নেতাই গণহত্যায় অভিযুক্ত সিপিএম নেতার জামিন, কেন্দ্রীয় সংস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন

নেতাই গণহত্যায় একযুগ পরেও কেন বিচার পাচ্ছেন না শহীদ পরিবারগুলি, জনস্বার্থ মামলাকারীর আইনজীবী সোমবারের জামিনের পর সিবিআই-এর দিকে এই প্রশ্নই তোলেন।

সিবিআই তদন্ত চলাকালীন হাইকোর্টে জামিন পেলেন লালগড়ের নেতাই গণহত্যা মামলার অন্যতম অভিযুক্ত সিপিআইএম নেতা রথীন দণ্ডপাট। প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ এবং সাক্ষ্যগ্রহণের প্রক্রিয়া ‘অনেকটাই’ হয়ে যাওয়ায় তাঁর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি ও বিচারপতি পার্থসারথি সেনের ডিভিশন বেঞ্চ। নেতাই গণহত্যায় একযুগ পরেও কেন বিচার পাচ্ছেন না শহীদ পরিবারগুলি, জনস্বার্থ মামলাকারীর আইনজীবী সোমবারের জামিনের পর সিবিআই-এর দিকে এই প্রশ্নই তোলেন। অন্যদিকে লোকসভা ভোটের আগে এলাকার প্রভাবশালী সিপিআইএম নেতার জামিন হওয়ায় সিবিআই-এর তদন্ত ও তাদের সঙ্গে সিপিআইএম-এর সম্পর্ক নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।

২০১১ সালে নেতাইগ্রামে মিছিলে যোগ দেওয়া গ্রামবাসীর ওপর যে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছিল তা সিপিআইএম নেতা রথীন দণ্ডপাটের বাড়ির ছাদ থেকেই করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। এই ঘটনার তদন্ত শুরু করে সিআইডি। পরে হাইকোর্টের নির্দেশেই মামলা যায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের হাতে। ঘটনায় ২০ জন গ্রেফতার হয়েছে। তার মধ্যে ২০২৩ সালে ফেব্রুয়ারির মধ্যেই জামিন পান তিনজন, যার মধ্যে একমাত্র ধৃত মহিলা ফুল্লরা মণ্ডলও রয়েছেন।

সিবিআই তদন্ত শুরু করার পরও এত বছরে ৪২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ বাকি রয়েছে। বিচারের অপেক্ষায় নয় শহিদ ও আহতদের পরিবার। তারই মধ্যে রথীন দণ্ডপাটের জামিন যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। যদি তথ্যসংগ্রহের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে থাকে এবং সাক্ষ্যগ্রহণের প্রক্রিয়াও যথেষ্ট হয়ে গিয়ে থাকে, তবে কেন এত বছরে বিচার পাচ্ছেন না শহিদ পরিবার। সরাসরি সিবিআইয়ের ‘অপদার্থতা’ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মামলাকারীর আইনজীবী।

নেতাই গণহত্যার পর থেকেই শহিদ পরিবারগুলির পাশে বর্তমান রাজ্য সরকার। তাঁদের জন্য বিচারের প্রক্রিয়ায় সক্রিয় ভূমিকা নেওয়া হয়েছে সরকারের তরফে। সোমবারের জামিনের পর সিবিআইয়ের রাজনৈতিক সক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মামলাকারীর আইনজীবী। পাশাপাশি তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের দাবি, আদালত যখন জামিন দিয়েছে তখন প্রথমেই দেখার সিবিআই জামিনের বিরোধিতা করছে কি না। যদি সিবিআই জামিনের বিরোধিতায় আদালতে না যায় তাহলে আদৌ সিবিআই কী চাইছে, সিপিআইএম নেতারা জামিন পেয়ে যাক, যাতে তাঁদের সাংগঠনিক সুবিধা হয়। সেখানেই ধারণা করতে হবে কাদের সঙ্গে কাদের ‘সম্পর্ক’ কেমন।