রাজনীতির জন্যই অবসর, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির!

অসহায়, নিপীড়িত মানুষের শেষ ভরসা আদালত (Court)। এখনও বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা, ভরসা, বিশ্বাস অটুট। যদিও গত কয়েক বছরে দেশজুড়ে এমন কিছু জ্বলন্ত উদাহরণ রয়েছে, যা অনেক ক্ষেত্রেই বিচার ব্যবস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। এমন কিছু ঘটনা, যেখানে বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কেঁদেছে। এবং এক্ষেত্রে বেশকিছু বিচারপতির (Justice) ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রাজনীতির ময়দানেও প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে যখন দেখা যায়, কোনও বিচারপতি তাঁর কর্মজীবন থেকে অবসর বা স্বেচ্ছাবসর নেওয়ার পরই সরাসরি রাজনৈতিক দলে যোগ দিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, ভোটের ময়দানে নেমে পড়ছেন বা রাজ্যসভার সাংসদ হয়ে যাচ্ছেন।

এক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো, যে কোনও পেশার মানুষ রাজনীতিতে আসতে পারেন। অতীতেও বহু বিচারপতিকে সরাসরি রাজনীতির ময়দানে দেখা গিয়েছে। কিন্তু সদ্য অবসর নিয়ে কিংবা রাজনীতিতে আসার জন্যই মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই স্বেচ্ছাবসর নেওয়া বিচারপতিদের নিরপেক্ষতা ও নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যায়। এই যেমন, বর্তমানে রাজ্য রাজনীতিতে অন্যতম আলোচ্য চরিত্র কলকাতা হাইকোর্টের সদ্য প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Abhijit Gangopadhyay) তড়িঘড়ি কোনও রাজনৈতিক দলে যোগ দেওয়াটা উচিত হয়নি বলেই মনে করেন মেঘালয় হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

বর্তমানে বিজেপি নেতা, লোকসভা ভোটে বিজেপির সম্ভাব্য প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম নিয়েই মেঘালয়ের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, স্বেচ্ছাবসর নিয়ে রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার ফলে বিভিন্ন মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিচার উদ্দেশ্যমূলক বলে প্রশ্ন তোলার অবকাশ থেকে যায়। একই সঙ্গে বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করেন, সদ্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে এত তাড়াতাড়ি রাজনীতিতে টেনে নেওয়াটাও কোনও দলের উচিত কাজ হয়নি। তাঁর কথায়, “রাজনৈতিক দলগুলিরও একটা দায়িত্ববোধ থাকা প্রয়োজন।”

এটা ঘটনা, গত দু’বছর অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বিচারপতির আসনে বসে এমন কিছু রায় বা পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন, যা নিয়ে সংশ্লিষ্ট মামলার সঙ্গে যুক্তরাও প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন তাঁর ইস্তফার পর। বেশকিছু ক্ষেত্রে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর এজলাসে মামলাগুলির বাইরে এমন কিছু মন্তব্য করেছেন, বা তাঁর বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যক্তি আক্রমণ করেছেন যেখানে তিনি রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার পর তাঁর উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠছেই।

সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বিচারপতি থাকালীন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে আর এক বিচারপতি সৌমেন সেনের প্রকাশ্য বিরোধ সম্পর্কে প্রাক্তন বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় “দুর্ভাগ্যজনক” বলেন। তার পরেই চলে যান বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রাজনীতিতে অংশ নেওয়ার বিষয়ে। বলেন, “বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের যে ভাবে ইস্তফা দিয়েই তিনি একটি রাজনৈতিক দলে যোগ দিলেন, তা উচিত কাজ হয়নি বলে আমি মনে করি।”

Previous articleভোটের মুখে প্রকাশ্যে বিজেপির ‘প্রতিহিংসার’ রাজনীতি! সাতসকালে রাজ্যের মন্ত্রীর বাড়িতে হানা ইডির
Next articleআজ কাটোয়ায় জনগর্জন সভা অভিষেকের! প্রার্থী শর্মিলার সমর্থনে সারবেন প্রচার