১৯৭২ সালে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী গলদা মেয়র-এর পথেই এবার তাঁর উত্তরসূরি বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। বিশ্বের সমস্ত দেশে ছড়িয়ে থাকা ইজরায়েলের শত্রুদের নিকেশ করার পথেই হাঁটার পরিকল্পনা ইজরায়েল প্রধানমন্ত্রীর। ইজরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদকে এমন নির্দেশই দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।

১৯৭২-এর মিউনিখ গণহত্যার প্রতিশোধ নিতে তৎকালীন ইজরায়েল প্রধানমন্ত্রী গলদা মেয়র ইজরায়েলের শত্রুদের নিঃশেষ করার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। প্রায় ২০ বছর ধরে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের দেশগুলিতে এই অপারেশন চলেছিল। সূত্রের খবর ইজরায়েল প্যালেস্তাইনের চলতি অশান্তির পরিস্থিতিতে আরও বেশ খানিকটা ঘি ঢালতে পারে নেতানিয়াহুর পরিকল্পনা। ইতিমধ্যেই মোসাদকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন দেশে লুকিয়ে থাকা শত্রুদের চিহ্নিত করা ও খতম করার রূপরেখা তৈরি করার জন্য।

নেতানিয়াহুর এই পরিকল্পনা কার্যকর শুরু হলে আঘাত পড়তে পারে তুরস্ক, লেবানন, কাতারের মতো দেশে। ইতিমধ্যেই হামাসের কার্যকারী ঘাঁটি হিসাবে প্রকাশ্যে এসেছে কাতারের নাম। কাতার প্রশাসন সূত্রে প্রকাশ করা হয়েছে আমেরিকার মাধ্যমে ২০১২সালে হামাস একটি প্রচার চ্যানেলের দফতর খুলেছে কাতারে। বর্তমান পরিস্থিতিতেও ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইনের মধ্যে যুদ্ধবিরতির সময় মধ্যস্থতা করেছে কাতার।

এই অপারেশনে যে চার মূল টার্গেটের নাম প্রকাশ্যে এসেছে তাঁরা হলেন ইজমাইল হেনিয়েহ, মোহম্মদ দেফ, ইয়াইয়া সিনওয়ার এবং খালেদ মশাল। হেনিয়েহ ছিলেন প্যালেস্তাইনের রাষ্ট্রপতি। পরে ২০১৭ সালে হামাসের প্রধান নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৫ সাল থেকে ইজরায়েলের মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় থাকা মোহম্মদ দেফ বর্তমানে হামাসের সেনাবাহিনীর প্রধান। ৭ অক্টোবর ইজরায়েলে শুরু হওয়া হামলার সময় যে অডিও বার্তা পাঠায় হামাস তাতেও দেফের গলা ছিল। অন্যদিকে, ২০১৭ সাল থেকে গাজায় হামাসের নেতৃত্ব দিচ্ছে ইয়াইয়া সিনওয়ার। বর্তমানে পণবন্দি অনেকেই মুক্তি পাওয়ার পর ইয়াইয়াকে গাজায় দেখতে পাওয়ার দাবি জানিয়েছে। ১৯৯৭ সালে মোসাদের হামলায় কোমায় চলে যাওয়া খালেদ মশালকে আবারও নিজেদের কব্জায় চায় ইজরায়েল। হামাস পলিটব্যুরোর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য খালেদের মাথার দামও অনেকটা নেতানিয়াহুর কাছে।
ফলে এই অপারেশনের কারণে মধ্য-প্রাচ্যে ফের অচলাবস্থার আশঙ্কা করছেন রাজনীতিকরা। ইতিমধ্যেই মোসাদের প্রাক্তন ডিরেক্টর এফ্রেইম হাভেলি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন চলতি অশান্তির মধ্যে নেতানিয়াহুর পরিকল্পনা ফের পরিস্থিতি জটিল করে তুলবে। যদিও নির্দিষ্ট দেশ ও হামাস নেতাদের নাম নির্দিষ্ট করে আঘাত হানার ছক কষা শুরু করেছে ইজরায়েল।
