Friday, November 14, 2025

Hooghly News: দৃষ্টিহী.ন পবিত্র মণ্ডল আলো দেখাচ্ছেন সমাজকে!

Date:

সুমন করাতি, হুগলি

মানুষ চাইলে ইচ্ছেশক্তির জোরে সব অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে। হুগলি (Hooghly) জেলার সরকারি কর্মী পবিত্র মণ্ডল (Pabitra Mondal) সেই কথাই প্রমাণ করলেন। নিজে দৃষ্টি শক্তি হারালেও সমাজকে অনায়াসে পথ দেখাচ্ছেন যাতে আগামীতে কেউ দৃষ্টিহীনতার কারণে পিছিয়ে না পড়েন। হুগলির জেলাশাসক অফিসের (DM office) সমাজ কল্যাণ দফতরে কর্মরত পবিত্র, দৃষ্টিহীন শিশুদের (Blind Children) পড়াশোনা শেখানোর মাধ্যমেই খুঁজে পেয়েছেন বেঁচে থাকার উদ্দেশ্য।

নাম পবিত্র মণ্ডল (Pabitra Mondal), নামের মতই চিন্তা ভাবনাতেও স্বতন্ত্র তিনি। আর পাঁচজন সাধারণ মানুষের মতোই মতোই প্রতিদিন বাঁশবেড়িয়া থেকে রিষড়ায় আসেন। তবে কাজটা একটু অন্যরকম কারণ তিনি এখানে দৃষ্টিহীনদের শিক্ষা দান করেন। এই কাজে তাঁর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন স্ত্রী টুম্পা (Tumpa Mondal)। তিনি দৃষ্টিশক্তিহীন। ছোটবেলা থেকে কর্নিয়ার সমস্যা থাকার কারণে চোখে দেখতে পান না তিনি। বর্তমানে চুঁচুড়ায় একটি কোয়ার্টারে দিব্যি সংসার করছেন দম্পতি। তাঁদের ইচ্ছা আগামী দিনে দৃষ্টিশক্তিহীন শিশুদের ব্রেলের মাধ্যমে পড়াশোনা শিখিয়ে সমাজের উপযুক্ত করে গড়ে তোলা। মাত্র আড়াই বছর বয়সে টাইফয়েডে আক্রান্ত হন পবিত্র। হারিয়ে যায় দৃষ্টি শক্তি। ছেলেকে নিয়ে শুরু হয় বাবা মায়ের লড়াই সংগ্রাম। বাবা দিনমজুরের কাজ করে যা উপার্জন করতেন, তাতে কোনওরকমে চলত সংসার। কিন্তু ছেলের এমন অবস্থা দেখে দিশাহারা হয়ে যায় পরিবার। যদিও হাল ছাড়তে রাজি হননি তাঁরা। সুদূর বাঁকুড়া থেকে কয়েকশো কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে চলে আসেন হুগলিতে। ছেলেকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে লড়াই চালিয়ে যান দুজনেই।হুগলিতে উত্তরপাড়ার লুই- ব্রেল স্কুলে ছেলেকে ভর্তি করান বাবা। সেখান থেকে মাধ্যমিক পাশ করার পর উত্তরপাড়ার অমরেন্দ্র বিদ্যাপীঠ থেকে পড়াশোনা শিখে কলেজে ভর্তি হন পবিত্র। ইংরেজিতে মাস্টার ডিগ্রী করে হুগলি জেলাশাসক অফিসে চাকরি পান নিজের যোগ্যতায়। কাজ শেষ হওয়ার পর প্রতিদিন শিশুদের পড়াশোনার জন্য বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয় তাঁকে। লক্ষ্য একটাই, দৃষ্টিহীন শিশুরা যেন শিক্ষা লাভ থেকে বঞ্চিত না হন।

পবিত্র জানান, “ছোটবেলায় দৃষ্টিশক্তি হারানোর পর কিছুটা সমস্যায় পড়েছিলাম। নিজে সরকারি চাকরি করার পাশাপাশি দৃষ্টিশক্তিহীন শিশুদের পড়াশোনা শেখাই। স্কুলে ভর্তি হওয়ার আগে একটা শিশুকে ব্রেল শেখানো ও প্রাথমিক পড়াশোনা শেখানোর কাজ করি। বর্তমানে চারজন দৃষ্টিহীন শিশুকে পড়াই। আর এই কাজে আমাকে সাহায্য করে আমার স্ত্রী। পশ্চিমবঙ্গে দৃষ্টিহীনদের জন্য আলাদা করে কোনও কোচিং সেন্টার নেই। অন্য শিশুদের সঙ্গে পড়তে তাঁদের সমস্যা হয়। আমাদের সবটাই কানে শুনে করতে হয়। ভবিষ্যতে এই শিশুদের জন্য একটা কোচিং সেন্টার তৈরি করতে চাই।”

Related articles

সরকারি হাসপাতালে নাবালিকা রোগীর শ্লীলতাহানি! গ্রেফতার RG Kar আন্দোলনের ‘বিপ্লবী’ ডাক্তার

উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাসাতে সরকারি হাসপাতালে নাবালিকা রোগীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে। ঘটনায় গ্রেফতার বারাসাত মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের...

আন্দুল রোডে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড! ভস্মীভূত দুই স্পঞ্জ কারখানা 

রাতের হাওড়ায় ভয়াবহ আগুনে কার্যত ছারখার হয়ে গেল আন্দুল রোডের পাশে হাঁসখালি পোল এলাকার দুটি স্পঞ্জ তৈরির কারখানা।...

সোনারপুরে শুরু হচ্ছে প্রবীণদের জন্য বিনামূল্যে নিউমোনিয়া ও ফ্লু টিকাকরণ কর্মসূচি

শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গেই নিউমোনিয়ার সংক্রমণ বাড়ছে রাজ্যজুড়ে। বিশেষ করে প্রবীণ নাগরিকদের ক্ষেত্রে এই রোগ অনেক সময় প্রাণঘাতী...

প্রকাশিত হল আইসিএসই এবং আইএসসি পরীক্ষার সময়সূচি

প্রকাশিত হল আগামী বছরের দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির আইসিএসই এবং আইএসসি পরীক্ষার সময়সূচি। কাউন্সিলের তরফে এদিন বিজ্ঞপ্তি জারি...
Exit mobile version