Thursday, August 21, 2025

কখনও নরেন্দ্র মোদি, কখনও অমিত শাহ বাংলার মানুষকে মিথ্যা ভাসন দিচ্ছেন তৃণমূলের সিএএ (CAA) নীতি নিয়ে। কিন্তু বাংলার মানুষের সঙ্গে নাগরিকত্ব ইস্যুতে বাস্তবে কারা ভাঁওতাবাজি করছে তা প্রমাণ সহ তুলে ধরলেন তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। বাগদার সভা থেকে ২০১৯-এর নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) প্রতিশ্রুতি মনে করিয়ে বিজেপির সিএএ নিয়ে ভাঁওতাবাজির মুখোশ খুলে দিলেন অভিষেক।

বনগাঁ (Bangaon) কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাসের সমর্থনে রবিবার বাগদায় (Bagda) জনসভা করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে বিজেপির মুখোশ খুলে তিনি দাবি করেন, “২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী এসে বনগাঁতে সভা করে বলেছিল যে নিঃশর্ত নাগরিকত্ব দেব। আর ভাঁওতা দিয়ে পাঁচ বছর পর খালি ফর্ম ছেড়ে দিয়েছে।” বিজেপির নেতারা বারবার তৃণমূলের নামে সিএএ নিয়ে অভিযোগের আঙুল তুললেও এটা যে নির্বাচনের আগে বিজেপির রাজনীতি সেকথা প্রমাণ করে দেন তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, “পাঁচবছর হয়ে গেছে, বিজেপি আপনাদের সঙ্গে ভাঁওতা ছাড়া আর কিছু করেনি। এরা বলেছিল তৃণমূল বলেছিল আপনারা নাগরিকত্ব পান। ১১ মার্চ নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পাঁচদিন আগে এরা নাগরিকত্ব দেব বলে ফর্ম নিয়ে এসেছিল। আজ দুমাস কেটে গেল। দু মাসে তৃণমূল কাউকে ফর্ম ফিলাপ করার জন্য আটকায়নি। কিন্তু বিজেপির কোনও বুথে কোনও নেতা নাগরিকত্বের ফর্মের জন্য আবেদন করেননি।”

তৃণমূল সিএএ নিয়ে প্রথম থেকেই প্রশ্ন করে এসেছে যারা দেশের নাগরিক রয়েছেন, তাঁদের নতুন করে নাগরিকত্বের কোনও প্রয়োজন রয়েছে কি না। কিন্তু বিজেপি যে মতুয়াদের নাগরিক বলেই মনে করে না, তাও প্রমাণ করে দেন অভিষেক। তিনি বলেন, “দুদিন আগে কৃষ্ণগঞ্জে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সভা করেছে মতুয়ারা সবাই শরণার্থী (refugee)। আমরা বলছি মতুয়ারা সবাই নাগরিক (citizen)।”

মতুয়াদের নিয়ে যে রাজনীতি ও প্রতারণা বিজেপি করেছে তার প্রতিফলন পঞ্চায়েত নির্বাচনে দেখা গিয়েছে বলেও তুলে ধরেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে মতুয়াদের ভাঁওতা দিয়ে যে শান্তনু ঠাকুরের সাংসদ পদ রক্ষা করা সম্ভব হবে না, সে বিষয়ে সতর্কও করেন তিনি। পুরোনো কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, “নবজোয়ারের সময় আমি এসেছিলাম, মন্দিরে পুজো দিতে গিয়েছি। বলছে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে ঢুকতে হবে। সেদিন গাইঘাটা থেকে বলেছিলাম মানুষ এর জবাব দেবে। পঞ্চায়েতে এই শান্তনু ঠাকুর (Santanu Thakur) নিজের বুথে হেরেছে, শুধু গ্রাম পঞ্চায়েতে নয়।” এরপরেই লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে শান্তনু ঠাকুরকে হুঁশিয়ারি দিয়ে অভিষেক বলেন, “আমি চ্যালেঞ্জ করছি এই মঞ্চ থেকে, এখনও সাতদিন সময় আছে। শান্তন ঠাকুরকে বলব আপনি হারছেন। মানুষকে যেভাবে আপনি ভাঁওতা দিয়েছেন, আপনার প্রাক্তন সাংসদের লেটার প্যাডটা আজকের সভার পর ছাপিয়ে রাখুন। আপনি আর সাংসদ থাকছেন না।”

বনগাঁ বিধানসভা থেকে তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস দুলক্ষের বেশি ব্যবধানে জিতবেন বলে দাবি করেন অভিষেক। তিনি জিতে গেলে বাগদার বিধায়ক পদে প্রার্থী খোঁজার জন্য জুলাই মাসের শেষে ফের বাগদায় যাওয়ার ঘোষণা করেন অভিষেক। নবজোয়ারের পথেই হবে প্রার্থী নির্বাচন। গোপণ ব্যালটে ৫০ হাজার ভোটের মাধ্যমে মানুষ যাকে চাইবে তাঁকেই প্রার্থী করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

Related articles

যোগীরাজ্যের পাঠ্যপুস্তকে বাদ কেন রবীন্দ্রনাথকে? সাংসদ ঋতব্রতর প্রশ্নে অস্বস্তিতে কেন্দ্র

উত্তরপ্রদেশের দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে কি বাদ দেওয়া হয়েছে? তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্নে স্পষ্টতই...

প্রয়াত সিপিএম নেতা-প্রাক্তন মন্ত্রী দীনেশচন্দ্র ডাকুয়া

প্রয়াত সিপিএমের বর্ষীয়ান নেতা দীনেশচন্দ্র ডাকুয়া। বুধবার এনআরএস হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর।...

উপাচার্য নিয়োগের ইন্টারভিউয়ে ডাক মেলেনি! শীর্ষ আদালতে শান্তা দত্ত 

স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের ইন্টারভিউ পর্বে ডাক পাননি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য শান্তা দত্ত। যোগ্য হয়েও তাঁকে সুযোগ দেওয়া...

১৫ দিনেই রেকর্ড সাফল্য! রাজ্যে সাড়া ফেলল ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচি

মাত্র পনেরো দিনেই নজির গড়ল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নতুন কর্মসূচি, ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’। রাজ্যের মানুষের হাতে উন্নয়নের...
Exit mobile version