পছন্দের প্রেমিকার সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছে ছেলে। শাস্তি হিসাবে মাকে বিবস্ত্র করে গ্রামে ঘোরানো এবং বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে রাখার মতো অপরাধ! এরই বিচারে গ্রামে ‘বেটা পড়াও’-এর শিক্ষা দিল কর্ণাটক হাইকোর্ট (Karnataka High Court)। পাশাপাশি গ্রামের মানুষদের ‘সম্মিলিত কাপুরুষতা’কে (collective cowardice) তিরষ্কার করে আদালত। নারীর সম্মান বাঁচানোর এই বিচার প্রক্রিয়ায় আদালতকে বলতে শোনা যায় সেই কবিতা – ‘শোনো দ্রৌপদী, হাতে অস্ত্র তুলে নাও! গোবিন্দ তোমাকে বাঁচাতে আসবে না।’ পুষ্যমিত্র উপাধ্যায়ের এই হিন্দি কবিতাটিই ছড়িয়ে পড়েছিল দিল্লির নির্ভয়ার ঘটনার পর।

কর্ণাটকের বেলাগাভিতে মহিলাকে নগ্ন করে ঘোরানোর সুও মোটো (suo moto) মামলা দায়ের করা হয়। অভিযোগ, নির্যাতিতার ছেলের সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল গ্রামেরই একটি মেয়ের। মেয়ের পরিবার তাদের বিয়েতে সম্মতি না দেওয়ায় দুজনে একসঙ্গে পালিয়ে যায়। তারপরই ছেলেটির মায়ের ওপর চড়াও হয় মেয়ের আত্মীয়রা। তাঁকে যখন নির্যাতন করা হয় তখন গ্রামের প্রায় ৫০-৬০ জন মানুষ সেটা চুপ করে দাঁড়িয়ে (mute spectators) দেখেছে। যখন ১৩ জন মিলে নির্যাতন (assault) চালায় মহিলার ওপর। এক ব্যক্তি প্রতিবাদ করায় তাঁকেও মারধর করা হয়।

মামলার পর্যবেক্ষণে তীব্র ধীক্কার জানায় কর্ণাটক হাইকোর্টের বিচারপতি প্রসন্ন বি ভারালে ও বিচারপতি কৃষ্ণ এস দিক্ষীতের ডিভিশন বেঞ্চ। গ্রামবাসীরা সবাই অন্যায় না করলেও তাঁরা নীরব দর্শকের ভূমিকা নিয়েছিল যা অপরাধীদের অপরাধে ইন্ধন জুগিয়েছে। এরপরই আদালতের পর্যবেক্ষণ ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ যেমন চলছে তেমন ‘বেটা পড়াও’ এর অভ্যাস শুরু করা দরকার। তাহলে ওরা শিখবে কীভাবে নিজেদের বোনেদের সম্মান ও রক্ষা করতে হয়।

আরও পড়ুন:রেশন বন্টন মামলায় বাকিবুরের পকেটেই হাজার কোটি! দিল্লিতে রিপোর্ট পাঠিয়ে বি.স্ফোরক ইডি
