Monday, November 17, 2025

অযোধ্যায় ‘অশাস্ত্রীয়’ প্রাণ প্রতিষ্ঠা: শঙ্করাচার্যদের পাশাপাশি সরব নির্মোহী আখড়াও

Date:

অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধন ও প্রাণ প্রতিষ্ঠা ইস্যুতে শঙ্করাচার্যদের কোপের মুখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সনাতন রীতি না মেনে এই ধরণের আচরণের বিরুদ্ধে সরব হয়ে পুরীর শঙ্করাচার্য জানিয়েছেন, রাম মন্দির ঘিরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আচরণ ‘উন্মাদের লক্ষণ’। শঙ্করাচার্যদের পাশাপাশি এই ইস্যুতে সরব হল নির্মোহী আখড়াও।

অযোধ্যায় আগামী ২২ জানুয়ারি রাম মন্দিরের উদ্বোধনে তিনি যাবেন না বলে জানিয়েছেন দেশের ৪ শঙ্করাচার্য। তাঁদের মধ্যেই উল্লেখযোগ্য পুরীর শঙ্করাচার্য স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী দু’দিন আগেই অভিযোগ করেছিলেন, রাম মন্দির ঘিরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আচরণ ‘উন্মাদের লক্ষণ’।পাল্টা বিজেপির তরফে অভিযোগ করা হয়েছিল, কংগ্রেসের সুরে কথা বলছেন শঙ্করাচার্য। গঙ্গাসাগরে সোমবার তার জবাবে আবার শঙ্করাচার্য বলেছেন, “কংগ্রেসের আমলে আমি যখন কিছু বলতাম, তখন কি জনসঙ্ঘের হয়ে বলতাম? আমার সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক দলের যোগ নেই। এটা মোদি, যোগী, সোনিয়া প্রত্যেকে জানেন।” এছাড়াও, গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজন নিয়ে বাংলার রাজ্য সরকারের অবশ্য প্রশংসাই করেছেন পুরীর শঙ্করাচার্য নিশ্চলানন্দ। তিনি বলেন, “গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজনে বাংলার সরকার বোধ বুদ্ধির পরিচয় দিয়েছে। বাংলার সরকার সীমার মধ্যে থেকে এই মেলার কাজ করেছে। অযথা হস্তক্ষেপ করে মেলার মর্যাদা বিকৃত করার চেষ্টা হয়নি। পরম্পরা মেনেই মেলা হয়েছে।”

বিজেপির দিক থেকে তাঁর প্রতি যে আক্রমণ এসেছে, তার প্রেক্ষিতে গঙ্গাসাগরে শঙ্করাচার্য বলেছেন, “যার কথায় লোভ, ভয় এবং উদ্বেগ থাকে, তার কথার কোনও প্রভাব পড়ে না। আমার কথায় লোভ, ভয় এবং উদ্বেগ নেই। তাই আমার কথার প্রভাব পড়ে। ক্ষমতার পরিবর্তন হয়।” তাঁর দাবি, “অতীতে আমার সঙ্গে যাঁরা টক্কর নিয়েছেন, তাঁরা চুরমার হয়ে গিয়েছেন!” এই প্রসঙ্গে পি ভি নরসিংহ রাও, জ্যোতি বসু, মুলায়ম সিং যাদব এবং লালুপ্রসাদ যাদবের উদাহরণ টেনে ধর্মগুরুর দাবি, “এঁরা আমার সঙ্গে টক্কর নিয়েছিলেন। আমাকে কিছু করতে হয়নি। এঁরা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে গিয়েছেন।” তাঁর এই মন্তব্যের মধ্যে বিজেপির প্রতিই প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি আছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক শিবিরের একাংশ।

এদিকে শঙ্করাচার্যদের পাশাপাশি নির্মোহী আখড়াও অভিযোগ করেছে, রামলালার ‘প্রাণ প্রতিষ্ঠা’য় ‘রামানন্দী’ সনাতন ঐতিহ্য মানা হচ্ছে না। তাদের দাবি, রামলালার ‘প্রাণ প্রতিষ্ঠা’য় তাদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন রামমন্দির কর্তৃপক্ষ। রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলায় অন্যতম মামলকারী ছিল নির্মোহী আখড়া। অযোধ্যায় নির্মোহী আখড়ার এক পদস্থ কর্মকর্তার মতে, রামলালার ‘প্রাণ প্রতিষ্ঠা’য় ৫০০ বছরের যে ঐতিহ্য, তা মানা হচ্ছে না। তাঁর বক্তব্য, “রামলালার পুজো চিরকাল রামানন্দীর ঐতিহ্য মেনে হয়ে এসেছে। কিন্তু শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্রে ট্রাস্ট এ বার একটি মিশ্র ঐতিহ্য অনুসরণ করছে। এটা একে বারেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা বলেছিলাম, প্রথা মেনে রামলালার ‘প্রাণ প্রতিষ্ঠা’ হোক। কিন্তু আমাদের বক্তব্যকে উপেক্ষাই করা হয়েছে।”

Related articles

ঝাড়খণ্ডের দুমকায় বিধবাকে পুড়িয়ে খুন! প্রেমিক গ্রেফতার, পলাতক স্ত্রী

ঝাড়খণ্ডের দুমকা জেলায় নৃশংস হত্যাকাণ্ড! শিকারিপাড়া থানা এলাকার সীতাশাল গ্রামে তিন বছরের সম্পর্কে থাকার পর ২১ বছরের বিধবা...

অসাংবিধানিক মন্তব্য! রাজ্যপালকে ধুয়ে দিলেন কল্যাণ, দিলেন পাল্টা চ্যালেঞ্জ

চূড়ান্ত অসাংবিধানিক এবং কুরুচিকর মন্তব্য বিজেপির ‘দলদাস’ রাজ্যপাল বোসের! একজন রাজ্যপাল কীভাবে এমন কুরুচিকর মন্তব্য করতে পারেন? শ্রীরামপুরের...

ডিসেম্বরের মধ্যেই সম্পন্ন হবে শিক্ষক নিয়োগ, মঙ্গলবার শুরু এসএসসির ইন্টারভিউ 

স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) ইতিমধ্যেই প্রকাশ করেছে প্রায় ২০ হাজার নামের প্রার্থী তালিকা। আগামীকাল, ১৮ নভেম্বর থেকে শুরু...

অবাস্তব কাজের চাপ: বাংলার পর কেরল, আত্মঘাতী BLO, কাঠগড়ায় কমিশন

দেশের ১২ টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এক অবাস্তব পদ্ধতিতে এসআইআর প্রক্রিয়া চালু করেছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন (Election...
Exit mobile version