Wednesday, November 12, 2025

“দুর্গতদের বাড়ির টাকা দেবই”। ধাপে ধাপে কীভাবে সে টাকা পৌঁছবে শুক্রবার, দিনহাটা ও আলিপুরদুয়ারে জোড়াসভা থেকে জানিয়ে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তার এই ঘোষণার পরেই উত্তরে খুশির হাওয়া। দুর্গত মানুষরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন। কারণ প্রতিশ্রুতি দিলে তা পালন করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।

জলপাইগুড়ি-সহ বিস্তৃর্ণ এলাকা বিধ্বংসী মিনি টর্নেডোয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হাজার হাজার বাড়ি ধুলিস্যাৎ। নির্বাচনী আচরণ বিধি জারি থাকায় দুর্গত মানুষকে বাড়ি তৈরি করে দিতে নির্বাচন কমিশের কাছে অনুমতি চেয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু রাজি হয়নি কমিশন (Election Commission)। উল্টে আগের নিয়মে অল্প ক্ষতিগ্রস্তদের ৫ হাজার ও বেশি ক্ষতিগ্রস্তদের ২০হাজার টাকা দেওয়ার অনুমতি দেয়। ফলে চিন্তায় পড়েন ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ। শুক্রবার জোড়া সভা থেকে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “উত্তরবঙ্গের ঝড়ে জন্য কী কাজ করেছ? অসমের উৎসবের জন্য টাকা দিয়েছ আমি খুশি। কিন্তু বাংলাকে টাকা দিতে আপত্তি কেন? যাঁদের বাড়ি ভেঙেছে প্রশাসনের মাধ্যমে বাংলার বাড়ি প্রকল্পের সুবিধা পাবেন।” এরপরই ধাপগুলি বুঝিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “যাঁরা ২০ হাজার পেয়েছেন, প্রশাসন আবার ৪০ দেবে। তারপর আরও ৬০ হাজার। মোট ১ লক্ষ ২০ হাজার প্রশাসন পৌঁছে দেবে। আপনারা কাজ শুরু করুন।“ এর পরেই মমতা সাফ জানিয়ে দেন, “গরিব লোকেদের জন্য কাজ করতে গিয়ে আমায় যদি কেস দাও আমি গর্ব বোধ করব। গর্বিত হব।“

‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে ১১ লক্ষ মানুষকে টাকা দেওয়ার কথা আগেই জানিয়ে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এদিন তিনি জানান, বাজেটেই সেই ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। মমতা বলেন, “আপনারা চিন্তা করবেন না। আপনারা এ বছরের মধ্যে বাড়ি তৈরির টাকার অর্ধেক কিস্তি পাবেন। পরের বছর বাকিটা।“

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ঘোষণার পরে উত্তরে খুশির হাওয়া। যে সন্ধেয় মিনি টর্নেডোয় লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল জলপাইগুড়ি, ময়নাগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারের বিস্তীর্ণ অঞ্চল, দুর্যোগ মাথায় নিয়ে সেই রাতেই পৌঁছন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। রাতেই দেখা করেন দুর্গতদের সঙ্গে। মধ্যরাতে উপস্থিত হন সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাম বার্নিশে। ঘড়ির কাঁটা তখন পৌঁছেছে রাত তিনটেয়। সারারাত থেকে ভোরে নিজে থাকার জায়গায় ফেরেন মমতা। তার পরের থেকে লাগাতার তিন-চার দিন দুর্গত মানুষদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন তিনি। গিয়েছেন কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার সর্বত্র। সব জায়গায় গিয়েই তিনি জানিয়েছেন, নির্বাচনী আচরণ বিধি থাকায় অনেক কথাই তিনি ঘোষণা করতে পারছেন না ঠিকই। তবে প্রশাসন মানুষদের পাশে আছে, তারা সব রকম সাহায্য করবে।

একইসঙ্গে রাজ্যের তরফ থেকে নির্বাচন কমিশনের কাছে বাড়ি তৈরির অনুমতি দেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়। কিন্তু সেই আবেদনে সাড়া দেয়নি কমিশন। তবে, “বাড়ি টাকা দেবই”- মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় আশ্বস্ত বিপর্যস্তরা। কারণ দুর্যোগের রাতে তাঁরা পাশে পেয়েছিলেন একমাত্র বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে। রাজ্য প্রশাসন সব রকম সাহায্য দিয়ে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে। যাঁরা স্বজন হারিয়েছেন, সেই পরিবারগুলির সঙ্গেও গিয়ে দেখা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে, তাঁর এই ঘোষণায় খুশিতে-আবেগে ভাসছে উত্তর। তাঁরা নিশ্চিত ঝড় তাঁদের আশ্রয় কেড়ে নিলেও মাথার উপর ছাদ বানিয়ে দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

 

Related articles

লক্ষ্য ২০২৭! ২৫ নভেম্বর শুরু ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ

ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হচ্ছে আগামী ২৫ নভেম্বর থেকে। রাজ্যের সেচ ও জলপথ মন্ত্রী মানস...

রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কে স্বচ্ছতা আনতে চালু অনলাইন অডিট ব্যবস্থা

রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কগুলির আর্থিক লেনদেনে স্বচ্ছতা আনতে বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। এ বার থেকে সমস্ত সমবায় সমিতি...

সরকারি প্রকল্পে স্বচ্ছতা বাড়াতে চালু হচ্ছে জিও ট্যাগিং ব্যবস্থা! নির্দেশিকা জারি নবান্নের 

সরকারি প্রকল্পের বাস্তবায়ন ও তদারকিতে আরও স্বচ্ছতা আনতে বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। নবান্নের নির্দেশে এবার থেকে রাজ্যের...

মুখ্যমন্ত্রীকে কটূক্তি! ‘নারীবিদ্বেষী’ শান্তনু ঠাকুরের ইস্তফার দাবি তৃণমূলের

বিজেপি বাংলাকে সম্মান করে না। এই বিজেপি মহিলাদেরও সম্মান করে না, করতে জানেও না। সেটা আরও একবার প্রমাণ...
Exit mobile version