প্রয়াত মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের (Subrata Mukharjee) জন্মদিনে একডালিয়ায় তাঁর মূর্তি উন্মোচনে গিয়ে স্মৃতিমেদুর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। জানালেন, তাঁর জন্যেই একবার গ্রেফতার হতে হয়েছিল সুব্রতকে। একডালিয়ের রাস্তার নাম সুব্রত মুখোপাধ্যায় সরণি রাখেন মুখ্যমন্ত্রী। এই দিনটিকে স্মরণ করে প্রত্যেক বছর সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের যাতে একডালিয়া এভারগ্রিন ক্লাব ও এলাকার সকলে পালন করে সেই আবেদনও জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।

২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের পর নভেম্বর মাসে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্য়ু হয় রাজ্য়ের প্রাক্তন মন্ত্রী ও কলকাতার প্রাক্তন মেয়রের। কালীপুজোর সেই রাতের স্মৃতি মনে করে মমতা বলেন, “কালীপুজোর রাতে সুব্রতদার মৃত্যু সংবাদ অমাবস্যার রাত হয়ে আসে আমাদের জীবনে। সুব্রতদার মৃত্য়ু আজও মেনে নিতে পারিনি। মৃত্যুটা খুবই দুঃখজনক। নিজের অজান্তেই হঠাৎ করে চলে গেলেন, কি করে কী হয় গেল বুঝতে পারলাম না। তাঁর শেষ চলে যাওয়াটা দুঃখের। আরও ৮-১০ বছর সুব্রত দা অ্যাক্টিভলি কাজ করতে পারতেন তিনি।”

এদিন সুব্রতর মূর্তি উন্মোচনে গিয়ে নস্টালজিক মুখ্যমন্ত্রী। সুব্রত স্ত্রী ছন্দবাণীকে নিয়ে মূর্তি উন্মোচন করেন। বলেন, “এভারগ্রিন যতদিন বেঁচে থাকবে সুব্রতদার নাম বেঁচে থাকবে।” স্মৃতিমেদুর মমতা জানান, “সুব্রতদার নেতৃত্বে রাজনীতি শুরু করি। সুব্রতদা আমার গার্জিয়ান ছিলেন। তাঁর হাত ধরেই ছাত্র রাজনীতি করেছি। একসঙ্গে অনেক আন্দোলন, একসঙ্গে অনেক পথ চলা। একসঙ্গে অনেক মজার স্মৃতি রয়েছে। দিলখোলা ও সহজ মনের মানুষ ছিলেন তিনি। সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায় মন্ত্রীত্বে সবচেয়ে কম বয়সের মন্ত্রী ছিলেন সুব্রত দা। একজন কর্মঠ মানুষকে, ভালো মানুষকে হারিয়েছি।”

মমতা জানান, বাম জমানায় হকার উচ্ছেদ চলছিল। অপারেশন সানশাইন। তার প্রতিবাদ সুব্রত মুখোপাধ্যায় বনধ ডেকেছিলেন। অল্প লোক দেখে ঘরে বসেছিলেন সুব্রত। মমতাই সেদিন সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন। এরপর নিমেষের মধ্যেই চার-পাঁচ জনের থেকে চারশো-পাঁচশো জনের মিছিল হয়। মিছিল শেষে সুব্রতকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তখনই মমতাকে সুব্রত বলেন, “তোর জন্য আমি গ্রেফতার হলাম। যদি মিছিলটা না করতাম, তাহলে আমি গ্রেফতার হতাম না”

মমতা বলেন, “সুব্রতদাকে সবসময় হাসিখুশি থাকতেন। তাঁর ওই মুখটাই যেন আমাদের কাছে সবসময় চির পরিচিত থাকে”।
