CAG রিপোর্টে ‘মিথ্যাচার’, কেন্দ্রের জনবিরোধী বাজেটে অর্থনীতির ‘জাগলারি’: তীব্র আক্রমণ বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর

এবারের রাজ্য বাজেট ঐতিহাসিক। কিন্তু কেন্দ্রের জনবিরোধী বাজেটে অর্থনীতির জাগলারি। বৃহস্পতিবার, বিধানসভায় দুই বাজেটের তুল্যমূল্য আলোচনা করে তথ্য, পরিসংখ্যান-সহ এই দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তিনি জানান, নারী ও শিশু কল্যাণ, কৃষক , আদিবাসী উন্নয়ন, খাদ্যে ভর্তুকি- সব খাতেই বাজেটে বরাদ্দ কমিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার (Central Government)। বাজেটে (Budget) যা বরাদ্দ হচ্ছে তাও খরচ করা হচ্ছে না।

উদাহরণ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,
• কেন্দ্রের আমব্রেলা প্রকল্প তফসিলি জাতি-উপজাতি কল্যাণে গত বছরের বাজেটের ৪০ শতাংশই খরচ করতে পারেনি।
• সংখ্যালঘু উন্নয়নে বাজেট বরাদ্দের মাত্র ১২ শতাংশ খরচ হয়েছে।
• কৃষকদের বরাদ্দের ৫০ শতাংশই খরচ করা হয়নি।
• আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের মোট বরাদ্দের মাত্র ২৯.৪ শতাংশ খরচ হয়েছে।
• মহিলা সুরক্ষায় গৃহীত মিশন শক্তি প্রকল্পের ৭৩ শতাংশের বেশি টাকা এখনও অব্যবহৃত।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার খাদ্যে ভর্তুকি ছাটাই করছে যার ফলে দ্রব্যমূল্য বাড়বে মুদ্রাস্ফীতির থাবা আরও চওড়া হবে।” তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার জমিদারদের ঋণ মুকুব করছে। অন্যদিকে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠছে।

পাশাপাশি, রাজ্য বাজেটে (Budget), মহিলা থেকে কৃষক কল্যাণ, স্বাস্থ্য থেকে শিক্ষা সব খাতেই বরাদ্দ বহুগুণে বেড়েছে তিনি জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন “আমাদের বাজেট ভোটমুখী বাজেট নয়। ওটা আপনারা করেন। তারপরে পালিয়ে যান।” তিনি জানান, আর্থিক শৃঙ্খলা এনে রাজ্যের GSDP সাড়ে তিনি শতাংশের কাছাকাছি বাড়ানো সম্ভব হয়েছে। কর বাবদ আয় বেড়েছে আগের বছরের তুলনায় ৪ শতাংশ। মূলধনী ব্যয় বেড়েছে আট শতাংশের কাছাকাছি। সারাদেশের ভিত্তির হার যেখানে ৫ শতাংশ এরাজ্যে তা সাত শতাংশ কৃষকদের আয় ৩ গুণ বেড়েছে। রাজ্যের ঋণের বোঝাও কমিয়ে আনা হয়েছে। ঋণ ও মাথাপিছু আয় এর অনুপাত কমে হয়েছে ৩৭ শতাংশ। যেখানে সর্বভারতীয় হার ৫৮ শতাংশ। মুখ্যমন্ত্রী জানান বাম আমলে যেখানে ৫৭ শতাংশের বেশি মানুষ দারিদ্র সীমার নীচে ছিলেন সেখানে এখন মাত্র ৮% মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে রয়েছেন। এই হার শূন্য করাই সরকারের লক্ষ্য।

CAG রিপোর্ট নিয় তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী। বিধানসভায় জানিয়ে দেন, “ক্যাগ রিপোর্টে একশো শতাংশ মিথ্যা কথা বলা হয়েছে। এই রিপোর্ট আমরা মানি না। একশো দিনের কাজে ৫০ দিন কাজ দেওয়া হবে বলে যেটা বলা হয়েছে বাজেটে সেটা তো কন্টিনিউয়াস প্রজেক্ট। কর্মশ্রী প্রকল্পের জন্য‌ও অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। ওরা জানে না, তাই মিথ্যা কথা বলেছে। আর পথশ্রী প্রকল্পের টাকা সম্পূর্ণ রাজ্যের টাকা, কেন্দ্রের এক টাকাও নেই।”