একাদশ-দ্বাদশের পরীক্ষা পদ্ধতিতে একাধিক পরিবর্তন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের

সর্বভারতীয় বোর্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তৈরি করা হয়েছে নতুন সিলেবাস

উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা পদ্ধতিতে আমূল পরিবর্তন। ৪টি সেমেস্টারে ভাগ করে হবে পরীক্ষা। একাদশ শ্রেণিতে ২টি ও দ্বাদশ শ্রেণিতে হবে আরও ২টি সেমেস্টার। একাদশ শ্রেণির ২টি সেমেস্টারে ৩০ শতাংশ নম্বর পেলে তবেই সেই পরীক্ষার্থী দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা দিতে পারবে। এবার থেকে আর দ্বাদশ শ্রেণিতে টেস্ট পরীক্ষা দিতে হবে না। পরিবর্তন হয়েছে প্রশ্ন তৈরির ক্ষেত্রেও। প্রথম ও তৃতীয় সেমেস্টারে এমসিকিউ-তে পরীক্ষা হবে। দ্বিতীয় এবং চতুর্থ পরীক্ষায় থাকবে ছোট ও ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন। একাদশ শ্রেণির ক্ষেত্রে স্কুলই করবে প্রশ্ন। প্রত্যেক সেমেস্টারের পর সংসদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নম্বর আপলোড করতে হবে পোর্টালে। রুটিন করে দেবে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম সেমেস্টার হবে ওএমআর শিটে। উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম সেমেস্টারে শূন্য পেলেও পরের সেমেস্টারে বসা যাবে।

বদল আনা হয়েছে পরীক্ষার সময়েও। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেমেস্টারের ক্ষেত্রে বরাদ্দ দেড় ঘণ্টা। চতুর্থ সেমেস্টারে দেওয়া হবে দু’ঘণ্টা। বৃহস্পতিবার উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য জানান, তৃতীয় ও চতুর্থ সেমেস্টারের জন্য একটাই অ্যাডমিট কার্ড থাকবে। এমনকী সব কিছু ঠিক থাকলে পরীক্ষা কেন্দ্রও একই থাকবে। নভেম্বর মাসে প্রথম ও তৃতীয় সেমিস্টার এবং মার্চ মাসে হবে দ্বিতীয় ও চতুর্থ সেমেস্টার।

বদল আসছে নম্বর বিভাজনেও। প্র্যাকটিক্যাল রয়েছে এমন বিষয়ের ক্ষেত্রে ৭০ নম্বরে হবে থিওরি এবং বাকি ৩০ নম্বরের থাকবে প্র্যাকটিক্যাল। এই ৭০ নম্বরকে আবার ভেঙে দেওয়া হবে দুটো সেমেস্টারে। অর্থাৎ ৩৫ নম্বর করে হবে এক একটি সেমেস্টার। প্র্যাকটিক্যাল নেই এমন বিষয়ের ক্ষেত্রে ৮০ নম্বর থাকবে থিওরিতে বাকি ২০ প্রজেক্টের জন্য বরাদ্দ। সংসদ জানিয়েছে, প্রত্যেক বছর প্রতিটি বিষয়ের পড়াশোনার জন্য স্কুলে ২০০ ঘণ্টা নির্ধারিত। প্রথম সেমেস্টারের জন্য ১০০ ঘণ্টা পড়াশোনা। দ্বিতীয় সেমেস্টারের জন্য ৮০ ঘণ্টা। আর ২০ ঘণ্টা ‘রেমিডিয়াল ক্লাসে’ অথবা হোম ‘অ্যাসাইমেন্টের’ জন্য। এর মধ্যেই থাকবে প্রজেক্ট ও ইন্টার্নসিপও।

২০২৫-২৬ এ উচ্চ মাধ্যমিক সেমেস্টার পদ্ধতিতে। প্রত্যেক স্কুলকে নোটিফিকেশনের মাধ্যমে সামার ক্যাম্প করার নির্দেশ। তাতেও সময় নির্ধারিত করে দেওয়া থাকবে।
এদিন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য জানান, সব থেকে বেশি বদল আনা হয়েছে ভাষার পাঠ্যক্রমে। প্রজেক্ট, ইন্টারশিপ সংযুক্ত হচ্ছে নতুন সিলেবাসে।সর্বভারতীয় বোর্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তৈরি করা হয়েছে নতুন সিলেবাস।

মোট ৬২ টি বিষয়। তার মধ্যে ৪৯ টার সিলেবাস পরিবর্তন হচ্ছে। ১৩ টি বৃত্তিমূলক বিষয়ের সিলেবাস পরিবর্তন হয়নি। বাংলাতে সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন করা হয়েছে। গদ্য ও পদ্যের ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনা হয়েছে। শ্রীজাতর কবিতা অন্ধকারের লেখাগুচ্ছকে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। এরপরেই বদল আনা ইতিহাসে। সেখানে থাকছে ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ। ভারতের বিদেশনীতি পরমাণুনীতিও পড়ানো হবে। রাষ্ট্র বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে সমসাময়িক বিষয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

পড়ুয়ার সংখ্যা ১০-এর কম থাকায় গুজরাটি, ফ্রেঞ্চ, পাঞ্জাবি- এই তিনটি বিষয় বাদ দেওয়া হয়েছে। এর পরিবর্তে অ্যাপ্লিকেশন অফ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, সাইবার সিকিউরিটি ও সাইন্স এন্ড ওয়েল বিং বলে তিনটি নতুন বিষয় নিয়ে আসা হচ্ছে।