অশালীন আচরণের জেরে বিধানসভায় শীতকালীন অধিবেশনের জন্য সাসপেন্ড হয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তারপরও বিধানসভায় বয়কট রাজনীতি, ধর্না সহ নানান ধরণের রাজনৈতিক কার্যকলাপ চালাচ্ছেন শুভেন্দু। বিজেপির তরফে বয়কট করা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তবে বিধানসভায় বিজেপির যে কাণ্ড করে চলেছে তাতে একমত নয় বিজেপি সাংসদ তথা প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। স্পষ্ট ভাষায় তিনি জানালেন, ‘এই ধরণের বয়কট রাজনীতি বন্ধ হওয়া উচিৎ।’ শুধু তাই নয়, নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীর কার্যকলাপের তীব্র নিন্দা করলেন দিলীপ ঘোষ। সব মিলিয়ে শুক্রবার ফের একবার প্রকাশ্যে চলে এল শুভেন্দু-দিলীপ মতানৈক্য।

শুক্রবার বিধানসভায় (WB Assembly) এসেছিলেন দিলীপ ঘোষ। সেখানে দলের বিধায়কদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। শুভেন্দু অধিকারী এদিন বিধানসভায় আম্বেদকর মূর্তিতে গঙ্গাজল দিয়ে শুদ্ধিকরণের কর্মসূচি সারেন। তার কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে যান। শুভেন্দু বেরিয়ে যাওয়ার প্রায় ৩০ মিনিট পর বিধানসভায় আসেন দিলীপ ঘোষ। শুভেন্দুর অনুপস্থিতিতে তাঁরই ঘরেই বসেন তিনি। সেখানে দিলীপকে উত্তরীয়, ফুল নিয়ে স্বাগত জানান বিজেপি পরিষদীয় দলনেতা মনোজ টিগ্গা। সেখান থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিধানসভায় বিজেপির কার্যকলাপের তীব্র নিন্দা করেন দিলীপ। নাম না করে ধুয়ে দেন শুভেন্দু অধিকারীকেও। মুখ্যমন্ত্রীকে বিজেপির বয়কট নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি সাফ জানান, “এই বয়কটের রাজনীতি, কালচার বদল হওয়া দরকার। এভাবে বিধানসভার গরিমা কমে যাচ্ছে। আমাকেও তো বয়কট করা হয়েছিল। রাস্তায়-ঘাটে আমাকে কালো পতাকা দেখানো হয়, বিক্ষোভ দেখানো হয়। পশ্চিমবঙ্গের কালচার শুধু বয়কটের রাজনীতি। এটা বদল হওয়ার দরকার।”

উল্লেখ্য, এদিন দিলীপের মন্তব্যে রাজনৈতিক মহলের দাবি, বিধানসভায় শুভেন্দু অধিকারীর কার্যকলাপে দিলীপ ঘোষ যে রীতিমতো ক্ষুব্ধ তা তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট। আর এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই উঠে আসছে বিজেপির অন্দরে চলতে থাকা গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব। আদি বিজেপি ও নব্য বিজেপির সংঘাত। রাজ্য বিজেপিতে আদি বিজেপির নেতা হিসেবেই বিবেচনা করা হয় দিলীপ ঘোষকে। সেই জায়গায় নব্য বিজেপি হিসেবে ধরা হয় শুভেন্দুকে। আর এই আদি ও মামলা থেকে বাঁচতে বিজেপিতে আসা নব্য বিজেপি শুভেন্দুর সংঘাত নতুন নয়। সেই সংঘাতই এবার ধরা পড়ল দিলীপের মন্তব্যে।
