দোষীদের রেয়াত করবে না দল। অভিযোগের পেলে সমাধানের চেষ্টা হবে। রবিবার, সন্দেশখালি গিয়ে স্থানীয়দের এই আশ্বাস দিলেন তৃণমূলের শীর্ষ স্থানীয় নেতৃত্ব। পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, এদিন সেখানে যান দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু, সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক, মন্ত্রী বীরবাহ হাঁসদা। সেখানে একটি কর্মিসভাও হয়। ছিলেন সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাত-সহ একাধিক নেতৃত্ব। সেখানেই পার্থ ভৌমিক থেকে সুজিত বসু- সকলেই জানান দোষীদের রেয়াত করবে না দল। দলের অভ্যন্তরীণ তদন্ত চলছে। যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হবে, তাঁর ক্ষেত্রে পদক্ষেপ করা হবে। একই সঙ্গে জবরদখল করে জমি-ভেড়ি প্রকৃত মালিকের কাছে ফিরে দেওয়ার আশ্বাসও দেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সুজিত বসু জানান, শিবু হাজরার গ্রেফতারির পরে স্থানীয় বিধায়ক সুকুমার মাহাতকে সন্দেশখালি ২ নম্বর ব্লকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

ধীরে ধীর ছন্দে ফিরছে সন্দেশখালি। এদিন সেখানে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন, রাজ্যের মন্ত্রীরা। পার্থ ভৌমিক জানান, সন্দেশখালি নিয়ে মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে। পরিবেশকে অশান্ত করতে ইচ্ছাকৃতভাবে উস্কানি দেওয়া হচ্ছে। কেউ সামনে এসে অভিযোগ জানাচ্ছেন না। আমরা ক্ষোভের কথা শুনেছি। কারও ক্ষোভ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নয়। এঁদের ক্ষোভ স্থানীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। দোষ করলে দল রেয়াত করবে না।
দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু বলেন, সন্দেশখালি স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে। যে যত বড় নেতা বা প্রশাসনিক পদে থাকুন না কেন, দল কিন্তু কোনওভাবেই বরদাস্ত করবে না। কিছু লোকের ভেড়ি গায়ের জোরে দখল করার অভিযোগ উঠেছে। সমস্ত অভিযোগকারীকে নথি নিয়ে জেলা পরিষদে আসতে বলা হয়েছে। যে বা যারা তাঁদের দাবির স্বপক্ষে কাগজ দেখাতে পারবেন তাঁদেরকে সেইদিনই ভেড়ির পাট্টার আইনগত রেকর্ড করে তার কাগজ দেওয়া হবে। সুজিত জানান, “২৬ ফেব্রুয়ারি আবার আমরা আসব।“ ধৃত শিবু হাজরার বিরুদ্ধে দলীয় স্তরে তদন্ত শেষ হওয়ার পরই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানানো হয়।

প্রতিনিধি দলের স্পষ্ট বক্তব্য, যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা গ্রেফতার হয়েছে। ১৬ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে একটি গ্রাম পঞ্চায়েতের দু-একটা বুথে এই ঘটনা ঘটেছে। পরিকল্পিতভাবে সেই ঘটনাকে অতিরঞ্জিত করে দেখানো হচ্ছে।

এদিন, স্থানীয় বিধায়ক বিধায়ক সুকুমার মাহাতকে সন্দেশখালি ২ নম্বর ব্লকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আগে এর দায়িত্বে ছিলেন শিবপ্রসাদ ওরফে শিবু হাজরা। সন্দেশখালি ১ এবং ২ নম্বর ব্লকের ১৬ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের কয়েক হাজার কর্মী-সমর্থককে নিয়ে এদিনের কর্মিসভায় হয়। ইতিমধ্যে সন্দেশখালির বঞ্চিতদের নামের তালিকা তৈরি করা শুরু হয়েছে। তাঁদের প্রাপ্য টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করা হবে বলে প্রতিনিধি দলের তরফে জানানো হয়েছে।
