প্রয়াত নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা, শোকপ্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর

প্রয়াত হলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা নির্মলা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৭। শুক্রবার সকালে হাসপাতালে যান অভিজিৎ। তার পরেই তাঁর মায়ের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসে। শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

শুক্রবার সকালেই কলকাতায় আসেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ। কলকাতা বিমানবন্দরে তাঁকে নিতে যান রাজ্যের মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন।গতকালই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা অত্যন্ত অসুস্থ। তিনি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীও জানান, পড়ে গিয়ে তিনি মাথায় চোট পেয়েছেন।

বুধবার পড়ে গিয়ে তিনি মাথায় চোট পেয়েছিলেন। বুধবার সকালেই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।  অভিজিৎ বিনায়ক যখন নোবেল পেয়েছিলেন তখনও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। তারপর থেকে অবশ্য সেভাবে তাঁকে কোনও অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি। অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটিরও সদস্যও। আর্থিক সংক্রান্ত নানা বিষয়েও রাজ্য সরকার তাঁর সঙ্গে আলোচনা করে। তাঁর মায়ের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এক্স হ্যান্ডেলে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ প্রফেসর নির্মলা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নোবেল বিজয়ী প্রফেসর অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মায়ের মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত। আজ কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। আমি গতকাল তাঁকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলাম।

অধ্যাপক নির্মলা বন্দ্যোপাধ্যায় লন্ডন স্কুল অফ ইকনমিক্সে প্রশিক্ষিত ছিলেন এবং কলকাতার সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোশ্যাল সায়েন্সে অর্থনীতির প্রাক্তন অধ্যাপিকা ছিলেন। তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ প্রয়াত অধ্যাপক দীপক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।আমি নির্মলাদিকে অনেকদিন থেকে চিনতাম এবং অনেক মধুর স্মৃতি আছে। তার মৃত্যু আমাদের কাছে এক বিরাট ক্ষতি।অভিজিৎ, অনিরুদ্ধ, এসথার ডুফলো সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের পাশাপাশি নির্মলাদির বন্ধু ও ছাত্রদের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা থাকল।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বুধবার পড়ে গিয়ে মাথায় চোট পেয়েছিলেন নির্মলা। তার পরেই তাঁকে শহরের ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতাল সূত্রেও জানা গিয়েছে, ভেন্টিলেশন সাপোর্টে ছিলেন নির্মলা। এর আগে শ্বাসকষ্টের সমস্যার জন্য গত ২৬ অক্টোবর একই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল তাঁকে। চিকিৎসার পর ২৯ তারিখে তাঁকে ছেড়েও দেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, দু’দিন আগেই সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে তিনি বাড়ি ফিরেছিলেন। কিন্তু এ বার তাঁর শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক ছিল বলেই খবর মিলেছিল হাসপাতাল সূত্রে। শুক্রবারই মাকে দেখতে আসেন অভিজিৎ। বেলা ১২টা নাগাদ তাঁকে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দিতে দেখা যায়। তার পরেই খবর পাওয়া যায়, নোবেলজয়ীর মা প্রয়াত হয়েছেন।

এদিন তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তাঁর বালিগঞ্জের বাসভবনে যান মুখ্যমন্ত্রী। বলেন,পরম শ্রদ্ধেয়া নির্মলা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শেষ শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করতে আজ তাঁর বাসভবনে উপস্থিত হয়েছিলাম। সেখানেই তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কিছু মুহূর্ত কাটালাম। আমি নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর পরিবার-পরিজনের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি। নির্মলাদির চলে যাওয়ায় যে গভীর শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে তা কোনোদিন পূরণ হওয়ার নয়।

তাঁর সঙ্গে কাটানো প্রত্যেকটি মধুর মুহূর্ত-সমূহ আমার হৃদয়ের অন্তরে প্রোথিত থাকবে। আমি নির্মলাদির বিদেহী আত্মার চিরশান্তি কামনা করছি। এই শোকসন্তপ্ত সময়ে আমি তাঁর পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের জন্য পরমপিতার কাছে বিনম্র চিত্তে প্রার্থনা জানাচ্ছি।

Previous articleরাজস্থানের ২৫ জায়গায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের হা.না!
Next articleসুপ্রিম কোর্টে ফের পিছিয়ে গেল ডিএ মামলার শুনানি