আগে ট্রেনে চড়ত, এখন প্লেনে চড়ে! কটাক্ষের মুখে “চাকরিখেকো” বামপন্থী আইনজীবী

চাকরিহারারা যখন হাহাকার করছেন, ঠিক তখনই "চাকরিখেকো" বামপন্থী আইনজীবী আরাম করে পৈশাচিক আনন্দে বিমানে ভ্রমণ করছেন!

সম্প্রতি এসএসসি মামলার রায় দেয় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে। রায়ে ২০১৬ সালের গোটা প্যানেলটাই বাতিল করে দেয় উচ্চ আদালত। আর আদালতের এই রায়ে চাকরি হারান ২৫, ৭৫২ জন। ঘটনায় তোলপাড় পড়ে গোটা রাজ্যজুড়ে। একদিকে যেমন আদালতের রায়ের পর কার্যত মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে চাকরিহারাদের। অন্যদিকে এই রায়ের বিরোধিতা করে এসএসসি ও রাজ্য সরকারও। রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার, স্কুল সার্ভিস কমিশন ও মধ্য শিক্ষা পর্ষদ।

এমন পরিস্থিতি তৈরির জন্য চাকরিহারারা নিশানা করেছেন আইনজীবী তথা সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও তাঁর সহযোগীদের। চক্রিহারাদের একাংশের বক্তব্য, বিকাশবাবুকে তো বলার মতো ভাষাই নেই। বামফ্রন্ট কীভাবে এখনও বিকাশবাবুকে দলে রাখছে!

ঠিক তখনই এই মামলার সঙ্গে যুক্ত বিকাশবাবুর আরেক সহযোগী বামপন্থী আইনজীবী ফিরদৌস শামিম সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি পোস্ট করেন। যেখানে দেখা যাচ্ছে, ওই আইনজীবী একটি পেল্লাই বিমানের সামনে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলছেন। ক্যাপশনে লিখছেন, “দিল্লি থেকে কলকাতা ফেরার পথে…!” অর্থাৎ, চাকরিহারারা যখন হাহাকার করছেন, ঠিক তখনই “চাকরিখেকো” বামপন্থী আইনজীবী আরাম করে পৈশাচিক আনন্দে বিমানে ভ্রমণ করছেন!

ফিরদৌস শামিমের এমন ফেসবুক পোস্টার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় নিন্দার ঝড়! নেটিজেনদের মধ্যে একজন লিখছেন, “ফিরদৌসবাবু আগে ট্রেনে যেতো দিল্লি, এখন প্লেনে যায়! মামলা করে বড়লোক হয়েছে! চাকরিপ্রার্থীদের বোকা বানিয়ে কাড়ি কাড়ি টাকা রোজগার করছে! শোনা যাচ্ছে, এরপর হারুকাশবাবু বিজেপির সাথে সেটিং করে রাজ্যপাল হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। ক্রোনোলজিটা বুঝুন!.এদের চাকরিপ্রার্থীদের নিয়ে মাথাব্যথা নেই, এরা চায় গরীব আরও গরীব হোক। আর সিপিএমের হাতে ক্ষমতা ফিরুক। বাঙলায় বাম আর ফিরবে না এটা বুঝতে পারছে না বাঙলায় বামেরা শূন্য থেকে ১০ হবে না!”

