রাজনীতিতে রামচন্দ্রের অপব্যবহার! শঙ্করাচার্যদের মন্তব্যকে হাতিয়ার করে বিজেপিকে তুলোধনা তৃণমূলের

রীতি মেনে হচ্ছে না অযোধ্যায় রামমন্দিরে রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা। সেই কারণে যাচ্ছেন না দেশের চার শঙ্করাচর্য। এই বিষয় নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল তৃণমূল। রবিবার, তৃণমূল (TMC) ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে এক প্রশ্নের জবাবে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) জানান, রামমন্দির যে ধর্মীয় রীতি মেনে হচ্ছে না, সেটা তৃণমূল না বলছেন দেশের শঙ্করাচার্যরা। লোকসভা ভোটকে সামনে রেখেই রামকে নির্বাচনী এজেন্টের মতো ব্যবহার করছে বিজেপি- তীব্র আক্রমণ করেন কুণাল।

২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় (Ayodhya) উদ্বোধন হবে রামমন্দিরের। সনাতন ধর্মের নিয়ম লঙ্ঘিত হচ্ছে! সেই কারণে রামমন্দির উদ্বোধনে (Ram Mandir Inauguration) থাকবেন না ৪ শঙ্করাচার্য (Shankaracharya)। সেই দিন রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠার সাক্ষী হিসেবে শঙ্করাচার্যদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু তাঁরা সেটা প্রত্যাখ্যান করেন। উত্তরাখণ্ডের জ্যোতিষপীঠের শঙ্করাচার্য স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী জানিয়েছেন, চার শংকরাচার্য সেদিন উপস্থিত থাকবেন না কেননা সনাতন ধর্মের নিয়ম লঙ্ঘিত হচ্ছে এই অনুষ্ঠানে। মন্দির পুরোপুরি তৈরি না করেই রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা একেবারেই শাস্ত্র বিরুদ্ধ। পুরীর গোবর্ধনপীঠের শংকরাচার্য স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতীর অভিযোগ, “মোদি সরকারের এই প্রচেষ্টা আসলে কোনও পবিত্র মন্দির নয়, এক সমাধিকে ঘিরে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মন্দির উদ্বোধন করবেন। তিনি বিগ্রহ স্পর্শও করবেন। তাহলে আমি সেখানে গিয়ে কী করব? হাততালি দেব? আমার পদেরও মর্যাদা আছে”।

এই সব মন্তব্যকে হাতিয়ার করেই তৃণমূল মুখপাত্র (Kunal Ghosh) বলেন, দলনেত্রী বার্তা স্পষ্ট। তিনি বলেন, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। কুণালের কথায়, রামচন্দ্রকে অনেকে ঈশ্বর মনে করে পুজো করেন। তাতে তো কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু ভোটের দিকে নজর রেখে রাজনীতিতে রামচন্দ্রকে অপব্যবহার করছে বিজেপি- তীব্র আক্রমণ কুণালের। তাঁর কথায়, ভোটের আগে নির্বাচনী এজেন্ট হিসেবে রামচন্দ্রকে ব্যবহার করেছে গেরুয়া শিবির।

এরপরেই পুরীর শঙ্কারাচার্যের কথা উল্লেখ করে কুণাল বলেন, স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী বলেছেন ধর্মের কথা। শঙ্কারাচার্যের মতে, অসমাপ্ত মন্দিরে প্রাণ প্রতিষ্ঠা শাস্ত্র বিরুদ্ধ। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, প্রাণ প্রতিষ্ঠা কে করবেন? কোনও পুরোহিত, সেবাইত? না হলে, কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তি প্রাণ প্রতিষ্ঠা করলে সেটা ধর্মীয় আচার নয়।

এরপরেই তোপ দেগে কুণাল প্রশ্ন তোলেন, মোদি কি শঙ্কারাচার্যের থেকে বড় হিন্দু? নাড্ডা কি শঙ্কারাচার্যের থেকে বেশি ধর্ম জানেন? তৃণমূলের অভিযোগ, হিন্দুত্বকে নিয়ে রাজনীতির ব্যবসা করছেন নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ, জেপি নাড্ডারা। শঙ্করাচার্যরা যেখানে বলেছেন, ধর্মীয় রীতি মোনে প্রাণ প্রতিষ্ঠা হচ্ছে না, তাঁরা এটি অনুমোদন করছেন না- সেখানে আর কী বলার আছে!

Previous articleআলিপুর জেল মিউজিয়ামে ভিনটেজ কার-বাইক দেখতে উপচে পড়ল ভিড়
Next articleরাহুলের যাত্রা শুরুর দিনেই ছন্দপতন! ‘হাত’ ছেড়ে শিন্ডে গোষ্ঠীর শিবসেনায় প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী