মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা যাতে নির্বিঘ্নে ও ভয়মুক্তভাবে দিতে পারে রাজ্যের পরীক্ষার্থীরা, তার প্রস্তুতি শুরু করে দিল প্রশাসন। পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের পৌঁছানোর বিভিন্ন ব্যবস্থার পাশাপাশি পরীক্ষাকেন্দ্রে তল্লাশি ও নজরদারি নিয়ে নির্দিষ্ট নিয়ম সংক্রান্ত বৈঠক করলেন মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকা। সেই সঙ্গে পরিবহন দফতরের বিশেষ বৈঠক করলেন পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীও। এবছর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক – দুই পরীক্ষার শুরুর সময় এগিয়ে আনা হলেও যাতে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে কোনও বিভ্রান্তি না তৈরি হয়, তা নিয়ে নেওয়া হয়েছে একাধিক পরিকল্পনা।

শনিবার নবান্নে শিক্ষা দফতর এবং পুলিশ, বিদ্যুৎ ও পরিবহণ দফতরের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব (Chief Secretary) ভগবতী প্রসাদ গোপালিকা। পরীক্ষায় সময়ে জেলা ও মফস্বলে বিদ্যুতের সরবরাহে কোনও ব্যঘাত যাতে না ঘটে বিদ্যুত দফতরকে তা দেখতে বলা হয়েছে। হাতি কবলিত জঙ্গলমহল বা উত্তরের জেলাগুলিতে পরীক্ষার সময় গত বছরের মতো পর্যাপ্ত ড্রপগেট, বনকর্মী ও হুলাপার্টি বহাল রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। পরীক্ষাকেন্দ্রের নিরাপত্তা ও প্রশ্নপত্র ফাঁস বা অন্য়ান্য অপ্রীতিকর ঘটনা আটকানোর দায়িত্ব পুলিশের। পরীক্ষা কেন্দ্রে বিশেষ করে মূল গেটের মুখে সিসিটিভি (CCTV) ক্যামেরা বসাতে হবে। তা মনিটর করবেন কোনও পুলিশ কর্মী। সিভিক ভলান্টিয়ারকে দিয়ে যেন তা করানো না হয়।
তবে পরীক্ষার্থীদের ব্যাগ, পকেট বা শরীরে হাত দিয়ে পরীক্ষা করতে পারবেন না পুলিশকর্মীরা। পরীক্ষা শুরুর আগে এতে তাঁদের মনে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। পরীক্ষার্থীরা কেউ অপরাধী নয় যে পুলিশকে দিয়ে তল্লাশি করাতে হবে। কোনও পরীক্ষার্থী মোবাইল বা কোনও ইলেকট্রনিক গেজেট নিয়ে ঢুকছে কিনা পরীক্ষাকেন্দ্রে নিযুক্ত শিক্ষকেরাই তা পরীক্ষা করে দেখবেন। পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষার্থীরা বাবা-মা কিংবা কোনও অভিভাবককে নিয়ে ঢুকতে পারবেন না।

তবে মাধ্যমিক পরীক্ষা সকাল ৯.৪৫ থেকে ও উচ্চমাধ্যমিক ১১.৪৫ থেকে শুরু হওয়ার নির্দেশিকার পর অনেক ক্ষেত্রে যাতায়াতের বিষয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে। সেই সন্দেহ দূর করতে রাজ্য সরকার জানিয়েছে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও মাদ্রাসা পরীক্ষার দিন ভোর ৫টা থেকে বাস চালানো হবে। মাধ্যমিক,উচ্চ মাধ্যমিক, মাদ্রাসা পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে শনিবার পরিবহণ দফতরের ময়দান তাঁবুতে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ, উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ ও মাদ্রাসা বোর্ডের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী (transport minister) স্নেহাশিস চক্রবর্তী। রাজ্যের তরফে রেলকে চিঠি দিয়ে জানানো হচ্ছে, পরীক্ষার দিনগুলিতে যেন পূর্ব, দক্ষিণ পূর্ব রেল এবং উত্তর- পূর্ব সীমান্ত রেল যেন বাড়তি ট্রেন চালানো হয়। পাশাপাশি অতিরিক্ত সরকারি বাস এবং ফেরিই নয়, অন্যান্য বেসরকারি পরিবহণকেও সকাল থেকে রাস্তায় থাকার জন্যও বলা হয়েছে।
