শান্তিপূর্ণ সন্দেশখালিতে বিজেপির ‘সস্তার রাজনীতি’, তীব্র কটাক্ষ কুণালের

একদিকে ড্রোন উড়িয়ে, অন্যদিকে পুলিশ ও ব়্যাফের যৌথ বাহিনী গ্রামে টহল দিয়ে পরিস্থিতির ওপর নজর রাখে। তবে তারই মধ্যে বিজেপির প্রতিনিধিদল জোর করে এলাকায় ঢুকতে চেয়ে দীর্ঘক্ষণ অশান্ত করে রাখে এলাকার সীমানা

প্রায় ৪৮ ঘণ্টা অশান্ত থাকার পর শনিবার সকাল থেকে গোটা এলাকায় জারি ১৪৪ ধারা। একদিকে ড্রোন উড়িয়ে, অন্যদিকে পুলিশ ও ব়্যাফের যৌথ বাহিনী গ্রামে টহল দিয়ে পরিস্থিতির ওপর নজর রাখে। তবে তারই মধ্যে বিজেপির প্রতিনিধিদল জোর করে এলাকায় ঢুকতে চেয়ে দীর্ঘক্ষণ অশান্ত করে রাখে এলাকার সীমানা। তবে পুলিশ শান্ত ও তৎপরতার সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখে। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির সন্দেশখালি যাওয়ার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি দাবি করেন, সন্দেশখালিতে ‘মানুষের ক্ষতির বিনিময়ে সস্তার রাজনীতি করে নিজেদের জমি শক্ত করতে চাইছে বিজেপি’।

শুক্রবার রাত থেকেই রাজ্য ও জেলার উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তারা সন্দেশখালির পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় পৌঁছে যান। দফায় দফায় নজরদারির পাশাপাশি অশান্তির অভিযোগে অভিযুক্তদের গ্রেফতারেও তৎপর হয় পুলিশ। ঘটনাস্থলে পৌঁছান সিদ্ধিনাথ গুপ্তা, ডিজিপি, স্টেট ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো। গণ্ডগোল বাধানোর জন্য ১৪ জনকে আটক করা হয়। অন্যদিকে সিদ্ধিনাথ গুপ্তা জানান, গোটা এলাকায় ঘুরে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা হচ্ছে যাতে কেউ গণ্ডগোল না করেন বা গণ্ডগোলে ইন্ধন না দেন। যেখান থেকে যা অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে তার আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

এরই মধ্যে শনিবার দুপুরে গ্রামে ঢোকার চেষ্টা করেন অর্চনা মজুমদার, তাপস ঘোষ সহ বিজেপি নেতাকর্মীদের ২৫ জনের একটি দল। স্বাভাবিকভাবেই ১৪৪ ধারা জারি থাকায় তাঁদের গ্রামে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বিজেপির এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে কুণাল ঘোষের দাবি, পুলিশের চেষ্টায় শান্তি ফিরতে শুরু করেছে এলাকায়। বিজেপি চায় এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠা না হোক। গণ্ডগোলও তাঁরাই বাঁধিয়ে রাখতে চান বলে অভিযোগ করেন তিনি। সেই সঙ্গে স্মরণ করিয়ে দেন বিজেপি শাসিত রাজ্যে মানুষের ওপর অত্যাচারের ঘটনায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে তৃণমূলের প্রতিনিধিদল গেলে তাঁদের বিমানবন্দর থেকে মেরে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।

শনিবারই তৃণমূলের দলীয় সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। যেখানে জানানো হয় অভিযুক্ত উত্তম সর্দারকে ছয় বছরের জন্য বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল। সেই প্রসঙ্গেই কুণাল ঘোষ জানান, তৃণমূলের কাছে দলীয়ভাবে যে অভিযোগ এসেছিল সেই অনুযায়ী তদন্ত কমিটি তাদের পর্যবেক্ষণ জানায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে উত্তমকে বরখাস্ত করা হয়।

আবার বিজেপি প্রতিনিধিদল ফিরে যাওয়ার পরই সন্দেশখালি যেতে চেষ্টা করেন কামদুনির টুম্পা কয়াল ও মৌসুমি কয়াল। ঘোলা জলে মাছ ধরতে বিজেপির ইন্ধনে যে তাঁরাও তৎপর, তা এই ঘটনাতেই প্রমাণিত। যদিও সন্দেশখালিতে অশান্তি ছড়ানোর জন্য মূলত সিপিআইএম-কেই দায়ী করেন তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র। তিনি বলেন, এই এলাকায় নির্বাচনে ক্ষমতায় এসেছে বামেরা। সেই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের কোনও নেতার আচরণে খুঁত ছিল। সেখানেই ইন্ধন দিয়েছে সিপিআইএম। ব্যক্তিকেন্দ্রিক বিক্ষোভের ওপর ইন্ধনে সিপিআইএমের পাশাপাশি বিজেপিকেও দায়ী করেন কুণাল ঘোষ।

Previous articleদলের থেকে কি আশা করেন রোহিত? ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তৃতীয় টেস্টে নামার আগে জানালেন ভারত অধিনায়ক
Next articleপাকিস্তানে একাই সেঞ্চুরি ইমরানের, সরকার গড়তে একজোট নওয়াজ-বিলাওয়াল