােষ সম্পাদিত একালের কার্টুন, প্রকাশকাল ১৯৬৭-৬৯)। অমৃতবাজার পত্রিকায় স্টাইলাইজড টানে স্বাক্ষর করতেন Piciel, যুগান্তরে তিনিই কাফী খাঁ, সম্রাট আকবরের বিখ্যাত পার্ষদের নামে। প্রথমদিকে নিজের কার্টুনের ওপর ডেভিড লো-র সামান্য প্রভাব থাকলেও, আস্তে-আস্তে নিজস্ব স্টাইল তৈরি করেন। তুলি নয়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ব্যবহার করতেন নিব। গগনেন্দ্রনাথের সার্থক উত্তরসূরি প্রফুল্লচন্দ্রের কার্টুন সংবাদপত্র-পাঠকদের এক নতুনত্বের সন্ধান দিল। ইতিহাসের শিক্ষক ছিলেন বলেই সমকালীন রাজনীতির ঘটনা বিশ্লেষণ করতেন অভ্রান্ত ভাবে। চার্চিলকে আঁকতেন গোলগাল বুলডগের মতো। গান্ধীজিকে দেখাতেন রোগা চাষির মতো, হাতে লাঠি ও কোমরে ঝোলানো ট্যাঁকঘড়ি।।

১৯২০

কে আর নারায়ণন (১৯২০-২০০৫) এদিন জন্মগ্রহণ করেন। পুরাে নাম কোচেরিল রমন নারায়ণন। ভারতের দশম রাষ্ট্রপতি। কেরিয়ার শুরু করেছিলেন জাপান, যুক্তরাজ্য, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, চিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রদূত হিসেবে। নেহরু তাঁকে দেশের সেরা কূটনীতিক হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। ইন্দিরা গান্ধীর অনুরােধে রাজনীতিতে প্রবেশ এবং লােকসভায় পরপর তিনটি সাধারণ নিবার্চনে জয়লাভ। প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালনও করেন।

১৯০৪

যতীন্দ্রনাথ দাস (১৯০৪-১৯২৯) এদিন কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। ভবানীপুর মিত্র ইনস্টিটিউশন থেকে ম্যাট্রিক পাশ করে অসহযােগ আন্দোলনে যােগ দেন। লাহাের ষড়যন্ত্র মামলার। অন্যতম আসামি হিসেবে। তাঁকে লাহাের জেলে পাঠানাে হয়। সেখানে রাজবন্দিদের ওপর কারা কর্তৃপক্ষের দুর্ব্যবহারের জন্য অনশন আন্দোলন শুরু করেন। ৬৩ দিন অনশনের পর মৃত্যুবরণ করেন।
