পুলিশের ড্রোন-কাঁদানে গ্যাসের পাল্টা কৃষকদের ঘুড়ি, লক্ষ্য দিল্লি

বুধবার পুলিশের ড্রোন আটকাতে নতুন পন্থা নিলেন কৃষকরা। এদিন ড্রোন লক্ষ্য করে ঘুড়ি ওড়াতে দেখা যায় তাঁদের। তাঁরাও বুঝিয়ে দিলেন ইটের জবাব পাটকেল দিয়ে কীভাবে দিতে হয় তাঁরা জানেন।

কৃষক বিক্ষোভে নজিরবিহীন কাঁদানে গ্যাসের (tear gas) বৃষ্টি মঙ্গলবার দেখেছে গোটা দেশ। কৃষকদের আটকাতে আগে থেকে পরিকল্পনা মতো ড্রোনে করে কাঁদানে গ্যাসের সেল তুলে এনে কৃষকদের মাঝে এনে মুহুর্মুহু ফাটিয়েছিল তাঁদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য। ফলে মঙ্গলবার সাময়িক ‘যুদ্ধবিরতি’র প্রস্তাব দেয় কৃষকরা। তবে গোটা দেশ থেকে শাসকের এই নৃশংসতার প্রতিবাদ করেন বিরোধীরা। বুধবার পুলিশের ড্রোন আটকাতে নতুন পন্থা নিলেন কৃষকরা। এদিন ড্রোন লক্ষ্য করে ঘুড়ি ওড়াতে দেখা যায় তাঁদের। তাঁরাও বুঝিয়ে দিলেন ইটের জবাব পাটকেল দিয়ে কীভাবে দিতে হয় তাঁরা জানেন।

বুধবার সকালে কৃষকরা আবার দিল্লির দিকে তাদের পদযাত্রা শুরু করে। পাঞ্জাব-হরিয়ানা সীমান্তের শম্ভুতে শত শত ট্রাক্টর ট্রলি লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। বিশাল নিরাপত্তা মোতায়েন, কংক্রিট ব্যারিকেড এবং খোঁড়া রাস্তা থাকা সত্ত্বেও কৃষকরা যাত্রা অব্যাহত। সিংঘু, টিকরি এবং গাজিপুরে রাজধানীর সীমানা সিল করার জন্য বহু-স্তরযুক্ত ব্যারিকেডিংয়ের পাশাপাশি বিশাল সংখ্যক পুলিশ এবং আধা-সামরিক বাহিনী মোতায়েন হয়। ব্যারিকেডের কাছে যেতে দফায় দফায় টিয়ার গ্যাস ছোঁড়ে পুলিশ। কৃষিমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা কৃষকদের প্রতিবাদের কারণে সাধারণ মানুষ যাতে সমস্যার সম্মুখীন না হয় তা নিশ্চিত করার কথা বলেন। পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘কেন্দ্র কৃষক ইউনিয়নের সাথে গঠনমূলক আলোচনা চালিয়ে যাবে। আমি কৃষক ইউনিয়নগুলিকে রাজনীতির দ্বারা প্রভাবিত না হওয়ার জন্য অনুরোধ করব’।

তবে বুধবার কৃষকদের আটকাতে নতুন পন্থা নেয় দিল্লি পুলিশ। সীমান্তে দেখা যায় লো রেঞ্জ অ্যাকুয়াস্টিক ডিভাইস (LRAD) ব্যবহার করতে। এর ফলে কয়েক হাজার লাউড স্পীকারের আওয়াজ এক জায়গা থেকে করা সম্ভব হবে। একবিংশ শতকের প্রথম দিকে এই যন্ত্র প্রথমবার আমেরিকার সেনা এই কামানের ব্যবহার করেছিল। অর্থাৎ জলকামানের পাশাপাশি এবার দিল্লি পুলিশের হাতে এলো শব্দকামান।

কৃষক সংগঠনগুলির দাবি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার। যেভাবে মঙ্গলবার থেকে তাঁদের ওপর কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটানো হচ্ছে তা অগণতান্ত্রিক। সংযুক্ত কিষান মোর্চা এবং কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলো ১৬ ফেব্রুয়ারি গ্রামীণ ভারত ও শিল্প বন্ধের ডাক দিয়েছে। এই বন্ধের ডাক দেওয়া কৃষক ইউনিয়নগুলি বলেছে যে তারা একটি বৈঠকের বিষয়ে সরকারের কাছ থেকে বার্তা পেয়েছে। অন্যদিকে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বুধবার বিচারপতিদের উদ্দেশ্যে বলেন আন্দোলনের জেরে তাঁদের আদালত পৌঁছাতে সমস্যা হলে আদালত তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করতে প্রস্তুত রয়েছে।

Previous articleবিপিএলে ১০০ ছক্কা মেরে তামিম ইকবালের নয়া রেকর্ড
Next articleসরস্বতী পুজোর মণ্ডপে প্রকল্পের সচেতনতার পাঠ টিএমসিপির