একসময় দলের রাজ্য সভাপতি ছিলেন, কিন্তু এখন কোন পদে নেই দিলীপ ঘোষ। একুশের বিধানসভা ভোটের পর বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ পদে বসেন সুকান্ত মজুমদার। কিন্তু লোকসভার ভোটের আগে রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে দলের কর্মীদের একাংশ। বস্তুত, সেই ক্ষোভের আঁচ পৌঁছে গিয়েছে মুরলীধর সেন লেনেও।

এদিন বিজয়া সম্মিলনীতে অনুগামীদের স্লোগানে, উচ্ছাসে ভেসে গেলেন দিলীপ। সোমবার তাঁকে অনুরাগীদের দেওয়া মুকুট পরতে দেখা গেলেও দলের পক্ষে দায়িত্বের মুকুট নেই দিলীপ ঘোষের। একদা বিজেপির রাজ্য সভাপতি পরে সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ এখন শুধুই দলীয় সাংসদ। কিন্তু অনেক দিন পরে কলকাতায় দলের আদি রাজ্য দফতরে দিলীপকে ঘিরে দেখা গেল উল্লাস। স্লোগান উঠল— ‘হাউ ইজ দ্য জোশ! দিলীপ ঘোষ, দিলীপ ঘোষ।’কোনও দফতরেই দিলীপের জন্য আলাদা করে ঘর নেই এখন। তবে দিলীপ যে বিজেপি কর্মীদের একাংশের মনে রয়েছেন সেটাই যেন পুরনো দফতরে ঘণ্টাখানেক কাটিয়ে দেখিয়ে গেলেন দিলীপ।
কথা ছিল দিলীপ আসবেন বিকেল ৪টেয়। কিন্তু আসতে আসতে ৫টা বেজে যায়। আর তত ক্ষণে মুরলীধরের সরু রাস্তায় ভিড় জমে যায়। কলকাতার তো বটেই আশপাশের জেলা থেকেও অনেক কর্মী চলে আসেন। তাঁদের মধ্যে যুব মোর্চা, মহিলা মোর্চার পুরনো কর্মীরাও ছিলেন। ভিড়ে দেখা গিয়েছে সম্প্রতি তৈরি হওয়া ‘বিজেপি বাঁচাও কমিটি’-র নেতাদেরও। দিলীপ পৌঁছতেই যে ধরনের স্লোগান উঠতে শুরু করে তা শুনলে ক্ষমতাসীন রাজ্য নেতৃত্বের কাছে অস্বস্তিরও হতে পারে।কেউ ফুলের মালা পরিয়ে, কেউ মুকুট পরিয়ে বরণ করে নেন। আর দিলীপ সেই সব উৎসাহী কর্মীদের মাঝখানেই বসে পড়েন। নিজে হাতে সকলকে মিষ্টি বিতরণও করেন।
গত শুক্রবারই দিলীপ বলেন, ‘‘আজ পার্টি হারতে হারতে হারাধন হয়ে গিয়েছে। পিঠ ঠেকে গিয়েছে পিঠে। পুরনোরা এগিয়ে আসুন। কাজ করুন। পার্টিকে জেতান।’’ তবে সোমবার দিলীপকে ঘিরে যে ভিড় ও স্লোগান তাতেও কি অস্বস্তিতে পরবেন রাজ্য নেতৃত্ব? দিলীপ অবশ্য সতর্ক ভাবেই জবাব দিয়েছেন। তাঁকে ঘিরে উল্লাস ও স্লোগান নিয়ে দিলীপ বলেন, ‘‘অনেক সময়ে মানুষ আবেগে অনেক কিছু বলে ফেলে। সেটাকে গুরুত্ব না দিয়ে বরং বর্তমান নেতৃত্বের দেখানো পথেই আমাদের সকলকে মিলে লড়তে হবে।’’