রাজ্য বাজেটে নাস্তানাবুদ, শনিবারও ওয়াকআউট বিজেপি বিধায়কদের

বিজেপি বিধায়করা রাজ্যের প্রস্তাবিত প্রকল্প ও অর্থের সংস্থান নিয়ে যে প্রশ্নই তোলেন, তার জবাবে বিজেপি বিধায়কদের কার্যত তুলে বাউন্ডারির ওপারে পাঠিয়ে দেন অর্থমন্ত্রী ও তৃণমূলের অন্য বিধায়করা।

রাজ্য বাজেটে সাধারণ মানুষের জন্য যে বরাদ্দ ও জনমুখী যে সব প্রকল্প নেওয়া হয়েছে ‘নিয়ম মেনেই’ শনিবারও তার বিরোধিতায় বিজেপি বিধায়করা। বিজেপি বিধায়করা রাজ্যের প্রস্তাবিত প্রকল্প ও অর্থের সংস্থান নিয়ে যে প্রশ্নই তোলেন, তার জবাবে বিজেপি বিধায়কদের কার্যত তুলে বাউন্ডারির ওপারে পাঠিয়ে দেন অর্থমন্ত্রী ও তৃণমূলের অন্য বিধায়করা। শেষমেশ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে ওয়াকআউট করেন বিজেপি বিধায়করা। যদিও শনিবারই বিধানসভায় পাশ হয় ২০২৪-২৫ রাজ্য বাজেট প্রস্তাব।

শনিবারের অধিবেশনের শুরুতে পরিসংখ্যান দিয়ে ক্যাগ রিপোর্ট কতটা পক্ষপাতদুষ্ট তা তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তাঁর দাবি, সংশাপত্র ঠিকমত দেওয়া হয় বলেই পরের ধাপের বরাদ্দ অর্থ পাওয়া যায়। তবে ঠিকমতো হিসাব দেওয়ার পরেও কেন্দ্র বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা আটকে রেখেছে। এটা বেআইনি কাজ। পাশাপাশি বিরোধীদের বাজেট নিয়ে ঋণের বোঝার সমালোচনারও জবাব দেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ঋণ পরিশোধ করা হয় বলেই ঋণ পাওয়া যাচ্ছে। রাজ্যেরঋণের বোঝা ৪০ থেকে ৩৬ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। যেখানে কেন্দ্রের ঋণের পরিমাণ ৫৬ শতাংশ।

প্রশ্নোত্তর পর্বে বিজেপি বিধায়কদের মধ্যে বঙ্কিম ঘোষ অভিযোগ তোলেন রাজ্য বাজেট ভোটমুখী ও দিশাহীন। দীপক বর্মণ দাবি করেন নতুন কর্মসংস্থান ও শূন্যপদে নিয়োগের কথা বললেও তা স্পষ্ট নয়। অন্যদিকে অগ্নিমিত্রা পল সন্দেহ প্রকাশ করেন পিপিপি মডেলে চার পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরি সম্ভব কি না। সবথেকে বেশি সময় বক্তব্য রাখেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি প্রশ্ন তোলেন, এই বাজেটে নির্বাচনী বক্তব্যের প্রাধান্য দেয়া হয়েছে । সাধারণ মানুষের বাজেটে রাজনৈতিক রঙ চড়েছে। পুঞ্জীভূত ঋণের পরিমাণ ও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। কিন্তু অর্থমন্ত্রী আগেই এই সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দিয়েছিলেন। কার্যত নাস্তানাবুদ হয়ে ওয়াকআউট করেন বিজেপি বিধায়করা।

অর্থমন্ত্রীর পাশাপাশি তৃণমূল বিধায়ক মহম্মদ আলি রাজ্যে কর্মসংস্থানের তথ্য তুলে ধরেন। তৃণমূল বিধায়ক অপূর্ব সরকার কেন্দ্রের বঞ্চনা নিয়ে সুর চড়ান। যদিও আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি ভাঙড় ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার জন্য একটি মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতালের দাবি করেন। তবে দিনভর বাদানুবাদ, এমনকি ওয়াকআউট হওয়ার পরও অধিবেশনের মধুরেন সমাপেয়ৎ ঘটান অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বাবুল সুপ্রিয়কে “কুছ তো লোগ ক্যাহেঙ্গে, লোগ কা কাম হে ক্যাহনা” গাওয়ার অনুরোধ করেন। এরপরই অধিবেশনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন অধ্যক্ষ। পরবর্তী অধিবেশন সোমবার।