জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ এর উদ্যোগে হাঁস খুনের দোষীকে ধরতে মৃত হাঁসের মৃতদেহ গেলো কলকাতায়।
হাঁসগুলি সোনার ডিমও দিত না। নিখাদ পাতিহাঁস। ন্যায় পাওয়ার জেদে হতে পারে হাঁসের ময়নাতদন্ত। গপ্প নয়! এক্কেবারে সত্যি।

চুঁচুড়ার সিংহীবাগানের বাসিন্দা ইতি বিশ্বাস। স্বামী হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ভুগছেন। একমাত্র ছেলের ব্লাড ক্যান্সার। তাকে নিয়ে তাঁর অমানুষিক লড়াই নিত্যদিনের। অনটনের সংসার চলে ঝালমুড়ি বিক্রির টাকায়। ১০টি হাঁস তাঁর পোষ্য। সেগুলিই তাঁর সংসারের সুস্থ সদস্য। সরল চোখ আর ভরাট গড়নের সেই হাঁসগুলি যেমন প্রিয় তেমনই আয়ের উৎসও বটে। হঠাৎই শনিবার গৃহবধূ দেখেন, তিনটি হাঁসগুলি কাতরাচ্ছে। দেখেন একটি মুড়ির ঠোঙা পড়ে আছে হাঁসের ঘরের সামনে। সন্দেহ হওয়ায় শুঁকে দেখেন ইতিদেবী। বিষজাতীয় কিছু মেশানো হয়েছে বলেই ধরে নেন তিনি। রবিবার সকালে দেখতে পান তিনটি হাঁস মরে গিয়েছে। ‘হাঁসের হোমিসাইড’এর দাবি নিয়ে সটান পৌঁছে যান থানায়। থানা থেকে জানানো হয় আগে ময়নাতদন্ত করিয়ে আনুন। কোনও কালে এমন কথা শোনেননি ইতিদেবী। সোমবার চুঁচুড়ার পশু হাসপাতালে চলে যান তিনি।

সেখানেও সহজ হয়নি লড়াই। কিন্তু ছাড়বেন কেন সিংহীবাগানের সিংহী।বহুবার আর্জির পর ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশের আবেদন সহ বুধবার ফের হাঁসগুলি নিয়ে আসার কথা জানানো হয়। কিন্তু তাকে এটাও জানানো হয় জেলা প্রশাসনের কাছে এই ময়নাতদন্ত করার ব্যাবস্থা নেই। এরপর এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেন হুগলি জেলা পরিষদের প্রাণী সম্পদ দফতরের কর্মাধ্যক্ষ নির্মাল্য চক্রবর্তী। নির্মাল্য চক্রবর্তী বলেন, ওই মহিলার পরিবার যাতে স্বনির্ভর হতে পারে সেই কারণে তার দফতর থেকেই হাঁসগুলো দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি এদিন জানতে পারেন বিষয়টি। এরপর তিনি নিজে উদ্যোগ নিয়ে ওই মহিলার আর্জি মেনে পুলিশ প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে মৃত হাঁসগুলিকে কোলকাতা ফরেনসিক ডিপার্টমেন্টে পাঠিয়েছেন যাতে হাঁসগুলোর ময়নাতদন্ত হয়। নির্মাল্য বাবু এও বলেন মহিলার অভিযোগ অনুযায়ী কেউ যদি হাঁসগুলো বিষ খাইয়ে মেরে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যাবস্থা নেওয়ার ব্যাবস্থা করা হবে।

আরও পড়ুন- বালি খাদান নীতির সাফল্য, রাজস্ব আদায়ে নজির রাজ্যের
