Sunday, August 24, 2025

মগরাহাটে পূর্ব পুরুষের তৈরি স্কুলের মেধাবী-অভাবী ৫ পড়ুয়াকে বাবার নামাঙ্কিত স্কলারশিপ কুণালের

Date:

তাঁর ঠাকুরদাদা ডাঃ মনমোহন ঘোষের বাবা রজনীকান্ত ঘোষ একটি স্কুল স্থাপন করেছিলেন তাঁর গ্রাম দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার মগরাহাটের (Magrahat) মাইতির হাটে। এলাকার প্রথম স্কুল ছিল সেটি। পরে স্কুলটি বড় হয়, সরকার অধিগ্রহণ করে, নাম বেণীপুর হাইস্কুল। আজও তার একটি অংশে রজনীকান্ত ঘোষের নাম লেখা আছে। বুধবার সেই স্কুলের ৭৫ তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে একটি অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক তথা রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)।

আবেগ, অনুভূতি, নস্টালজিয়াতে ভরপুর এদিনের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে উঠে কুণাল ঘোষ বলেন, “এত সুন্দর পরিবেশে এই স্কুল এগোচ্ছে, এভাবেই চলতে থাকুক। কয়েক দশকের ঐতিহ্য নিয়ে এই স্কুল এগিয়ে চলেছে। বিধায়ক নমিতা সাহাও বললেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিনামূল্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য পরিষেবা দিচ্ছেন রাজ্যবাসীকে। তাই ছাত্রছাত্রীরা শুধু মন দিয়ে পড়াশুনা করে যাও। তোমাদের অভিভাবকদের চাপ কমিয়ে দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। স্কুলছুট আটকে গিয়েছে। কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী হয়েছে।”

স্কুল সম্পর্কে বলতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন কুণাল। বলেন, “এখানে এসে ভালো লাগছে। এটা আমার পুরনো ভিটে। এই গ্রামে আমাদের পূর্ব পুরুষরা থাকতেন। এই স্কুল আমার দাদুর বাবা রজনীকান্ত ঘোষের হাত দিয়ে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। পরে তা সরকার অধিগ্রহণ করে।”

এরপরই কুণাল স্কুলের পড়ুয়া থেকে অভিভাবক, শিক্ষক – শিক্ষিকাদের হৃদয় জয় করে নেন। তিনি বলেন, “প্রধান শিক্ষক প্রদীপবাবু কয়েকটি সমস্যার কথা বলেছেন। তার মধ্যে অন্যতম কো-এডুকেশন স্কুলে ছাত্র ও ছাত্রীদের পৃথক শৌচালয় দরকার। সরকারকে বলে হোক বা অন্য কোনও জায়গা থেকে এক মাসের মধ্যে দুটি শৌচালয়ের টাকা পেয়ে যাবে স্কুল কর্তৃপক্ষ। আমি সেই দায়িত্ব নিলাম। এছাড়া ৫ জন মেধাবী পড়ুয়া, কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে যারা অভাবী, তাদের জন্য পিতা কল্যাণ ঘোষের নামে একটি স্কলারশিপ চালু করেছি। সেখানে ওদের নাম অন্তর্ভুক্ত করবো।”

ছাত্র ছাত্রীদের উদ্দেশে একটি বার্তাও দেন কুণাল। বলেন, “বাংলার মাটির ঐতিহ্য আছে, ইতিহাস আছে। ছোটরা মনে রেখো ধর্ম যার যার উৎসব সবার। রাজনীতি হোক রটি, কাপরা, মকানের। ধর্মের নামে যারা বিভেদের রাজনীতি করছে তাদের সঙ্গে থেকো না, যাঁরা তোমাদের মা-বাবাদের পাশে আছে, তাঁদের সঙ্গে থাকার শপথ নাও। ধর্মের নামে রাজনীতি করছে, এমন বিষধর সাপ যেখানে দেখবেন, তাদের উপরে ফেলে দিতে হবে।” সব শেষে মঞ্চে দাঁড়িয়ে ছাত্রছাত্রী নিয়ে দেশাত্মবোধক গান করেন কুণাল।

এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক (হাই স্কুল) প্রদীপ কুণ্ডু, জিয়াউল হক (প্রাথমিক বিদ্যালয়), বিধায়ক নমিতা সাহা, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রুনা ইয়াসমিন, মগরাহাট থানার আইসি আসাদুল শেখ, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ইউনুস আলী মল্লিক, জেলা পরিষদের সদস্য অনুপ কুমার বৈরাগী, বিশ্বনাথ সরদার (সমাজসেবী, গোকর্নি অঞ্চল সভাপতি, তৃণমূল), বাচ্চু শেখ প্রমুখ।

Related articles

ধর্ষিত মূক- বধির-বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন কিশোরীর পাশে নেই যোগী সরকার!

যোগীরাজ্যে(Yogi Adityanath) মূক ও বধির বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন কিশোরীর(Disabled Girl) নৃশংস ধর্ষণ (Brutal Rape)। পাশে দাঁড়ায়নি সরকার। ফলে মেয়েকে...

পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ‘শ্রমশ্রী’ প্রকল্পে নাম নথিভুক্তি শুরু

পরিযায়ী শ্রমিকদের সুবিধার্থে এবার আরও এক পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের। ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচির আওতায় দুয়ারে সরকার শিবিরেও...

‘নিখুঁত ভুলগুলি’, উৎপল সিনহার কলম

একটা দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান হয়ে ওঠে ...একটি দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান...

ষোলতেই ১৩০ কেজি! ছেলের খাবার জোগাতেই নাজেহাল বাবা-মা

মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি থানার কাবিলপুর পঞ্চায়েতের মথুরাপুর গ্রাম। এখানেই থাকেন দিনমজুর মুনশাদ আলি। তাঁর ছোট ছেলে জিশান আলি...
Exit mobile version