অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধন নিয়ে মেতে রয়েছে কেন্দ্রের মোদি সরকার। বিষয়টিকে লোকসভা ভোটের আগে রীতিমতো গিমিকের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে গেরুয়া শিবির। ২২ জানুয়ারি রাম মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকার অর্ধ দিবস ছুটিও ঘোষণা করে দিয়েছে। কিন্তু বনবাসের কষ্ট তো একা রামই ভোগ করেননি, ভোগ করেছিলেন সীতাও। তাঁর অপহরণ নিয়েই তো ‘রামায়ণে’ কাহিনীর মোড় ঘুরেছে। অযোধ্যার (Ayodhya) এই বিপুল সমারোহের মধ্যে তিনি কোথায়? উত্তরপ্রদেশেরই আরেকটি জায়গা বিঠুর। সেখানে রয়েছে সীতার পাতাল প্রবেশের কুণ্ড। অথচ হিন্দু ধর্মের ধ্বজাধারী বিজেপির কাছে তা একেবারেই উপেক্ষিত। রাম মন্দির উদ্বোধনের ৪৮ ঘণ্টা আগে তৃণমূল (TMC) মুখপাত্র কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) চিত্রনাট্যে তৈরি ‘সীতাকুণ্ড’ সামাজিক মাধ্যমে মুক্তি পাচ্ছে শনিবার। তথ্যচিত্রটির পরিচালনা করেছেন বিদ্যুৎ রায়। প্রায় সম্পূর্ণ তথ্যচিত্রটি কানপুরের কাছেই বিঠুরে ক্যামেরাবন্দি করেছেন দেবস্মিত মুখোপাধ্যায়।

কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) জানান, ‘‘বিঠুরেই সীতার পাতালপ্রবেশ ঘটে। এখনও সেখানকার ঘরে ঘরে মা সীতার পুজো হয়।’’ তাহলে কি এটা রামমন্দিরের পাল্টা? উত্তরে তৃণমূল মুখপাত্র জানান, ‘‘রাম নিয়ে যখন এত হইচই, এত বিপুল অর্থ খরচ হচ্ছে, তখন সীতার বিষয়টিও সবার জানা উচিত।’’

ইতিহাস বলছে, কানপুরের কাছে বিঠুরে ছিল গভীর অরণ্য। মহাকাব্য অনুযায়ী, সেখানেই ছিল বাল্মিকীর আশ্রম। কথিত আছে, রাজা রামের আদেশেই ভাই লক্ষ্মণ সেই ঘন জঙ্গলে অন্তঃসত্ত্বা সীতাকে একা ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন। সীতা কোনওক্রমে পৌঁছন বাল্মিকীর আশ্রমে। ওই আশ্রমেই জন্ম নেয় লব-কুশ। সেখানেই এক কুণ্ড রয়েছে। তৃতীয়বার তাঁর চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পরে যেখানে নাকি সীতা আত্মহনন করেন। ৩৫ মিনিটের তথ্যচিত্রে সীতার যন্ত্রণাময় জীবনের অনেকটাই ফুটে উঠবে বলে জানিয়েছেন কুণাল। একইসঙ্গে কেন সীতাও উপেক্ষিত- এই তথ্যচিত্র তুলে ধরবে সেই প্রশ্নও।
