লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক চাল চেলে CAA লাগু করেছে মোদি সরকার। কিন্তু এই CAA-এ নিয়ে দিশাহীন খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। দেশবাসীর মনে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার, সংবাদ সংস্থার এক সাক্ষাৎকারে একের পর এক প্রশ্নের জবাব দিতে ব্যর্থ অমিত শাহ। বললেন, পরে ভাবব। অর্থাৎ স্পষ্ট ভোটের দিকে তাকিয়েই তড়িঘড়ি এই আইন লাগু করেছে কেন্দ্র।

প্রশ্ন ছিল, যাঁদের কাছে CAA-র প্রয়োজনীয় কাগজ নেই, তাঁদের কী হবে?

উত্তরে অমিত শাহ আমতা আমতা করে জানালেন, ওটা নিয়ে পরে ভাবব।
যাঁদের কাছে উপযুক্ত নথি আছে, কবের মধ্যে তাঁদের আবেদন করতে হবে?
এটা নিয়েও সঠিক উত্তর জানা নেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর! মুখ বাঁচাতে বললেন, এটা ধীরে সুস্থে করুন, কোনও সময়সীমা নেই। একটা আইন হয়েছে। তা কার্যকর হয়েছে। অথচ তা নিয়ে কোনও সময়সীমা নির্দিষ্ট নেই!

অমিত শাহ জানান, ১৫ অগাস্ট ১৯৪৭ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪-র মধ্যে যে হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, পার্সি, খ্রিস্টান, জৈন সম্প্রদায়ের মানুষ বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, পাকিস্তান থেকে ভারতে এসেছেন CAA-তে আবেদন করলে তাঁদের সশরীরে উপস্থিত হয়ে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। কিন্তু ৭৭ বছর আগে যিনি ভারতে এসেছেন, তাঁর বয়স ৭৭ বা তার বেশি। সশরীরের তাঁর পক্ষে গিয়ে কোনও কথা বলা সম্ভব হবে? অসুস্থ, বিশেষভাবে সক্ষম মানুষ থাকতে পারেন। তাঁদের কী হবে? নিরুত্তর শাহ।

এরপরেই মোক্ষম প্রশ্ন করেন সাংবাদিক। তিনি জানতে চান, যাঁদের নির্ধারিত বৈধ নথি নেই, তাঁদের কী হবে? তাঁদের কি ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হবে?
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কাছে স্পষ্ট জবাব নেই। কিন্তু যিনি দেশের নাগরিক হিসেবে নথি দেখাতে পারলেন না। আবার অন্য দেশেরও নথি নেই। তাঁদের তো দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া যাবে না। তাহলে থাকবেন কোথায়? কোনও দিশা নেই অমিত শাহের বক্তব্যে।

কত লোক আছে এই শরণার্থী তালিকায়? কোনও ধারনা নেই। স্বীকার করে নিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

এই ধর্মীয় বিভাজনের তালিকায় মুসলিমরা নেই। তাহলে, তাঁরা এদেশে থাকলে, কী ব্যবস্থা করা হবে? উত্তর এড়িয়ে শাহ বললেন, আবেদন করুন। কীসের আবেদন? ওই আবেদনপত্র তো মুসলমানদের জন্য কোনও কোটাই নেই।

একবার অমিত শাহ বলছেন, এটা কেন্দ্রের বিষয়, রাজ্যের এটা মানা না মানার কোনও অধিকার নেই। আবার বলছেন, তাঁরা রাজ্যে ক্ষমতায় এলে এটা কার্যকর করবেন। যদি রাজ্যের এক্তিয়ারই না থাকে, তাহলে কে ক্ষমতায় থাকল, তা দিয়ে কি যায় আসে! সব মিলিয়ে চূড়ান্ত বিভ্রান্তি মূলক, আতঙ্ক ছড়ানো, দিশাহীন আইন লাগু করেছে কেন্দ্র- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎকার সেটাই প্রমাণ করেছে।