আরেকজন লিখছেন, “বাড়ি গিয়ে নিজের মা, বাবা, বউ, ছেলে মেয়েকে গিয়ে কী বলবেন আজকে ১৯০০০ যোগ্য ছেলেমেয়ের চাকরি খেয়ে এসেছি। দারুন লাগছে খেতে। যোগ্যরাও মরে যাক, আমি কিন্তু সবার চাকরি খেতে এসেছি। এই নাও মা যাদের এই চাকরি খাওয়ার জন্য টাকা পেয়েছি এই টাকা দিয়ে তোমার জন্যে শাড়ি এনেছি , বউ তোমার জন্যে গয়না এনেছি। ছেলে মেয়ে দের জন্য ভালো জিনিস কিনে নিয়ে যাবেন । বাড়িতে গর্ব করে বলবেন। আপনার কাজকে শ্রদ্ধা করি, কিন্তু যারা ১৯০০০ যোগ্য ক্যান্ডিডেট আছে তাদের জন্যে একবার এর জন্যেও আপনাকে গোলা ফাটাতে দেখলাম না। রাজনৈতিকভাবে সেটাকে বাড়িতে বাইরে সব জায়গাতে নিয়ে গিয়ে টাকা কামাই করে সংসার চালাচ্ছেন। আপনি বলুন সিবিআই দেওয়া লিস্টদের সোজাসুজি বাদ দিতে হবে। যাই হোকলোকের চাকরি খাওয়া টাকায় আপনি বড়লোক হোন।”

অন্য একজন বামেদের দ্বিচারিতা নিয়ে কটাক্ষ করে লিখছেন, “একটা জিনিস বুঝতে পারছি না, যে উকিল পুরো প্যানেল বাতিল করার জন্য লড়ছেন তাকে সব কমরেড ভালবাসায় ভরিয়ে দিচ্ছে কিন্তু বামপন্থী নেতারা আন্দোলন করে বলছে পুরো প্যানেল বাতিল না করে যোগ্য দের চাকরি থাক। মানে কোর্ট এ বামপন্থী উকিল বলছে যে সবার চাকরি যাক । আর জনতার সামনে মায়া কান্না কাদছে । এদের থেকে তো বিজেপিও ভালো। ঘৃনার অবস্থান হলেও তারা একটা পরিস্কার অবস্থান নেয়।”

আরও অনেকে লিখছেন, “চাকরি খাওয়ার খুব আনন্দ ওনার ও ওনার গুরুদেব মামলা ভট্টাচার্যের। এদের দুজনের সব থেকে বেশি লাভ হয়েছে। এরা গাছেরও খাচ্ছে তলারও কুড়াচ্ছে।” “পূর্ব মেদিনীপুরে প্রাইমারি নিয়োগ ২০১২ এবং পঞ্চায়েত সেক্রেটারি রিক্রুটমেন্ট ২০১৮এগুলো একটু দেখলে খুব ভালো হতো।”

উল্লেখ্য, এসএসসি-র প্যানেল বাতিল ইস্যুতে বাম নেতা তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই মুখ খুলেছেন চাকরিহারাদের একাংশ। আর এবার তাঁর বিরুদ্ধে সরাসরি বিক্ষোভ প্রদর্শন, তাও আবার কলকাতা হাইকোর্ট চত্বরেই। আজ, মঙ্গলবার প্রাথমিকের নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে। সেই মামলায় মূল মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।প্রাথমিকের বিকৃত ওএমআর শিট নিয়ে মামলার শুনানি চলাকালীন, কীভাবে প্রাথমিক নিয়োগ পরীক্ষার ওএমআর শিটে কারচুপি হয়েছে, তা নিয়ে সওয়াল করতে দেখা যায় বিকাশরঞ্জনকে। এর পর শুনানি শেষে বিকাশরঞ্জন এজলাস থেকে বেরোতেই তাঁকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ শুরু হয়। সঙ্গে শুরু হয় স্লোগান।

বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, “মুখে বলছেন যোগ্যদের চাকরি চাই। কোর্টে বলছেন গোটা প্যানেল বাতিল হোক। দ্বিচারিতার মুখোশ খুলে যাচ্ছে কমরেড। সোশাল মিডিয়ার বাতেলাবাজ কচি কমরেডরা যাক কোর্টে জেঠুর পাশে থাকতে। তারা কই?”




 

Previous articleGold Silver Rate: আজ সোনা রুপোর দাম কত? জেনে নিন এক ঝলকে
Next articleমে মাস থেকেই বর্ধিত বেতন পেতে চলেছেন রাজ্যের মন্ত্রী, বিধায়করা!