বেসরকারি হাসপাতালে ICU-তে ভর্তি করে লক্ষ লক্ষ টাকা মুনাফা তোলার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অন্যদিকে কানাকড়ি হারিয়ে পথে বসে রোগীর পরিবার। এবার সেই ‘নিয়মে’ লাগাম টানছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। কোন কোন ক্ষেত্রে ICU-তে ভর্তি করা যাবে, কখন ICU থেকে বের করা যাবে এমনকি ICU-তে যে চিকিৎসক থাকবেন তাঁদের যোগ্যতা নিয়ে একগুচ্ছ নির্দেশিকা (guidelines) বের করা হল। চিকিৎসা ব্যবস্থা ও রোগী-রোগীর পরিবারের মধ্যে স্বচ্ছতা আনার উদ্দেশ্যে এই নির্দেশিকা বলে দাবি চিকিৎসকদের একটা অংশের।

রোগী বা তাঁর নিকটাত্মীয়ের পক্ষ থেকে যদি অনুমতি না থাকে তাহলে ICU-তে ভর্তি করা যাবে না, এমনটাই নির্দেশিকার প্রথমে বলা হয়েছে। অর্থাৎ এখন থেকে পরিবারের লোককে না জানিয়ে কোনওভাবে ICU-তে নিতে পারবে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। নিরাময়যোগ্য নয় (terminally ill) এমন রোগী বা স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন ঘোষণা করেছেন এমন রোগীদের মুমূর্ষু অবস্থায় ICU-তে ভর্তি করা যাবে না। এমনকি অতিমারী পরিস্থিতিতে চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রতিবন্ধকতার সময়েও ICU-এর ব্যবহারে লাগাম টেনেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক।

বহুক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের করা আবেদন বা মামলার কারণে ২৪ বিশেষজ্ঞের একটি দল গঠন করা হয়। সেই বিশেষজ্ঞ কমিটি ICU সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে ICU-র দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে বিশেষজ্ঞ হতে হবে। সেই সংক্রান্ত ডিগ্রি আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড বা কানাডা থেকে প্রাপ্ত হওয়াকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। তিন বছরের ট্রেনিং সহ একটি আইসিইউ বোর্ডের সার্টিফিকেট থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদি এই দুই ডিগ্রির কিছুই না থাকে তাহলে অন্তত কর্মজীবনের মধ্যে তিনবছরের মধ্যে অন্তত ৫০ শতাংশ ICU-তে ডিউটি করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

ICU থেকে কখন রোগীকে বের করা যাবে তা নিয়েও বিস্তারিত বলা হয়েছে রিপোর্টে। রোগীর অবস্থা স্থিতিশীল (stable) হলে, নতুন করে জটিলতা দেখা না গেলে ICU থেকে রোগীকে বের করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আবার চিকিৎসায় কোনও উন্নতির লক্ষ্মণ না থাকলে পরিবারের অনুমতি থাকলে ICU থেকে বের করতে হওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। ইনটেনসিভ কেয়ারে থাকা রোগীকে অন্যত্র সরাতে গেলে নির্দিষ্ট যে কয়েকটি মনিটরিং করতেই হবে তার মধ্যে রয়েছে ব্লাড প্রেসার, পালস রেট, রেসপিরেটরি রেট, শ্বাসের প্রকার, হৃৎসঞ্চালন, এসপিওটু (SpO2) এবং স্নায়বিক লক্ষ্মণ।