প্রশ্ন-ঘুষ কাণ্ডে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের তোপ এসে পড়েছে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের (Mahua Moitra) উপর। নীতি কমিটির (Ethics committee) ৫০০ টাকার রিপোর্টে সাংসদের পদ খারিজের সুপারিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি বিজেপি নেতা নিশিকান্ত দুবে জানিয়েছেন যে মহুয়ার কেসে নাকি সিবিআই তদন্তের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। এবার পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে মহুয়া বললেন, “যা হওয়ার ছিল সেটাই হয়েছে।” রাজনৈতিকভাবে লড়াই করতে না পেরে সংসদে তৃণমূলকে কোণঠাসা করতে বিজেপির এই ঘৃণ্য পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করেছেন বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী এবং কংগ্রেস সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী। লোকসভা নির্বাচনের আগে বিরোধী শক্তিকে ভয় পাচ্ছে বিজেপি?
লোকসভার এথিক্স কমিটির সুপারিশের কথা প্রকাশ্যে আসার পর গতকাল রাতেই মহুয়ার হয়ে সরব হলেন প্রাক্তন বাম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী (Sujan Chakraborty)। তিনি বলেন, “এক দিকে বলছে, মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজ করা হবে। আবার অন্য দিকে বলছে, কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করানো হবে। দু’টো একসঙ্গে হয় কী করে? পুরো বিষয়টিই অনৈতিক।” একই সুর লোকসভার সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরীর (Adhir Ranjan Chowdhury) গলাতেও। বিজেপি বিরোধী কথা বললেই এই ধরনের অত্যাচার নেমে আসে বলে, অভিযোগ তাঁর। এই প্রসঙ্গে রাহুল গান্ধীর উদাহরণও টেনে আনেন তিনি। ক্যাশ ফর কোয়েশ্চেন ইস্যুতে মহুয়ার বিরুদ্ধে বিজেপি একের পর এক পদক্ষেপ করায় তৃণমূল সাংসদের পাশে দাঁড়িয়েছে কংগ্রেস (Congress)। সবটাই যে বিজেপির উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তা বারবার শোনা গেছে দিল্লির কংগ্রেস নেতাদের মুখেও। তৃণমূল সাংসদের পাশে এভাবে বাম এবং কংগ্রেস দাঁড়ানোয় সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছে বিজেপি। জোরালো হচ্ছে I.N.D.I.A জোটের শক্তি, মনে করছেন অনেকে। মহুয়া অবশ্য সুপারিশ প্রসঙ্গে বলেছেন, “প্রথম থেকে এটা জানাই ছিল, যা হবে দেখা যাবে। ওরা যত বেশি এসব করবে আমরা তত বেশি লড়াইয়ে নামব।” আজ বিকেল চারটে নাগাদ এথিক্স কমিটিতে হাজিরা দেওয়ার কথা কৃষ্ণনগরের সাংসদদের। তার আগেই লোকসভার স্পিকারকে চিঠি লিখে মহুয়ার প্রশ্ন, এথিক্স কমিটির গোপন রিপোর্টের খসড়া ফাঁস হল কী ভাবে? এটা কি বিশেষ অধিকার লঙ্ঘনের সামিল নয়?
আজ ডায়মন্ড হারবারে সংসদ তথা তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) মিডিয়ার প্রশ্নের উত্তরে বলেন মহুয়া মৈত্র একাই লড়াই করতে পারেন। মোদি আদানিদের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই এভাবে প্রতিহিংসার রাজনীতি করা হচ্ছে বলেই মত অভিষেকের। এদিন, মহুয়া প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অভিষেক (Abhishek Banerjee) বলেন, “নীতি কমিটিতে অনেক অভিযোগ পড়ে রয়েছে। দেড় মাস আগে নতুন সংসদভবনে যখন বিশেষ অধিবেশন বসল, বিজেপি সাংসদ রমেশ বিদুরি সংসদের গরিমায় আঘাত করেন। বিজেপি-র এমন অনেক সাংসদ রয়েছে, যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পড়ে রয়েছে। আজ পর্যন্ত শুনানি হয়নি। নীতি কমিটির সুপারিশের যে খসড়া আমার হাতে এসেছে, তাতে দেখলাম, মহুয়ার বিরুদ্ধে কিছু রয়েছে কি না খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, তদন্ত করে দেখতে হবে। যদি কিছু না-ই থাকে, তাহলে বহিষ্কারের সুপারিশ করলেন কী করে?” মহুয়ার উপর আস্থা রেখেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের মন্তব্য, “নিজের লড়াই, নিজে লড়ার যোগ্য।”