প্রাথমিকের ২০২২ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর থেকে স্থগিতাদেশ তুলে নিল সুপ্রিম কোর্ট।সোমবার সুপ্রিম কোর্ট জানাল, নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করতে পারবে রাজ্য।এমনকী প্যানেল প্রকাশেও আর বাধা থাকল না।বিচারপতি হিমা কোহলি, বিচারপতি আসানুদ্দিন আমানুল্লাহের বেঞ্চ কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশকে মান্যতা দিল।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ১২ হাজার শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। প্রথম বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যাঁরা ডিএলএডের প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন, তাঁরাও নিয়োগে অংশ নিতে পারবেন। পর্ষদের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে মামলা দায়ের হয়। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় পর্ষদের সিদ্ধান্তেই মান্যতা দেন।এরপর ওই বছর ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।কিন্তু ২০২৩ সালের এপ্রিলে হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ পর্ষদের ওই বিজ্ঞপ্তি খারিজ করে দেয়।

রাজ্যের শিক্ষা দফতর বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, জাতীয় শিক্ষক শিক্ষণ পর্ষদ (এনসিটিই) নিয়ম অনুযায়ী, শিক্ষক হতে গেলে ন্যূনতম শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণ থাকতে হবে। এই যুক্তি তুলে ধরে দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, প্রশিক্ষণরত প্রার্থীরা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন না। শিক্ষক হতে গেলে প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ করতে হবে।যদিও মামলাকারীদের আইনজীবীর যুক্তি ছিল, ২০২০-২২ শিক্ষাবর্ষের প্রার্থীদের দু’বছরের কোর্স সম্পূর্ণ হবে ২০২২ সালের জুন মাসে এবং ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর ডিএলএড প্রশিক্ষণের শংসাপত্র দেওয়া হবে। ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে ওই বছরেই ২১ অক্টোবর নতুন আরেকটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পর্ষদ। সেখানে তারা জানায়, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে শিক্ষক নিয়োগের জন্য ইন্টারভিউ নেওয়া হবে। ওই ইন্টারভিউতে শুধুমাত্র ডিএলএড উত্তীর্ণরা সুযোগ পাবেন। এর পরেই সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ খারিজ করে দেয় ডিভিশন বেঞ্চ। দুই বিচারপতির বেঞ্চ পর্ষদের ২০২২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বরের বিজ্ঞপ্তিও বাতিল করে দেয়।

সেই রায়ের বিরুদ্ধেই সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়। ২০২৩ সালের ২৮ জুলাই বিচারপতি হিমা কোহলি এবং বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের বেঞ্চ জানায়, আদালত নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পর্ষদ কোনও মেধাতালিকা প্রকাশ করতে পারবে না। তার পর থেকে মামলাটির শুনানি একাধিক বার পিছিয়ে গিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ জানায়, প্রাথমিক শিক্ষক পদে ১১ হাজার ৭৬৫ শূন্যপদ রয়েছে। রাজ্য প্রশাসনও প্যানেল প্রকাশ করে দ্রুত নিয়োগ করতে চাইছে। তার পরেই সোমবার নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর থেকে স্থগিতাদেশ তুলে নিল দেশের শীর্ষ আদালত।এবার দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করতে রাজ্যের আর কোনও বাধা থাকল না।
